(১৩)
হস্টেলের দিনগুলো বেশ কাটছে। শুভ এখন হস্টেলেই থাকে। সেও এক রোমাঞ্চকর কাহিনী। ওর বাড়ির দূরত্ব যা তাতে হস্টেল পাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না। কিন্তু ওকে এবার পাকাপাকিভাবে এখানেই থাকতে হবে। ওরা এখন সিনিয়র। ওদের পরের ব্যাচও ঢুকে গেছে। তাদের অনেকেরই বাড়ি অন্য জেলায়। কিন্তু হস্টেল পাওয়া নিয়ে বিরাট টানাপড়েন চলে। কারণ অপ্রতুল থাকার ব্যবস্থা। সবাইকে থাকার জায়গা দেওয়ার দায়িত্ব কলেজ কর্তৃপক্ষের। সেই নিয়ে প্রিন্সিপালের সাথে ওদের ঝামেলা লেগেই থাকে। ডেপুটি সুপার থাকেন এডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিং-এর উল্টোদিকে সুপারের কোয়ার্টারের দোতলায়। ছাত্রদের দাবী ওই বিল্ডিং এর নীচের তলা যখন খালিই পড়ে আছে তখন সেখানে কিছু ছাত্রের থাকার ব্যবস্থা হোক। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। পারমিশনের তোয়াক্কা কে বা করে। জবর দখল হল সুপারের কোয়ার্টারের একতলাটা, হস্টেলের নামই হয়ে গেল জবরদখল হস্টেল। সেই থেকে শুভও ওখানে থাকতে শুরু করেছে। প্রথম পরীক্ষায় সাপ্লির শোক কিছুটা ভুলতে বসেছে। দিনগুলো কিছুটা কাটছে ইউনিয়নের কাজে, কিছুটা প্রেম করে। প্রেমে পড়ার ভাল দিক হল ভবিষ্যৎ যেন সিনেমার মতো চোখের সামনে ভাসতে থাকে। তাকে মনের মতো সাজিয়ে গুছিয়ে নেওয়া যায়। সেই সিনেমার হিরো এক নিপুণ শল্য চিকিৎসক আর হিরোইন বলাই বাহুল্য দক্ষ স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ। দু’জনে প্রত্যন্ত এক গ্রামে সাধারণ মানুষের চিকিৎসায় নিয়োজিত প্রাণ। এই স্বপ্ন চয়নে কেটে যায় কত অগুনতি প্রহর। লাইব্রেরীর কিউবিকলসের ঘেরাটোপের সাধ্য কি সেই স্বপ্নগুলোকে বন্দী করে রাখে। কখনও ঝগড়া, মান অভিমান, মতভেদ, অমিল আবার কখন হাত ধরাধরি করে চলা শুরু খেয়ালই থাকে না। শতাব্দী প্রাচীন এই কলেজের দেওয়ালগুলো যুগের পর যুগ নিরেট দাঁড়িয়ে থাকে এমন কত শত প্রেমের সাক্ষী হয়ে। কত যুগলের প্রেম পরিণতি পায় না। ব্যর্থ সেই প্রেমগুলো তবু মহিমাম্বিত হয়ে থাকে শুধু একদিন জন্মে ছিল বলেই। আবার কত প্রেম বুক জড়াজড়ি করে জগতের কাজে মেতে ওঠে। কত অনুভূতি শুধু বলা যায় নি বলে গচ্ছিত থেকে গেছে এই দেওয়ালের কাছে। চরিত্রের নাম বদলে বদলে যায় কিন্তু সেই সব অনুভূতিরা তারা তো আকাশের অগুনতি গ্রহ তারার মতো শাশ্বত। শুভ-র প্রেম কাহিনী তার থেকে আলাদা কিছু নয়।
আশির দশকের শুরু থেকে যেন একটা মরা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে কলকাতা। যান জটে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। তার ওপর বাম- কংগ্রেসের সংঘাতে নিত্যই খুন খারাপি বোমা বাজি লেগেই থাকে পাড়ায় পাড়ায়। সারা বিশ্ব সংসারে কলকাতার মানুষের বদনাম বল সুনাম বল এই যে রাজনীতি ছাড়া এখানকার লোক কিছুই বোঝে না। তবু প্রতিবাদের শহর, মিছিলের শহর, কলকাতায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে থাকে ভালবাসা, কলকাতা ময়দানে চলে ফুটবল লীগ। উন্মত্ত বাঙালি জানতে চায় মোহনবাগান না ইস্টবেঙ্গল? ঘটি না বাঙাল? ইলিশ না চিংড়ি। তবু কলকাতা নড়িতে নড়িতে চলে, কলকাতা কলকাতাতেই থাকে। শুভ সেকেন্ড ইয়ারে এ জি এস হল কিন্তু থার্ড ইয়ারে কান্ডিডেট করা হল না ওকে। সংগঠনের মাথা হতে গেলে ভাল বক্তা হতে হয়। সেটাই সব না হলেও সেটাও জরুরী। শুভ সেইখানেই অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়ে অনেকটা। তবে ফোর্থ ইয়ারে সোশ্যাল সার্ভিস শাখার সেক্রেটারি হয়ে হিরোশিমা দিবস পালন করল সম্প্রতি। এ গুলো করতে ভালই লাগে ওর। কলেজের জুনিয়ররা আছে, আবার মাথার ওপর সিনিয়র দাদারাও আছে। যেন সম্পূর্ণ সংসার। ইতিমধ্যে প্রেমেও জোয়ার ভাঁটা চলছে। সংঘাত যেমন আছে পছন্দ-অপছন্দে, তেমন আছে গণ সঙ্গীতে রবীন্দ্র সংগীতে। “নাম তার ছিল জন হেনরি/ ছিল যেন জীবন্ত ইঞ্জিন কিংবা সুদুর সমুদ্দুর প্রশান্তের বুকে/ হিরোশিমা দ্বীপের আমি শঙ্খচিল/ আমার দু’ডানায় ঢেউয়ের দোলা/ আমার দু’চোখে নীল শুধু নীল’ রক্ত উছলে ওঠে বুকের মধ্যে। এম সি ডিএস এ-র সংগঠনের ঘেরাটোপে বেড়ে ওঠা তরুণ ডাক্তারের দল এই প্রতিবাদের শহরে নিজেদেরকে ছাঁচে ঢেলে গড়ে তুলছে প্রতিদিন। ওদিকে ছত্তিশগড়ের শংকর গুহ নিয়োগীর কাজ কর্মের খবর এসে পৌঁছাচ্ছে ওদের কানে। কলকাতা থেকে সিনিয়ররা গিয়ে জয়েন করেছে সেখানের শহীদ হাসপাতালে। শুভ মনে মনে ভাবে তার স্বপ্ন কবে আর কী ভাবে যে সফল হবে। মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছা প্রবল হয়ে রীতিমতো তাড়া করে বেড়ায় ওকে। সে সব আলোচনা চলতে থাকে অলস দুপুরে কলেজের এক চিলতে মাঠে বসে, কখনও শুভদের বাড়ির ছাদে, কলেজের ক্যান্টিনে, লাইব্রেরির খোপ কাটা চৌহুদ্দির আবডালে। কী করে কী করবে ওরা? ঠিক হয়েছে ও হাউসস্টাফশিপ করার সময় সার্জারির কাজ শিখবে, আর হবু জীবন-সঙ্গিনী গাইনি সামলাবে। এক এক দিন ওরা ঘাসের ওপর চিত পটাং হয়ে শুয়ে শুয়ে রাতের আকাশের গায়ে ফুটে থাকা টিমটিমে তারা দেখতে দেখতে স্বপ্নে বিভোর হয়ে যায়। কিন্তু যে জীবনের ছবি তিল তিল গড়ে তুলছে সে জীবনে যে অনেক অনিশ্চয়তা। আর শুভ তো নিঁখুত নয়। ওর দোষের ভার কি বইতে পারবে