সবে চোখটা একটু লেগেছে। ওয়ার্ডের সব কাজ শেষ করে ডক্টরস রুমে এসে শুয়েছি। বাইরে চিৎকার, বেরিয়ে গেলো বেরিয়ে গেলো, এই ধর ধর ধর ধর। না, কোনও চোর ধরা নয়, এটা অভ্যর্থনা জানানো হচ্ছে। আর এক মানব শিশু ভূমিষ্ঠ হলো। এবার আমি বেচারী ইন্টার্ন গিয়ে প্লাসেন্টা বের করবো, সেলাই করবো।
লেবার রুমে ঘুমোনো নিয়ে এক মজার কথা বলি। শীতকাল। এক আয়ামাসী পেশেন্টের লাল কম্বল জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে, মুখ ঢাকা। সিনিয়র দাদা পেশেন্ট ভেবে প্রায় নীচের দিক দিয়ে পরীক্ষা করে আর কী, বাচ্চা বেরোতে আর কতো দেরী। তারপর যা ঘটেছিল, সেটা ইতিহাস।
এক থ্যালাসেমিয়ার রুগী। দশ এগারো বয়েস হবে। রক্ত নিতে ভর্তি হয়েছে। রাত দুটো। সারা ওয়ার্ড ঘুমিয়ে, তার চোখে ঘুম নেই। ওই বয়সেই অন্যদের কথা থেকে সে বুঝে নিয়েছে তাকে খুব তাড়াতাড়ি বাবা মাকে ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যেতে হবে। কোথায় তা সে জানে না। তারই মধ্যে আধো আলো আধো অন্ধকারে দেখি এক ডাক্তার দিদি তার মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে গল্প শোনাচ্ছে। বাইরে ফুটফুটে চাঁদের আলো চারিদিক ভাসিয়ে দিয়েছে। এমনই রাতে শুনেছি পরীরা নেমে আসে।