“Family doctors have always been the backbone of health care.Family doctors have always been the bedrock of comprehensive, compassionate, and people-centred care.”
Dr Margaret Chan
Director-General of the World Health Organization
Keynote address at the 2013 World Congress of the World Organization of Family Doctors
আজ থেকে প্রায় দু-আড়াই হাজার বছর আগে গ্রিসের এক প্রখ্যাত দার্শনিক বাণী দিয়েছিলেন, ‘আজকের প্রজন্ম ঈশ্বর,পিতামাতা এবং শিক্ষকদের শ্রদ্ধা করে না, ধর্মাচরণ করে না, এদের হাতে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ সংকটপূর্ণ হয়ে উঠবে।
আজ দু-দুখানা সহস্রাব্দ পেরিয়ে এসেও দেখা যাচ্ছে এই ধরণের অতিসরলীকৃত, একদেশদর্শী, ক্লিশে ধারণাটা আজও আমাদের পিছু ছাড়ে নি!
অর্থাৎ অতীত মানেই স্বর্ণময় আর বর্তমান মানেই ভবিষ্যৎহীন!
-আহা কি খেলাটাই না খেলত পিকে -চুনী -বলরাম (সমসময়ে যাঁদের আবার সামাদ-সাত্তারের মিথের সাথে লড়তে হয়েছে), কোথায় লাগে বাইচুং-সুনীল ছেত্রী !দু-তিন দশক পরে আবার এই বাইচুং-ছেত্রীর সঙ্গেই তুলনা করা হবে সেই অনাগত কালের তারকাদের!
জীবনের অন্যক্ষেত্রেও ছবিটা আলাদা নয়!
সে সবই এক-একটি আশ্চর্য তুলনা-বিলাসের গল্প!
দুদশক আগেও শুনেছি
-হ্যাঁ, লিখতেন বটে মানিকবাবু, বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর, বনফুল! কোথায় লাগে এসব সুনীল-শ্যামল-শীর্ষেন্দু-বুদ্ধদেব!
আজ সুনীল-শ্যামলরা আইকন, কিন্তু স্বপ্নময়-অমর মিত্র পেরিয়ে এখন আবার শীর্ষ, প্রচেত, বিনোদরা পড়ে যাচ্ছেন অনাবশ্যক তুলনার বেড়াজালে !
বড়ে গোলাম, নিখিল ব্যানার্জি, কেরামত খাঁ, হেমন্ত, মান্না, মানবেন্দ্রদের সাথে অকারণ তুলনার লড়াই চলে রাশিদ, বুধাদিত্য, অজয়,সুমন, শ্রীকান্ত, রূপঙ্করদের। আবার এঁরাই কালের নিয়মে হয়ে উঠবেন উদাহরণ!
না, অতীতের সব ডাক্তারবাবু কিন্তু ‘অগ্নীশ্বর মুখার্জী’ ছিলেন না, আর আজকের সব ডাক্তারবাবুর কিন্তু সহানুভূতিহীন অর্থপিশাচ এমনটাও নন! এ ধরণের ‘সরলীকৃত সাধারণীকরণ’ আমাদের সত্য থেকে অনেকদূরে সরিয়ে নিয়ে যায়!
ডাক্তার কিন্তু অন্য গ্রহ থেকে আসা কোনো প্রাণী নন!
ডাক্তার আমার আপনার বাড়ি থেকে আসা কোনো মেধাবী ছেলে বা মেয়ে, অক্লান্ত পরিশ্রমের পর, সাধ্যের শেষ সীমায় পৌঁছে, কয়েক লক্ষ প্রতিযোগীর সঙ্গে যে লড়ে সুযোগ পায় ডাক্তারি পড়ার! পাঁচ বছর অমানুষিক পড়ার চাপ সহ্য করে ডাক্তারি পাশ করে! রাষ্ট্র তাকে কি ধরণের হোস্টেলে থাকতে দেয়, মেডিক্যালের অনশন আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে সেটা দেখিয়ে দিয়েছে!
যে বয়েসে তার ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট, ম্যানেজমেন্ট স্নাতক বন্ধুরা ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে জুড়ে যাচ্ছে চমৎকার সব কর্মক্ষেত্রে, নবীন ডাক্তারটির সামনে তখন শুধুই কঠিন, সহানুভূতিহীন একটা পৃথিবী। ইন্টার্নশিপের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের মাঝখানে চলতে থাকে আরো যুদ্ধের প্রস্তুতি। স্নাতকোত্তরে ভর্তি হবার! হতে পারলে ভালো, না পারলে ওই আপনার কল্পলোকের রোমান্টিসিজম মাখা ‘বাড়ির ডাক্তারবাবু’ হওয়া!
আর যদি সেই ক্ষুরধার পরীক্ষায় উৎরে যায়, তবে সরকারি দাসখৎ লিখে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হওয়া এবং তারপর ফের সাধনা !
পুরোদস্তুর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হবার!
বন্ডের তিরিশ বা দশ কেন এক লক্ষ টাকা দেওয়ার ক্ষমতাও থাকে না সেই ততটা-তরুণ-নন ডাক্তারটির!
কিন্তু দাসখৎ লেখা হয়ে গেছে যে!
চিকিৎসক তৈরী করতে রাষ্ট্রের বিপুল খরচা বহন করতে হবে না!
কখনো প্রশ্ন ওঠে কি একজন ইঞ্জিনিয়ায়,আইনজীবী,চার্টার্ড একাউন্টেন্ট, আই এ এস, আই পি এস, পি এইচ ডি তৈরি করতে রাষ্ট্রের খরচের ব্যাপারটা নিয়ে?
তাঁদের কিন্তু স্নাতকোত্তরে পড়ার জন্য কোনো দাসখৎ দিতে হয় না!
আপনি বলছেন, এখন নাকি প্রত্যেকেই কোনো না কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ !
প্রতিবছর যত ছাত্রছাত্রী চিকিৎসাশাস্ত্রে স্নাতক হন (এমবিবিএস) তার সিংহভাগই কিন্তু স্নাতকোত্তরে পড়ার সুযোগ পান না, তাই শংকর ডাক্তার, অমিয় ডাক্তার, সুবোধ ডাক্তাররা আজও আছেন!
বহাল তবিয়তে ঠিক বলা চলে না অবশ্য, তবু তাঁরা আছেন! একটু চোখ মেলে দেখুন!
এই করোনাকালে পাড়ার এই ডাক্তারবাবুরাই কিন্তু অজস্র পরিবারের আশা ভরসা!
এই একশ তিরিশ কোটির দেশে প্রতি ১৬৬৮ মানুষ পিছু মাত্র একজন চিকিৎসক! তার জন্য কি একজন চিকিৎসক দায়ী? না কি দশক দশক ধরে চলে আসা আমাদের অব্যবস্থ স্বাস্থ্যনীতি?
চিকিৎসক কে? চিকিৎসক সেই একজন, যিনি তাহলে ছোটো বেলা থেকে মনোযোগী ছাত্র বা ছাত্রী ছিলেন, মেধাবীও। পাড়ায় , ইস্কুলে কলেজে যাঁকে ভালো ছেলে বা মেয়ে বলা হতো, কৈশোর আর যৌবনের প্রায় পুরোটাই যিনি মনোনিবেশ করেছেন বইয়ের পাতায় ।
জয়েন্ট এন্ট্রান্সের দুর্লঙ্ঘ্য পর্বতারোহন করে ফের পাড়ি দিয়েছেন অজস্র পার্ট, সেমেস্টারের ঢেউ পেরিয়ে MBBS এর অকূল পাথার , তারপর আবার পোস্ট গ্রাজুয়েশনের যুদ্ধে জয়ী কিংবা পরাজিত হয়ে নেমেছেন জীবন যুদ্ধে!