এই মেয়ে? সে তো সময়ই বলবে। আপাততঃ দিন বয়ে চলেছে, চোরা স্রোত বেয়ে বয়ে চলেছে আগুনের ফল্গু ধারা। তাকে প্রেম বলে ডাকলে প্রেম, তাকে বিপ্লব নাম দিতে চাইলে বিপ্লব। শুভ ঠিক করে ফেলেছে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করবে না। কাজ শিখবে সার্জারিতে, পিডিয়েট্রিক সার্জারিতে, ইউরোলজিতে। তারপর আর পড়াশোনা নয়। খুঁজে নেবে উপযুক্ত কাজের জায়গা। কাজ মানে শুধু ডাক্তারি নয়। সঙ্গে চাই সমাজ পরিবর্তনকামী আন্দোলন। তক্কে তক্কে থাকে ও। কে জানে সুযোগ কোন পথে আসে। কলকাতা শহরের নিজস্ব আওয়াজ আছে কান পেতে শুনলে জানা যায়। ট্রাম চলার ঠুং ঠাং, হাতে টানা রিক্সার ঝন ঝন চলা, মাল বোঝাই ঠেলা গাড়ির চালক উচ্চকিত হাঁকডাক, পথ চলতি মানুষের সমবেত পায়ের শব্দ, চায়ের দোকানের গুলতানি সব শব্দ মিলে যেন কানে বেদ শ্রুতির মাধুর্য্য ঢেলে দেয়। যেন শঙ্খ ঘোষের কবিতার মুর্ছনা —-
যা কিছু আমার চারপাশে আছে
শেয়ালদা
ভরদুপুর
উল্কি
যা কিছু আমার চারপাশে আছে
কানাগলি
স্লোগান
মনুমেন্ট
যা কিছু আমার চারপাশে আছে
শরশয্যা
ল্যাম্পোস্ট
লাল গঙ্গা
সমস্ত একসঙ্গে ঘিরে ধরে মজ্জার অন্ধকার
তার মধ্যে দাঁড়িয়ে বাজে জলতরঙ্গ
চূড়োয় শূন্য তুলে ধরে হাওড়া ব্রিজ
পায়ের নীচে গড়িয়ে যায় আবহমান……
এখানে পড়তে এসে সব থেকে ভাল লাগার বিষয়টা হয়েছে বই। কলেজ থেকে বেরলেই বইয়ের গন্ধে ম ম করছে চারদিক। আনন্দের জন্য এর থেকে সুখের বিষয় কি বা হতে পারে। আনন্দ গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেল একটা পুরোণো বইয়ের দোকানে। রাজুদার দোকানের বাঁধা খদ্দের সে। নতুন কিছু এসেছে নাকি দেখতে যেই ঈষৎ গলা বাড়িয়েছে রাজুদা কিছুটা বিরক্ত গলায় বলে উঠল,“কি ব্যাপার বলো তো ভাই?” আনন্দ থমকায়। রাজুদার কর্কশ স্বরে তিক্ততার এমন মিশেল আগে শোনে নি কখনও। বরং আনন্দকে বিশেষ খাতির করে সে।“ এই যে কাজ কর্ম বন্ধ করে স্লোগান ঝাড়ছে সব এটা কি ডাক্তারদের উচিত হচ্ছে?’ রাজুদা প্রশ্নটা ছুঁড়ে দেয় আনন্দ-র দিকে। রাজুদা ওর বাপের বয়সী। শুরু থেকেই আনন্দকে বিশেষ স্নেহ করে বলেই তুমি সম্বোধন করে। আনন্দ বোঝে ডাক্তারদের চলতি আন্দোলনকে সাধারণ মানুষ নেক নজরে দেখছে না। তার জন্য তাদের দোষ দেওয়া যায় না বটে। তাদের কাছে যুক্তি আছে। জনতা মনে করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি করার দাবী তুলে যা যেটুকু পরিষেবা মানুষ পাচ্ছিল তাকে বন্ধ রাখা অনৈতিক আর সেই অনৈতিক কাজটা করে চলেছে এই সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা। এমনিতেই এই অপ্রতুল