চিকিৎসকদের যুক্ত মঞ্চ প্রথম থেকেই মেডিকেল কলেজের আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও প্রশিক্ষণার্থীদের করোনার পাশাপাশি অন্য রোগ চিকিৎসা এবং পঠন-পাঠন ও প্রশিক্ষণ পুনরায় শুরু করার দাবীর প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তারা প্রশিক্ষণার্থীদের স্মারকলিপিও পৌঁছে দেয়। পরবর্তী কালে স্বাস্থ্য সচিবের সাথে আলোচনা করে একটা সমাধান সূত্র বের হয়। সেই সূত্র অনুসারে প্রশাসনের তরফে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের জারী করা অবাঞ্ছিত ও হঠকারী ডিউটি রোস্টার প্রত্যাহার করা হয় ও এক্সপার্ট কমিটির সাথে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের সহমতের ভিত্তিতে ননকোভিড ওয়ার্ড চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এই চিহ্নিত করণের প্রক্রিয়াতে বিশেষজ্ঞ কমিটি ও জুনিয়র ডাক্তাররা সহমত হন যে মেডিক্যাল কলেজের অন্যান্য বাড়িগুলি নানা কারণে কোভিড হাসপাতালের জন্য উপযুক্ত নয়। কিন্তু এতদসত্বেও কর্তৃপক্ষ জুনিয়র ডাক্তারদের জনমুখী দাবীদাওয়া গুলি নিয়ে নানান টালবাহানা করতে থাকেন, ফলতঃ আন্দোলন চলতে থাকে।
অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন। ননকোভিড ও কোভিড দু ধরনের চিকিৎসা যাতে এক সাথে হতে পারে তার জন্য সরকারী সম্মতি পাওয়া যায় এবং 9ই জুলাই থেকে এই মর্মে কাজ শুরু করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। চিকিৎসকসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যকর্মীর যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়।
যুক্ত মঞ্চ মনে করে কোভিড ওয়ার্ডে ডিউটির সময় আট ঘন্টা থেকে কমিয়ে চার থেকে ছয় ঘন্টা করা উচিত। স্বাস্থ্যকর্মীদের রোটেশনাল ডিউটি মেডিকেল কলেজে দেওয়ার জন্য যে অতিরিক্ত কর্মী লাগবে তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আশা করা যায় সরকার এই বিষয়ে সদর্থক ভাবনা চিন্তা করবেন।
আজ মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা যে দৃঢ়তা ও ধৈর্য্যের সাথে মানুষের চিকিৎসার দাবীর অগ্রাধিকারের বিষয়টি তুলে ধরেছেন, তার জন্য তাদের অকুন্ঠ অভিনন্দন ! আমরা আশা করবো হাসপাতালে সব শ্রেণীর রোগী সম্মানের সাথে চিকিৎসা করাতে পারবেন ও এশিয়ার এই অগ্রগণ্য প্রতিষ্ঠানের নাম আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
কোভিড যুদ্ধের এই মধ্যবর্তী সময়ে, যুক্ত মঞ্চ আরও যে সমস্ত গঠনমূলক প্রস্তাব এবং পরামর্শ প্রশাসনকে দিয়েছিল সেগুলো গুরুত্ব সহকারে প্রশাসন বিবেচনা করবে আশা করি।
চিকিৎসকদের যুক্ত মঞ্চ
ডা রেজাউল করিম, আহবায়ক
ডা হীরালাল কোনার, হেলথ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন
ডা মানস গুমটা, অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস
ডা কৌশিক রক্ষিত, ডক্টরস ফর ডেমোক্রেসি
ডা পুণ্যব্রত গুণ, শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ
ডা অর্জুন দাশগুপ্ত, ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম