লুটের ভোটে জেতা অচল, দুর্নীতি- থ্রেট কালচারের আঁতুড়ঘর ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকাল কাউন্সিল চার মাস পর ২রা ডিসেম্বর ২০২৪ বেলা ১টায় এক মিটিং ডাকে। জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস জমায়েতের ডাক দেওয়ার ফলে ওইদিন সেই মিটিং বিনা নোটিশে ১০ টায় শুরু করে ১১ টায় শেষ করে দেয়। সেখানে আমরা জানতে পারি অভয়া-তিলোত্তমার হত্যাকাণ্ডের অকুস্থলে থাকার অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে যে ডাঃ অভীক দেকে কাউন্সিল তার কর্মসূচিতে থাকার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, তিনি ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আমরা রাগে, ক্ষোভে, হতাশায় অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিই এবং চিকিৎসক, জুনিয়ার ডাক্তার, অভয়া মঞ্চের সহযোদ্ধা ও সর্বস্তরের মানুষের সক্রিয় স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তা চূড়ান্ত সফল হয়। তার ফলে কাউন্সিলের পূর্বঘোষিত ৩রা ডিসেম্বরের মিটিং হয়নি, কিছু সদস্য বিচ্ছিন্ন ভাবে আসেন ও জনগণের ক্ষোভের মুখে পড়েন। ডাঃ অভীক দে কে কাউন্সিলের ত্রিসীমানায় দেখা যায়নি।
এই অবস্থায় বিকেলে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল-এ র পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্বাস্থ্যভবনে যায় ও সেখানে সচিব পদমর্যাদার একজন আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে। সেখানে ২০১৯ থেকে অবৈধ উপায়ে চেয়ার দখল করে রাখা কাউন্সিলের কাউন্সিলের অপসারণ ২৮শে আগস্ট, ২০২৪-এর স্বাস্থ্য সচিবের নির্দেশ সত্বেও কেন হয়নি, ইতিমধ্যেই বহু অভিযোগের ভিত্তিতে সাস্পেন্ডেড অভীক-বিরুপাক্ষদের সরকার গঠিত তদন্ত কমিটি গুলির সুপারিশ কার্যকর না করা ও সামগ্রিকভাবে দুর্নীতি-দুর্বৃত্ত-থ্রেট কালচার লাঞ্ছিত রাজ্যের পচে যাওয়া স্বাস্থ্যব্যবস্থা যা অভয়া-তিলোত্তমার নৃশংস হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করে তাকে প্রশ্রয় দেওয়া ও তদন্ত-বিচার প্রক্রিয়ায় ন্যাক্কারজনক ভূমিকা — এই কথাগুলি তুলে ধরা হয়।
কোন সুনির্দিষ্ট আশ্বাস তিনি দিতে না পারলেও, স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে বিষয়গুলি নিয়ে টেলিফোনে কথা বলে জানান উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা আমাদের আশ্বস্ত করতে পারেনি, তা আমরা স্পষ্টভাবে জানাই।
আমরা ধর্নামঞ্চে ফিরে এসে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করি। ৪ঠা আগস্ট ২০২৪-এর অভয়ামঞ্চের শিয়ালদহ আদালতে ব্যাপক জমায়াতের প্রস্তুতির বিষয়টি আলোচনায় আসে। সমগ্র পরিস্থিতি আমরা অভয়া মঞ্চের সংগ্রামী সহযোদ্ধাদের জানাই এবং অচিরেই আরো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার অঙ্গীকার করে সাময়িক অবস্থান বিরতি ঘোষণা করি। ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকাল কাউন্সিলের সার্বিক অনাচার নিয়ে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করা হয়। প্রসঙ্গতঃ শেষ পর্বে জুনিয়ার চিকিৎসকরা যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের সঙ্গেও ভবিষ্যত আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়।
আমরা অভয়া-তিলোত্তমাদের বিচার ছিনিয়ে আনতে, দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের মূলোৎপাটন ও নারী-প্রান্তিক লিঙ্গ-যৌনতার মানুষের অধিকার আন্দোলনে অঙ্গীকার বদ্ধ সর্বস্তরের জনগণকে আমাদের সঙ্গে থাকার জন্যে সংগ্রামী অভিনন্দন জানাই। আমাদের সম্মিলিত ধারাবাহিক আন্দোলন এই নৈরাজ্য দূর করার পথে সব বাধা অতিক্রম করবেই।