কোভিডের জন্য অনেকেই ক্যানসারের চিকিৎসা শুরু করতে বা যাদের শুরু হয়ে গেছে তা চালাতে দেরি করছেন।
অনেকেই ভাবছেন, এমতাবস্থায় বারবার হাসপাতালে যাওয়া ঠিক হবে না। কারণ বাইরে যাওয়া মানেই কোথা থেকে কীভাবে কোভিড রোগীর সংস্পর্শে আসবে তার ঠিক নেই। তাই আপাতত চিকিৎসা না করে কোভিডের প্রকোপ একটু কমলে চিকিৎসা করাবেন। এই মানসিকতার জন্যই রোগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা। এমনিতেই আমাদের দেশে ৫০-৬০% রোগী সচেতনতার অভাবে অনেক দেরি করে চিকিৎসার জন্য যায়। কোভিডের সময় এর হার বেড়ে ৭০-৮০% পর্যন্ত হতে পারে। তারওপর যদি চিকিৎসায় আরও দেরি হয় তাহলে অনেক জটিল হয়ে উঠবে। বুঝতে হবে কোভিডে মৃত্যুহার ১-২%, কিন্তু ক্যানসারে এই হার অনেক গুণ বেশি। তাছাড়া ক্যানসারের চিকিৎসায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল সময়। ঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করে দেখা যায় রোগ সারবে না কি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। কাজেই সময়মতো চিকিৎসা শুরু না হলে সমস্যা বাড়তেই থাকবে।
যদিও একথাও ঠিক, অনেকেই এই মহামারীর জন্য কাজ হারিয়েছেন। আর ক্যানসারের চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। তা সত্বেও হাত গুঁটিয়ে বসে থাকা চলবে না। প্রয়োজনে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে হবে। অন্যথায়, আর্থিক সমস্যা মিটলে এবং কোভিডের গ্রাফ কিছুদিন পরে কমে গেলেও ততদিনে ক্যানসারের সমস্যা অনেক বেড়ে যাবে। একথা ঠিক ক্যানসার থাকলে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা কিছুটা হলেও বেশি থাকে। কারণ ক্যানসারের জন্য যেসব চিকিৎসার দরকার হয় তাতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় বলে যে কোনও সংক্রমণের আশংকাই অনেক বেড়ে যায়। কাজেই করোনা সংক্রমণের চান্স যে বাড়তে পারে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাসত্ত্বেও এই রোগের চিকিৎসায় ঢিলেমির কোনও কারণ নেই।
ক্যানসারের ধরন ও স্টেজ বুঝে চিকিৎসার সময়সীমা ঠিক করা হয়। হাসপাতালে যাওয়া নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই। বেশিরভাগ হাসপাতালেই রোগী ও তার আত্মীয়দের সুরক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করারও দরকার নেই। কোভিডের থেকে বাঁচতে সবার যা করণীয় তাই করতে হবে। যেমন, মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্যানিটাইজার বা সাবান জলে হাত ধোয়া দরকার। আর ওষুধপত্র ঠিকমতো খাওয়া। কাজেই একটা অসুখের জন্য অন্যটাকে হালকাভাবে দেখা যাবে না।