১) সন্দীপ ঘোষ যখন তার থেকে অনেক অভিজ্ঞ এবং যোগ্য প্রফেসরকে টপকে মাত্র ৫০ বছর বয়সে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের MSVP এর পদ থেকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের পদে উন্নীত হলেন, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
২) যখন সন্দীপ ঘোষ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের পদে বসার ৭ দিনের মধ্যে ওনার স্ত্রীকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ থেকে আর জি করে ট্রান্সফার করে আনা হয়, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
৩) সন্দীপ ঘোষ আর জি করের প্রিন্সিপালের পদে বসার কয়েক মাসের মধ্যে যখন সেই কলেজে তুমুল ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
৪) সন্দীপ ঘোষের প্রিন্সিপাল হওয়ার পরপরই যখন একে একে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের chairperson, RKS, MSVP এবং Deputy Superintendent কে বদল করা হয়, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
৫) যখন আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন পদটিকে মিউজিক্যাল চেয়ার বানিয়ে আড়াই বছরের মধ্যে চারবার চেয়ারপার্সন বদল করা হয়, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
৬) যখন এই রাজ্যের প্রায় সবকটি সংবাদ পত্র এবং টিভি চ্যানেল সন্দীপ ঘোষের একের পর এক দুর্নীতির খবর বার করছিল, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
৭) যখন দুই দুই বার সন্দীপ ঘোষের বদলি হয় এবং কয়েক দিনের মধ্যে সেই আদেশনামা আশ্চর্যজনক ভাবে প্রত্যাহিত হয়, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
৮) যখন গায়ের জোরে ২ জন ডাক্তারি ছাত্রের ইন্টার্নশিপ কমপ্লিশনসার্টিফিকেট দেয়া হচ্ছিল না এবং তাদের কোর্ট কাছারি করতে হচ্ছিল, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
৯) যখন সরকারের নির্বাচিত রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ার ম্যান সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ সমেত সন্দীপ ঘোষের একাধিক দুর্নীতির বিষয়ে সর্বোচ্চ জায়গায় অভিযোগ জমা করেন, উনি তখনও কিছু জানতেন না।
১০) যখন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের তৎকালীন ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট (নন – মেডিক্যাল) স্বাস্থ্য দপ্তরে সন্দীপ ঘোষের একাধিক দুর্নীতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানান, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
১১) যখন ডাক্তারি পরীক্ষায় যোগ্য ছাত্র – ছাত্রীদের জোর করে ফেল করিয়ে দেওয়া আর অযোগ্য ছাত্র – ছাত্রীদের অর্থমূল্যে ঝুড়ি ঝুড়ি নম্বর দেওয়ার অভিযোগ আসছিল, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
১২) যখন স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রমোশন – ট্রান্সফার – পোস্টিং অর্থমূল্যে করানোর একের পর এক অভিযোগ আসছিল, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
১৩) যখন মেডিক্যাল কাউন্সিলে নির্বাচনের নামে প্রহসন হচ্ছিল, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
১৪) যখন একই ব্যক্তি তার অসাধারণ (?) কর্মকুশলতার জন্য কলকাতার দুটি মেডিক্যাল কলেজের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদে হেলথ রিক্রুটমেন্টবোর্ডের সর্বোচ্চ পদে, WBMC এর সর্বোচ্চ পদে আসীন হন, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
১৫) যখন গত পাঁচবছরে একাধিকবার কোনো অফিশিয়াল কারণ না দেখিয়েই DME, DHSএর মত সর্বোচ্চপদাধীকারীদের গুরুত্বহীন OSD পদে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
১৬) মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু করে প্রতিটি হাসপাতালে যখন হুমকি সংস্কৃতি অবাধে রাজ করতো, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
১৭) রাজ্যের একের পর এক মেডিক্যাল কলেজ ( আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ থেকে কল্যানী মেডিক্যাল কলেজ) গুলোতে যখন থ্রেট সিন্ডিকেটের লোকজন দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
১৮) উত্তরবঙ্গের কোনো এক চক্ষু বিশেষজ্ঞ যখন কোনো এক আশ্চর্য ম্যাজিকে সরকারিভাবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
১৯) অভিক – বিরূপাক্ষ – সন্দীপ – সুশান্তরা যখন মেডিক্যাল কলেজে কলেজে নয়া মেডিক্যাল এথিক্সের পাঠ দিচ্ছিলেন, তখনও উনি কিছু জানতেন না।
২০) আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের একজন স্নাতকোত্তর চিকিৎসক ছাত্রী যখন কর্মরত অবস্থায় ধর্ষিত এবং খুন হন, যখন তার মৃতদেহের চারপাশে ভিড় জমায় এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কিছু চেনা মুখ, যখন এই মৃত্যুর প্রতিবাদ মঞ্চে অবাধে ঝাঁপিয়ে পড়ে কিছু বিশেষ ভাবে নিয়োজিত লুম্পেন, তখনও উনি কিছু জানেন না।
উনি কিছুই জানেন না, অথচ উনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সত্যিই আমরা জানতাম না অজ্ঞানতা কতটা অপরিসীম কতটা প্রলয়ঙ্করী হতে পারে।
আর কবে জাগবে তুমি? আর কবে জানবে তুমি?
সংগৃহীত
Truth shall prevail.