কেউ কেউ আবার মধ্যবিত্ত পরিবারের নানা রকম পিছুটান পেরিয়ে শুধুমাত্র মেধার ওপর ভিত্তি করে পাড়ি দিয়েছেন বিলেতে, উচ্চশিক্ষিত হয়েছেন, নিয়েছেন সর্বোচ্চ মানের প্রশিক্ষণ এবং তার পর ফিরে এসেছেন নিজের দেশে, হয় বাধ্য হয়ে, অথবা, আদর্শের টানে।
সেই দেশে, যেখানে ‘ব্রেন ড্রেন’ কে জঘন্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়, কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধান, কাউন্সিলর, এমএল এ , এম পি, প্রাক্তন মন্ত্রি এমনকি প্রাক্তন কয়েদি পর্যন্ত চিকিৎসকদের হুমকি দিয়ে থাকেন প্রায় জন্মগত অধিকার বশতঃ! আর সংবাদপত্রের উত্তর সম্পাদকীয়তে চাঁদমারি করে সমাজকে বুঝিয়ে দেয়া হয় চিকিৎসা সংকটের যাবতীয় দায়, যত দোষ ওই নন্দ চিকিৎসকের!
আর আলিপুরদুয়ারে, পুরুলিয়ায়, পাঁশকুড়ায়, ডেবরায়, শিলিগুড়িতে, ভাঙ্গরে, আউশগ্রামে, গোপীবল্লভপুরে, মালদায়, মথুরাপুরে, বোলপুরে, বর্ধমানে, ইসলামপুরে, ভগবানগোলায়, ডায়মন্ডহারবারে, দার্জিলিং-এ, কলকাতায়, মুর্শিদাবাদে ও আরো বহু নাম শোনা না শোনা জায়গায় চিকিৎসকটি অপমানিত, লাঞ্ছিত, নিগৃহীত, আহত, বিষ্ঠালেপিত, বিধ্বস্ত হতেই থাকেন!
আর কারো দোষ নেই!
প্রয়োজনের তুলনায় এক পঞ্চমাংশ ডাক্তার থাকবেন অজস্র মানুষের পরিষেবায়, সেটা কি ডাক্তারের দোষে?
মানুষ ডাক্তার না পেয়ে ওঝা, গুণীন, হাতুড়ে করে শেষ অবস্থায় যাবেন সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে , তার পর মারা যাবেন, এটা কি ডাক্তারবাবুটির দোষ ?
হাসপাতালে একজন রোগী ডাক্তারবাবুর সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় পাবেন গড়ে চল্লিশ সেকেন্ড থেকে মিনিট দেড়েক!
এবং সকাল ৯ টা থেকে বিকেল তিনটে অবধি আউটডোরে রোগী দেখে শ্রান্ত-অভুক্ত ডাক্তারবাবুটি যদি এমার্জেন্সিতে রোগী দেখতে যান বা ইনডোরে কোনো রোগী দেখতে আর তার জন্য যদি রোগী বিক্ষোভ হয়, তার দায়, সেই চিকিৎসকটির ওপর বর্তায় কি?
গোড়া কেটে আগায় জল দিলে এইই চলতে থাকবে।
১৯৯১ সালে আমাদের দেশের আইনসভায় একেবারে আইন করে চিকিৎসা পরিষেবাকে ক্রেতা-সুরক্ষার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে !
তাই তার তিনদশক পর আজ ডাক্তার-রোগীর সম্পর্ক ক্রেতা-বিক্রেতার হয়ে পড়েছে বলে কারো কারো আক্ষেপ আমাদের বিস্মিত করে, বিষন্নও!
অনেকেই ভুলে যান যে, ডায়াগনোসিস বা রোগ নির্ণয় ব্যাপারটা দাঁড়িয়ে আছে দুটো পায়ের ওপর।
একটি রোগ লক্ষণ ভিত্তিক ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি, আর অন্যটি বিভিন্ন রকম পরীক্ষাভিত্তিক ইনভেস্টিগেশনাল পদ্ধতি। একটি অন্যটির পরিপূরক। এগুলোর সাহায্য না নেওয়া অনুচিত শুধু নয়, বিজ্ঞান ও আইনগত দুদিক থেকেই বিপজ্জনকও!
