কোন কোন ক্ষেত্রে কোভিড ভ্যাক্সিন নেওয়া যাবে না অথবা নেওয়া উচিত নয় তার সাম্প্রতিকতম নির্দেশিকা এখানে আলোচনা করবো। এর আগের পোস্টে যেগুলো contraindication হিসাবে বলেছিলাম তার সাথে আরো কয়েকটা পয়েন্ট যোগ এবং পরিবর্তিত হয়েছে, তাই আপডেট দেওয়াটা আমার কর্তব্য বলে মনে করি। স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে প্রচারিত সাম্প্রতিক নির্দেশিকা অনুযায়ী নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে কোভিড ভ্যাক্সিন নিতে নিষেধ করা হয়েছে :-
1) Anaphylaxis or allergic reaction to a previous dose of Covid 19 vaccine :-
যাঁর ইতিপূর্বে এই ভ্যাক্সিন নিয়ে কোনও hypersensitivity reaction হয়েছিল তিনি নেবেন না, সেটা সাধারণ অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হোক অথবা বাড়াবাড়ি রকমের অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন (anaphylaxis) হোক।
2) Immediate or delayed-onset anaphylaxis or allergic reaction to vaccines or injectable therapies, pharmaceutical products, food items, etc.
অর্থাৎ,
a) ইতিপূর্বে কোনও ভ্যাক্সিন নিতে গিয়ে যাঁর allergic or anaphylaxic reaction হয়েছে তিনি কোভিড ভ্যাক্সিন নেবেন না।
b) কোনও ইঞ্জেকশন নেওয়ার পর যাঁর কোনও allergic or anaphylaxic reaction হওয়ার ইতিহাস আছে তিনি এই ভ্যাক্সিন নেবেন না।
(এই পয়েন্টটা নতুন যোগ হয়েছে)
c) যাঁর কোনও ওষুধে অ্যালার্জি আছে (যেমন sulpha-containing drugs, ইত্যাদি) তাঁরাও এই ভ্যাক্সিন নেবেন না।
আগে বলা হয়েছিল history of drug allergy থাকলে সেটা কোভিড ভ্যাক্সিন নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও contraindication নয়, কিন্তু সাম্প্রতিকতম নির্দেশিকা অনুযায়ী এই পয়েন্টটাও প্রতিলক্ষণ অর্থাৎ contraindication হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
d) যাঁর কোনও খাদ্যসামগ্রীতে অ্যালার্জি আছে তিনি কোভিড ভ্যাক্সিন নেবেন না।
এই পয়েন্টটাও একেবারে নতুন। আগে বলা হয়েছিল history of food allergy থাকলে কোভিড ভ্যাক্সিন নিতে অসুবিধা নেই।
3) Pregnancy and Lactation :-
কোনও গর্ভবতী মহিলা অথবা যিনি শিশুকে স্তন্যপান করান তিনি এই ভ্যাক্সিন নেবেন না, কারণ এই গ্রুপের মহিলাদের উপর ভ্যাক্সিনের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত যথেষ্ট তথ্যপ্রমান নেই।
এছাড়া আরো একটা কথা বলে দিই, যিনি near future অর্থাৎ সাম্প্রতিক ভবিষ্যতে গর্ভধারণ করার পরিকল্পনা করছেন তিনিও কিন্তু কোভিড ভ্যাক্সিন নেবেন না !
উপরোক্ত পয়েন্টগুলো ‘absolute contraindication’, অর্থাৎ যে সব ক্ষেত্রে কোনোমতেই কোভিড ভ্যাক্সিন নেওয়া উচিত নয়।
এবার চলুন provisional / temporary contraindication কি কি সেগুলো দেখে নেওয়া যাক :-
Provisional/Temporary contraindications :-
****************
In these conditions Covid vaccination is to be deferred for 4-8 weeks after recovery.
1) Persons having active symptoms of SARS CoV-2 infection.
2) SARS CoV-2 patients who have been given anti-SARS CoV-2 monoclonal antibodies or convalescent plasma.
3) Acutely unwell and hospitalised (with or without intensive care) patients due to any illness.
