লকডাউনের ইতিবাচক প্রভাব গোটা দেশে দেখা যাচ্ছে সোমবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে করা বৈঠকে একথাই বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় এ দিন প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন। মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে এটি তাঁর চতুর্থ বৈঠক। যথাক্রমে ২০শে মার্চ, ২রা এপ্রিল ও ১১ই এপ্রিল এর আগের বৈঠকগুলি হয়েছিল।
এদিনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লকডাউনের ইতিবাচক প্রভাব গোটা দেশজুড়ে দেখা যাচ্ছে। গত দেড় মাসে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচানো গেছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার সঙ্গে ভারতের জনসংখ্যাকে তুলনা করা যায়। মার্চের গোড়ায় ভারত সহ বিশ্বের বহু দেশের পরিস্থিতি প্রায় একই ছিল। তবে, সময় মত পদক্ষেপ নেওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই ভারত তার নাগরিকদের প্রাণ রক্ষা করতে পেরেছে। একইসঙ্গে এদিন তিনি সতর্ক করে বলেন, এই ভাইরাসের প্রভাব সুদূরপ্রসারী এবং এক্ষেত্রে একমাত্র উপায় হল কড়া নজরদারিতে থাকা। তাই ভাইরাসকে কোনভাবে হালকাভাবে নেওয়া উচিত হবে না।
দ্বিতীয় পর্যায়ের লকডাউনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে এপর্যন্ত দুটি লকডাউন হয়েছে। দুটির আঙ্গিক ভিন্ন। আমাদের এখন ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে। তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞদের মত হল আগামী কয়েক মাস ধরে করোনা ভাইরাসের প্রভাব দেখা যাবে। ‘দো গজ দূরি’ মন্ত্রটি পালনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, আগামী দিনে আমাদের জীবনে মাস্ক এবং ফেস কভারকে অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ করে তুলতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে। অনেকেরই কাশি হলে বা ঠান্ডা লাগলে বা অন্য কোনও লক্ষণ দেখা দিলে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে সেটি জানাচ্ছেন, যা অত্যন্ত ইতিবাচক বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
এদিন প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, আমাদের অর্থনীতির বিষয়েও যেমন ভাবতে হবে একই ভাবে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধও চালিয়ে যেতে হবে। তিনি যতটা বেশি সম্ভব প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দেন। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সকলকে তিনি ‘আরোগ্য সেতু অ্যাপ’টি ডাউনলোড করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সাহসী হতে হবে এবং সাধারণ নাগরিকের জীবনে যে সমস্ত পরিবর্তন আসছে সেগুলি গ্রহণ করতে হবে। যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করছেন তাঁদের এই মহামারীর মোকাবিলায় গবেষণা এবং উদ্ভাবনের কাজ আরও জোরদার করার জন্য প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দেন।
রাজ্যগুলিকে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন নিয়ম-কানুন কঠোর ভাবে মেনে চলার পরামর্শ দেন। বিশেষ করে, হটস্পট এবং রেড জোন এলাকাগুলিকে সতর্ক থাকতে হবে। রাজ্যগুলিকে তিনি রেড জোন এলাকাকে প্রথমে অরেঞ্জ এবং তারপর সেগুলিকে গ্রীন জোনে পরিণত করতে উদ্যোগী হতে বলেন।
বিদেশ থেকে ভারতীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়াটি এমন ভাবে করতে হবে যাতে তাঁরা কোন সমস্যায় না পড়েন এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও কোন বিপদের সম্মুখীন না হন। তীব্র গরম এবং বর্ষায় যে সমস্ত রোগ হবার আশঙ্কা থাকে, সেগুলি মোকাবিলা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আগে থেকেই মুখ্যমন্ত্রীদের পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শও দেন।