এখন চিকিৎসায় ভুল ধরার জন্য সক্কলে বসে আছেন। মেডিকায় হার্ট অ্যাটাক রোগীর পা কেটে বাদ দিলো – চিকিৎসক পেটাও। খোঁজ নেওয়া হলো না হার্ট অ্যাটাক হলে সেই রোগে অন্যান্য ধমনীর ক্ষতি হয় কিনা? ভুল করে থাকলে তার শাস্তি কতটা? আইন কি বলে?
আমেরিকা নামক দেশে তথ্যানুযায়ী– অবশ্যই তথ্যটা কিছুটা পুরোনো – প্রতি বছর আটানব্বই হাজার ভুল চিকিৎসা হয়। যতক্ষণ না এই সমগ্র কাজটিতে অবহেলা পাওয়া যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত এটা চিকিৎসার অবহেলার মধ্যে পড়বে না।
অবশ্যই একজন চিকিৎসক তাঁর নিজের কাজের ন্যূনতমটুকু জানতে বাধ্য। সব সময় যে শেষ পর্যন্ত জানতে পারবেন – সেটা সম্ভবও নয়। বিশেষতঃ জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার সময় চিকিৎসকের অধীত বিদ্যা এবং অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান প্রয়োগ করাটাই প্রয়োজন।
তাহলে আইন কিসের ভিত্তিতে একজন চিকিৎসককে শাস্তি দিতে পারে?
যদি নিশ্চিতভাবে ঐ চিকিৎসকের কোনও অবহেলা খুঁজে পাওয়া যায়।
অবহেলা বলতে কি কি বোঝায়?
রোগ নির্ণয়ে দেরী হওয়া। এবং রোগ নির্ণয়ের পরে চিকিৎসায় দেরী করা।
কিন্তু অবশ্যই নিশ্চিত না হলে সমযোগ্যতার কোনও বয়োঃজ্যেষ্ঠ চিকিৎসককে ডাকা যায় অথবা বেশী যোগ্যতার কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসককে ডাকা যায়। তবু একটুখানি সারমর্ম বানিয়ে ফেলা যাক।
- প্রথমতঃ চিকিৎসককে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এই রোগী তাঁর অধীনে ভর্তি হবে কিনা।
- দ্বিতীয়তঃ রোগীর রোগীর রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা পদ্ধতি দ্রুত স্থির করা। এবং
- তৃতীয়তঃ রোগী সমস্ত চিকিৎসা ঠিক মতো পাচ্ছে কিনা নিশ্চিত করা।
আমরা ধরেই নিই মহামান্য আদালত সর্বোচ্চ এবং আদালত সবই জানেন। অথচ প্রায়ই উচ্চতর আদালতে গিয়ে দেখা যায় যে রায় বদলে গেলো। সুতরাং প্রথমেই হার মানবেন না। মহামান্য আদালত বিশিষ্ট চিকিৎসকদের বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ডাকেন না – বরং পুঁথিনির্ভর রায় দেন। সাধারণ মানুষ চিকিৎসকবিদ্বেষী হয়, জজসাহেবরাও মানুষ। সমস্ত দিক মাথায় রেখে নিজের সব কিছু রোগী ভর্তির কাগজে লিখে রাখুন।
এবং কোনো অবস্থাতেই গালিগালাজ করা বা চিকিৎসকের গায়ে হাত দেওয়া যাবে না। সেটা পরম পুলকেও নয় গভীর বেদনাতেও নয়। এই জায়গায় আমাদের একত্রে প্রতিবাদ প্রয়োজন, না হলে এইরকম ঘটনা বাড়তেই থাকবে।
চিকিৎসায় অবহেলার যে সারমর্ম আপনি করেছেন, মিলিয়ে দেখলাম সাত বছর আগে আমার বাবার মৃত্যুযন্ত্রণা আর মৃত্যুর কারণ চিকিৎসা বিভ্রাটের কারণেই। আমরা ঠিকই বুঝেছিলাম। সেটা বুঝতে পেরেও আমরা ডাক্তার নিগ্রহ করিনি। সেটাও আমার বাবার দেওয়া শিক্ষার গুণে। কিন্তু তারপর থেকেই আমরা পুরো পরিবার মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ও বিভ্রান্ত। ডাক্তারদের আমরা অবিশ্বাস করি। এ ধরনের চিকিৎসা বিভ্রাটের পরবর্তী পর্যায়ে কিন্তু সব ডাক্তাররাই সেই অপরাধী ডাক্তারদের পাশেই দাঁড়ান। আপনি যদি নিরপেক্ষ ভাবে রোগীর পরিবারের কি করণীয় সে বিষয়ে guide করে কিছু লেখেন তাহলে বাধিত থাকব। সব শেষে বলি ডাক্তার নিগ্রহ কোনও সভ্যতার পরিচয় নয় সে কথা আমিও মানি।