আর্যতীর্থের কবিতা।
। কিলার।
এই পথ এসময়ে জনহীন থাকে।
বিকেল বিদায় নিয়ে যায়নি এখনো, ধারে ধারে গাছগুলো রোদ্দুর মাখে,
গাড়িটা থামিয়ে দিলে আশেপাশে শোনা যায় পাখির কুজন।
শহরের কাছাকাছি এত মনোরম ,তবু এত নির্জন নয় অকারণ,
খবরে শুনেছো যেই ছ ছ’টা খুন হলো গত তিন মাসে,
সবকটা এই রাস্তাতে। এখন আসে না কেউ এর আশেপাশে।
কিছু পাগলাটে থাকে, কেউ’এর বাইরে। যেরকম আমি,
একটু সময় পেলে গাড়ি নিয়ে সোজা এইখানে। হয়তো বোকামি,
তবু যাই বলো, ছ’ছটা খুন হওয়া রাস্তায় নিরালা ড্রাইভে,
মনে হয় বেঁচে আছি, এখনো যায়নি মনে সব আগুন নিভে,
এমনিতে একা আমি, একটা বন্ধু নেই, কাজ থেকে ফিরে আসি বিষণ্ণ ঘরে,
ওখানে যায় না থাকা , চুপিচুপি বলি। কারা যেন দিনরাত ফিসফিস করে।
এসব বলতে গেলে চাকরিটা যাবে,
সত্যি বলতে গেলে না বুঝে লোকে যদি উন্মাদ ভাবে!
হঠাৎই সামনে দেখি একখানা লোক হাঁটে হনহন করে।
শহরের দিকে যায় দৌড়িয়ে প্রায়, ইতিউতি সচকিত মাথা তার ঘোরে,
গতিবিধি সন্দেহজনক বেশ। পিঠে এমন একখানা ব্যাগ ফেলা,
যাতে ছুরি পিস্তল যায় স্বচ্ছন্দে রাখা। আঁধার ঝাঁপিয়ে আসে, পড়ে এলো বেলা,
মনে আছে, ঠিক এই সময়টাকে সেই খুনী বারবার নিয়েছিলো বেছে..
ওই দেখো, রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে সে হাত দেখিয়েছে,
কি করবো এইবারে? থামালাম গাড়ি। লোকটা এগিয়ে এলো,
ওষ্ঠে শুকনো হাসি এনে বললো সে, ‘ভাগ্যিস আপনার সাথে দেখা হয়ে গেলো,
আমার গাড়িটা হলো হঠাৎ বিকল। এসেছিলাম যে উদ্দেশ্য নিয়ে,
সফল হলো না আজ। লিফ্ট চাই, দয়া করে শহর অবধি দিন আমাকে এগিয়ে।
মানবিকতায় আটকালো ওকে ফেলে দিয়ে যেতে সেই রাস্তাতে।
গাড়িতে উঠলো সে, কিছুটা সময় গেলো হাঁপ সামলাতে,
তারপরে অপলক চেয়ে থেকে প্রশ্ন করলো ভারী অদ্ভুত গলায়
জানেননা, সিরিয়াল কিলার এক শিকার চলেছে করে এই রাস্তায়,
হঠাৎ ভরসা করে অচেনা আগন্তুক তুলে নিলেন যে ভারী?
কে বলতে পারে , সেই খুনী হয়তো বা আমি হতে পারি।
আমি হেসে বললাম , লোক চিনে নিতে আছে ক্ষমতা আমার,
আপনি বার্ড ওয়াচার । সাথে যেই ব্যাগ আছে সেটা ক্যামেরার।
দুজনেই একসাথে হেসে উঠলাম ।
তারপরে আমি বললাম,
তাছাড়া, চান্স খুবই কম থাকা একসাথে দুইখানা অমন কিলার।