স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রধান দায় এসে পড়ে ডাক্তারদের ওপর। জীবন দায়ী ওষুধের অভাবে রোগীর প্রাণ গেলে দোষ হয় কর্মরত জুনিয়র ডাক্তার বা হাউস স্টাফদের। সরকারী ব্যবস্থার ফাঁক চোখে পড়ে না জনতার। শোকের প্রাথমিক কোপ গিয়ে পড়ে ডাক্তার ও নার্সদের ওপর। রাজুদা ওদের হাসপাতালে বউকে গাইনি ডিপার্ট্মেন্টে দেখায়। এ মাসে চেক আপ করানোর কথা ছিল। বোধহয় অপারেট করতে হবে। কিন্তু এই ডামাডোলে সেসব মুলতুবী রয়েছে আপাততঃ। আনন্দ রাজুদার বিরক্তিটা ধরতে পারে। আনন্দ বেগতিক দেখে আজকের মতো বই খোঁজা বন্ধ করে উদাস চোখে রাস্তা দিয়ে টং টং করতে করতে চলে যাওয়া ট্রামের গতিপথের দিকে তাকিয়ে থাকে। রাজুদার কথার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা বৃথা। এখন এরা এই সাময়িক অসুবিধাটাতেই আটকে আছে। এই আন্দোলনের বৃহত্তর সুবিধাটুকু সাধারণ মানুষের কাছে এখন অদরকারী। এক জন অন্য খদ্দের আসতে রাজুদা ব্যস্ত হয়ে পড়ল। আনন্দর সুবিধাই হল। আনন্দ ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ে ফুটপাত ধরে হাঁটা লাগাল। বর্ষার পরে পরে বলে ফুটপাতের গাছগুলোর রুগ্ন দশা কিছুটা কেটেছে। হাঁটতে হাঁটতে ভাবতে থাকে আনন্দ। এ বছরের সুরু থেকেই লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছে ইন্টার্ন আর হাউস স্টাফরা। মেডিক্যাল কলেজগুলোর হাউস স্টাফ- ইন্টার্ন অ্যাসোসিয়েশন তথা জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন এক সাথে মিলে একটা নতুন বডি ফর্ম করেছে। নাম হয়েছে অল বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফেডারেশন সংক্ষেপে ABJDF। এ বছরটা, এই ১৯৮৩ সালটা কেন জানি না আনন্দ-র মনে হয়েছে ভারতের ডাক্তারদের কাছে একটা ঐতিহাসিক বছর হয়ে থাকবে। সেই মার্চ মাস থেকে উত্তাল হয়েছে মেডিক্যাল কলেজগুলো। ওদের দাবী দাওয়া নিয়ে বার বার সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে কিন্তু সি পি আই এম সরকার প্রথমে এবিজেডিএফ এর অস্তিত্বই মানতে অস্বীকার করে। গত বছর সরকারের কাছে দাবীপত্র পেশ করে ওরা। তারপর পাব্লিক সার্ভিস কমিশনের চাকরি দেওয়া হয় নি বলে রিগ্রেট লেটার নিয়ে মিছিল করে জুনিয়র ডাক্তাররা, স্মারক লিপি পেশ করা হয় সরকারের কাছে। সরকার নীরব। তারপর ঘটল সেই মর্মান্তিক ঘটনা। লাগাতার চব্বিশ ঘন্টা ছুটিহীন ডিউটি করতে গিয়ে পরেশ চৌধুরী নামের এক জুনিয়র ডাক্তার মারা গেল। সরকার দায়িত্ব নিল না, কোনও ক্ষতিপূরণ দিতেও অস্বীকার করল। এবিজেডিএফ-এর দাবীগুলো কিন্তু শুধু নিজেদের স্বার্থে