সেক্ষেত্রে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে এই সমস্ত কাঠগড়ায় তাকে দাঁড়াতে হবে :
১. পুলিশ, ২. সিএমওএইচ, ৩. কমিশন, ৪. উপভোক্তা ফোরাম, ৫. রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল, ৬. স্বাস্থ্য ভবন, ৭.সংবাদমাধ্যম।
গাফিলতি প্রমাণ হোক না হোক, কাজীর বিচারে সাতদিনের ফাঁসি আর তিন দিনের জেলের ব্যবস্থা আছেই !
রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেও দেয়া হতে পারে!
শোনা যায়,
‘আগে’ নাকি
১. নাড়ি টিপেই নির্ভুল রোগ নির্ণয় করতেন ডাক্তারবাবুরা
২. কোনো রোগ নির্ণায়ক পদ্ধতির ধার ধারতেন না
৩. কম ওষুধ দিয়ে প্রচলিত দেশজ পদ্ধতি পছন্দ করতেন। পথ্য নিয়ে আলোচনা করতেন বাড়ির মা কাকিমার সঙ্গে ।
এখন সমস্যা হলো এই ‘আগে’ শব্দটি নিয়ে !
‘আগে’র কোনো কালনির্ণয় করা নেই! কিসের ‘আগে’ সেটাও বলা নেই , তাই খুব কুন্ঠা এবং সংশয় সহ ধরে নিচ্ছি দেশ স্বাধীন হবার আগে !
সবিনয়ে দু-একটা তুলনা তুলে ধরা যেতে পারে !
সেই ‘সত্যযুগে’ ভারতবাসীর গড় আয়ু ছিল ৩২ আর এখন সেটা ৬৯.০৯, শিশুমৃত্যুহার ১৬৫ থেকে নেমে এসেছে ৩০ এর আসে পাশে !
কিমাশ্চর্য্যতঃপরম !
এবং এই সব হয়েছে এই হাল আমলের অর্থগৃধ্নু, ‘বিক্রেতা’, ডাক্তারদের সময়েই !
আমাদের দেশের সরকারবাহাদুর স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করেন জিডিপির ১.৪ শতাংশ যেটা সারা গ্রহের নিম্নতম পরিসংখ্যানগুলির একটি !
চিকিৎসক জনসংখ্যার অনুপাত তথৈবচ, একজন চিকিৎসককে এখন একই সঙ্গে সামলাতে হচ্ছে কবি পূর্ণেন্দু পত্রীর ভাষায় ‘ম্যাথর, ম্যাজিস্ট্রেট এবং মন্ত্রী’ এবং হ্যাঁ, মিডিয়া!
তবুও আয়ুবৃদ্ধি, তবুও মৃত্যুহার হ্রাস, তা বুঝি মন্ত্রবলে !
ভালো লেখা। আগেও আপনার লেখা পড়ছি। আমার এক বন্ধু সোরিওসিসে ভুগছে। ইদানিং হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেয়ে পা ফুলে গেছে। আপনি যদি একটু আপনার ফোন নম্বর টা দেন তাহলে খুব উপকৃত হই। অসময় বিরক্ত করবো না। যে রকম সময় বলবেন, সেইরকম সময়ে ফোন করবো।
সরাসরি হাসপাতাল/ক্লিনিক
১.অ্যাপোলো হাসপাতালে সোম/ বুধ/শুক্র ১১-১ টা (+91 84209 86678/+91 6289-621199)
২. যোধপুর পার্ক উইজডার্মে সোম/বুধ/শুক্র দুপুর ২-৪ (98309 27908/+91 877-7686190)
৩. থিয়েটার রোড/পার্ক সার্কাস উইজডার্ম মঙ্গল/বৃহস্পতি/শনি (+91-33-40032100/
9433030178)
দু’টি খুব সহজ উপায়ে ঘরে বসেই, অনলাইন কন্সালটেশনের মাধ্যমে সুরক্ষিতভাবে সরাসরি আমাকে দেখিয়ে নিতে পারেন।
১. Apollo 24 7 অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে পারেন https://apl247.onelink.me/AEkA/9cf9930d
অথবা
২. WIZDERM এর জন্য https://wizderm.in/doctor.php?id=3 এই লিঙ্কে ক্লিক করতে পারেন