অর্থাৎ,
a) যিনি এই মুহূর্তে কোভিডে আক্রান্ত (পজিটিভ কেস) তিনি আপাতত ভ্যাক্সিন নেবেন না। সুস্থ হওয়ার চার থেকে আট সপ্তাহ পর নিতে পারেন।
আগে বলা হয়েছিল একজন active case (অর্থাৎ এই মুহূর্তে যিনি কোভিড পজিটিভ এবং বর্তমানে home isolation /hospitalisation-এ আছেন) তিনি সুস্থ হওয়ার দু-সপ্তাহ এই ভ্যাক্সিনটা নিতে পারেন। এখন সেটা পরিবর্তিত হয়ে চার থেকে আট সপ্তাহ পর বলা হচ্ছে।
b) যাঁর শরীরে এই মুহূর্তে কোভিড সংক্রমণের সুস্পষ্ট লক্ষণ আছে তিনি ভ্যাক্সিন নেবেন না। যদি পরীক্ষা করে দেখা যায় তাঁর কোভিড হয়নি সেটা অবশ্য অন্য কথা, কিন্তু যতক্ষণ না প্রমাণ হচ্ছে তাঁর লক্ষণগুলো কোভিডের জন্য নয় (অর্থাৎ Covid negative) ততক্ষণ তিনি একজন potential positive case হিসাবেই গণ্য হবেন এবং ভ্যাক্সিন নেবেন না।
c) কোনও কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তি যাঁকে anti-SARS CoV-2 monoclonal antibodies অথবা convalescent plasma therapy দেওয়া হয়েছে (এটা অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি ছাড়া সম্ভব নয়) তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার চার থেকে আট সপ্তাহ পর কোভিড ভ্যাক্সিন নিতে পারেন …. তার আগে নয় !
d) এই মুহূর্তে যিনি কোনও অসুখে শয্যাশায়ী (যে কোনও অসুখ) এবং হাসপাতালে ভর্তি আছেন (সেটা ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট হোক অথবা সাধারণ শয্য হোক) তিনি সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে ওঠার চার থেকে আট সপ্তাহ পর তবেই ভ্যাক্সিন নিতে পারবেন …. তার আগে নয় !
এবার আমরা দেখে নেব কাদের ক্ষেত্রে কোভিড ভ্যাক্সিন দিতে গেলে বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন।
Special Precautions :-
********
Vaccine should be administered with caution in persons with history of any bleeding or coagulation disorder.
অথাৎ, যাঁদের শরীরে অল্পেই রক্তক্ষরণের প্রবণতা আছে এবং রক্ত জমাট বাঁধা নিয়ে সমস্যা আছে সেই সব ব্যক্তিকে ভ্যাক্সিন দেওয়া যাবে, কিন্তু তাঁদের জন্য বিশেষ সতর্কতা দরকার।
এমন অনেক অসুখ আছে যাতে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। সামান্য আঘাতেই সেই জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকে, কিছুতেই বন্ধ হতে চায় না।
এছাড়া এমন কিছু ওষুধ আছে যেগুলো blood-thinner হিসাবে ব্যবহার করা হয়, যেমন Aspirin, Clopidogrel, ইত্যাদি।
যাঁদের এরকম bleeding disorder আছে অথবা যাঁদের নিয়মিত blood-thinner ধরনের ওষুধ খেতে হয় তাঁদের উভয়ের ক্ষেত্রেই ভ্যাক্সিন দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এর সাথে কিন্তু কোভিড ভ্যাক্সিনের কার্যকারীতা অথবা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই ! তাহলে কি জন্য সতর্ক থাকতে হবে ? যেহেতু একটা ইঞ্জেকশন দেওয়া হচ্ছে সেই জন্যই সতর্ক থাকতে হবে, যাতে বোঝা যায় সূঁচ ঢোকানোর কারণে তাঁর সেই ইঞ্জেকশনের জায়গায় প্রকাশ্য বা লুকনো কোনও রক্তক্ষরণ হচ্ছে কি না। এঁদের ক্ষেত্রে ভ্যাক্সিন দেওয়ার পর observation room-এ ভালোমতো নজরদারি দরকার তো বটেই, তা ছাড়াও পরবর্তী কয়েকদিন নিয়মিত ফলো-আপ করা উচিত যাতে বোঝা যায় ইঞ্জেকশনের সূঁচ যেখানে ঢোকানো হয়েছিল সেই মাংশপেশীর মধ্যে রক্তক্ষরণ-জনিত কোনও লক্ষণ দেখা দিচ্ছে কি না। অতএব এরকম কোনও ব্যক্তি যখন ভ্যাক্সিন নিতে যাবেন তখন অবশ্যই সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীকে বলে দেবেন যে আপনার এরকম কোনও সমস্যা আছে অথবা এরকম কোনও ওষুধ খান।
ভবিষ্যতে এই contraindication এর তালিকায় আরও কিছু পয়েন্ট যোগ বা পরিবর্তিত হতে পারে। সেগুলো জানা মাত্রই চেষ্টা করবো আপনাদের জানিয়ে দিতে।
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট, অনেক ধন্যবাদ….
খুবই প্রয়োজনীয় পোষ্ট।জানলাম অনেক কিছুই।পোষ্ট করার জন্য অনেক ভালবাসা জানালাম।আর সবার হিতার্থে শেয়ার করলাম।