তৈরি নয়। জুনিয়র ডাক্তাররা হসপিটালে কাজ করতে গিয়ে দেখেছে সাধারণ মানুষকে কি চূড়ান্ত হয়রানির মুখে পড়তে হয়। প্রয়োজনীয় জীবনদায়ী ওষূধের সরবরাহ নেই, রক্ত নেই, পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থা ঠিক নেই। স্বাস্থ্যের অধিকার যে মৌলিক অধিকার সেটাই সরকার মেনে নিতে রাজি নয়। আনন্দ এসব দেখেছে শুনেছে। শুভব্রত, অভিজিৎদের মতো সিনিয়রদের দেখেছে এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে। ওরা এ বছর সদ্য ইন্টার্ন হয়েছে। আনন্দ এখনও মেডিক্যালের ছাত্র। কলেজের ক্যাম্পাসে এসে হঠাত করেই ওর মনে পড়ল আজ শুভদা একবার দেখা করতে বলেছিল। ইস ভুলেই মেরে দিয়েছিল। বইপত্তর দেখলে মাথার ঠিক থাকে না ওর। প্যারালাল আউটডোর সংক্রান্ত কোনও কাজ আছে হয়তো সেটা বুঝে নিতে হত। সাত দিন আগে কলেজের কর্মরত জুনিয়র ডাক্তাররা পূর্ণ কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে। ফলে আউটডোরের বেহাল অবস্থা। কিন্তু রুগীদের স্বার্থে নিজেদের উদ্যোগে ইমার্জেন্সি চালাচ্ছে আন্দোলনরত ডাক্তাররা। তার জন্যে ওষুধপত্রের লিস্ট বানানো জরুরী হয়ে পড়েছে। স্যারেরাও এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছেন। যত ফ্রি স্যাম্পেল ওষুধ আছে তাই দিয়েই কাজ চালানো হচ্ছে। পরিস্থিতি কোন দিকে যে গড়াবে বোঝা যাচ্ছে না। তবে মুখ্যমন্ত্রীর অনমনীয় মনোভাবের পরিচয় ওরা পেয়েছে। সত্যি! কি বিচিত্র এই গদির মহিমা! সর্ব হারার নেতা এখন আর সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে চিন্তিত নয়। তারা এই আন্দোলন দমন করার জন্য লাঠিচার্জ করতেও পিছপা নয়।
কলেজে পা দিয়েই আনন্দ বুঝল চারপাশ গরম হয়ে আছে। আজ নীল রতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ আর এস এস কে এম এ সুপারকে ঘেরাও করা হয়েছিল। দু’ জায়গাতেই পুলিশ ডাক্তারদের ওপরে নির্মমভাবে লাঠি চালায়। আহত হয়েছে অনেকে। অনেক জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুভরা ক্যান্টিনে বসে এসব নিয়েই আলোচনায় ব্যস্ত ছিল। আনন্দর আসাটা ওরা প্রথমে কেউ নজর করল না। ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি সুস্মিতাদি উত্তেজিত হয়ে কিছু একটা বলছে। সেদিকেই সবার মন। কিছুটা পরে শুভব্রত আনন্দকে দেখতে পেয়ে ইশারায় বসতে বলল। আনন্দ বুঝল সে বড্ড দেরি করে ফেলেছে। এখন বিকেল গড়িয়ে প্রায় সন্ধ্যা নামতে চলেছে। ওদের আলোচনা থেকে আনন্দ বুঝতে পারে আজ রাতে একটা বড় সড় কিছু হতে চলেছে। এমন কিছু যা এ শহর আগে কখনও প্রত্যক্ষ করে নি।
চলবে…