প্রথম দিন (১৪ অক্টোবর)
যখন মেডিকেল ক্যাম্পের জন্য তিস্তাপাড়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করা হলো তখনই কাজের থেকে কিভাবে ছুটি নেওয়া যায় তার পরিকল্পনা করে নিলাম। তার পর শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের সম্পাদক ডা মৃন্ময় বেরাকে জানালাম।
এদিকে ডা রাহুলদেব বর্মন জলপাইগুড়ির ক্লিনিক সেরে একদিন আগেই রওনা দিতে পারে বলে পুণ্যদা জানালেন। সেইমতো ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় বীরগঞ্জ থেকে বাস ধরলাম কাঁকড়ভিটা যাবার জন্য।
মেডিকেল ক্যাম্প দেখভাল করার মূল দায়িত্ব রয়েছে লালি গুরাস নামক সামাজিক সংগঠনের ওপর। পরদিন কাঁকড়ভিটা থেকে টাটা সুমো ধরে শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়া মোড়ে নেমে লালি গুরাসের অফিসে পৌঁছে গেলাম। ডা রাহুল জলপাইগুড়ি থেকে আসার পর সেই গাড়িতে লালিগুরাসের কর্মকর্তা শমীকদা ও তার পাহাড়বাসী সাকরেদদের নিয়ে শিলিগুড়ির অন্য এক জায়গা থেকে ওষুধের চারখানা প্যাকেট তুলে রওনা দিলাম তিস্তাপাড়ে।
ন্যাশনাল হাইওয়ে নং ১০-এর ওপর ২৯মাইল এ আগে থেকেই খবর দেওয়া ছিল। ওখানে পৌছতেই স্থানীয়রা টেবিল চেয়ার যোগাড় করে বসবার ব্যবস্থা করে দিলেন। একটা টেবিলে নাম লেখা ও প্রেশার দেখা। দ্বিতীয় টেবিলে ডাক্তারি নিরীক্ষণ আর তিন নম্বর টেবিল থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হতে থাকলো। মোট ৩৩ জনের সমস্যা বুঝে যথাযথ চিকিৎসা পরামর্শ ও ওষুধ বিতরণ শেষে খাওয়াদাওয়া হলো।
এরপর আমাদের গন্তব্য গেইলখোলা। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলাম রাস্তায় কাজ চলছে। যাতায়াত বন্ধ। অগত্যা গাড়ি থেকে ওষুধের প্যাকেট কাঁধে তুলে নিলো লালিগুরাসের বন্ধুরা। পায়ে হেঁটে গেইলখোলা পৌঁছতে বন্ধ হোটেলের সামনে টেবিল চেয়ার বের করে দিলেন হোটেলের মালকিন। পাশেই পাহাড়ে গর্ত করে রেললাইন পাতার কাজ চলার নিদর্শন দেখা গেল। এর প্রভাব আমাদের শিবিরেও এলো। স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি নির্মাণ কর্মীদেরও পেলাম রোগী হিসেবে। সন্ধ্যার পর মোবাইলের আলোতেও কাজ চালাতে হলো। এখানে ৫৫ জনকে চিকিৎসা পরামর্শ ও ওষুধ বিতরণ শেষে আমরা ফিরলাম শিলিগুড়িতে।