এই মূহুর্তে কোভিড অতিমারীর সেকেন্ড ওয়েভ এর মধ্যে আমরা রয়েছি। ICMR এর প্রোজেকশন অনুযায়ী আগামী ২০-২৫ দিন এই হারেই কোভিড বাড়বে এবং তা যদি হয় অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ হতে চলেছে। আমাদের রাজ্যের দৈনিক কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা গতকাল প্রায় ১২০০০। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে সবার মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা ও কম জনসমাগম সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি সরকার কে আরও অনেক দায়িত্ব পালন করতে হবে৷ আমাদের তরফ থেকে কিছু সুনির্দিষ্ট দাবি আমরা করছি। যা যথাযথ ভাবে পালন করলে কোভিড মোকাবিলায় অনেক খানি শক্ত জমির উপর আমরা দাঁড়াতে পারব।
১) স্বাস্থ্য ভবনের হেল্প লাইন নাম্বার যাতে ২৪ x ৭ কার্যকরী হয় এবং রোগী বা রোগীর পরিজন রা প্রতিটি ফোন কল যাতে প্রথম চেষ্টায় উত্তর পান এবং কোথায় ভর্তি হবেন তার ব্যবস্থা করতে হবে। ডেডিকেটেড টিম এর ব্যবস্থা করতে হবে যারা এই কাজ করবেন।
২) কেবল কোভিড পজিটিভ পেশেন্ট না কোভিড সাসপেক্ট অর্থাৎ SARI পেশেন্ট দের ভর্তির ব্যবস্থা/ কোথায় যাবেন তার ব্যবস্থা সরকারি হেল্পলাইন থেকে করতে হবে।
৩) প্রতিটি হাসপাতালের কোভিড উইং এ স্বাস্থ্যভবনের মাধ্যমে কোভিড রোগী ভর্তি হবেন। কিন্তু প্রতিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে অন্তত ১০% শয্যা রাখতে হবে যা ওই হাসপাতালের ইমারজেন্সি তে আসা কোভিড রোগীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। যাদের অন ডিউটি ডাক্তারেরা তার ক্লিনিক্যাল অবস্থা দেখে স্বাস্থ্যভবনের সাথে যোগাযোগ করে ভর্তি করতে পারবেন।
৪) প্রতিটি হাসপাতালে ডেডিকেটেড কোভিড + SARI ইমার্জেন্সি প্রয়োজন। যা জেনারেল ইমার্জেন্সি থেকে আলাদা আইসোলেটেড জায়গায় হবে। এবং সেখানে অন্তত ১০ টি অক্সিজেন সাপ্লাই আছে এমন শয্যা লাগবে যেখানে রোগী ভর্তি/ অন্য হাসপাতালে রেফারেল এর আগে প্রাথমিক অক্সিজেন টুকু পাবেন।
৫) প্রতিটি কোভিড রোগী কি অবস্থায় আছেন তা বাড়ির লোক প্রতিদিন যাতে যথাযথ ভাবে জানতে পারেন তার জন্য ডেডিকেটেড টিম ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে সরকারি অর্ডার আছে। তাকে অবিলম্বে কার্যকরী করতে হবে।
৫) রেফারেল ব্যবস্থা কে অত্যন্ত দ্রুত এবং কো অর্ডিনেটেড হতে হবে। যাতে রোগীদের কোনো হয়রানি না হয়।
৬) সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও তাদের পরিবারের চিকিৎসা সেই হাসপাতাল কে সুনিশ্চিত করতে হবে।
৭) প্রতিটি কোভিড টেস্টিং ফেসিলিটি তে RT-PCR কিট ও VTM এর সাপ্লাই বাড়াতে হবে।
৮) সমস্ত হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদ হাসপাতালের জায়গা ব্যবহার করে সেখানে জেনারেল কোভিড ওয়ার্ড বানাতে হবে।
৯) স্টেডিয়াম বা বিভিন্ন বড় বিল্ডিং কে সেফ হোম/ কোয়ারান্টাইন সেন্টার হিসাবে ব্যবহার করতে হবে।
১০) বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ গুলিতে মূলত খারাপ অবস্থায় থাকা রোগীদের চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করতে হবে। NRBM, HFNO, ভেন্টিলেটর এর সংখ্যা বাড়িয়ে CCU/ ITU/ HDU শয্যা প্রস্তুত রাখতে হবে।
১১) একই জায়গার ক্লান্ত স্বাস্থ্যকর্মী দের ক্রমাগত কোভিড চিকিৎসায় না ব্যবহার করে সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী (ডাক্তার, নার্স, সুইপার, গ্রুপ ডি স্টাফ) দের সেন্ট্রাল পুল বানিয়ে সমান ভাবে সবাইকে কাজ ভাগ করতে হবে। নাহলে রোগী পরিষেবা ব্যাহত হবে।
১১) রাজ্যের মজুত অক্সিজেন এর পরিমাণ বাড়াতে হবে। অক্সিজেন উৎপাদন বাড়াতে হবে। বে আইনি ভাবে অক্সিজেন মজুত করে রাখা কড়া ভাবে আটকাতে হবে।
১২) সমস্ত মানুষকে সরকারি উদ্যোগে বিনামূল্যে ভ্যাক্সিনেশন এর ব্যবস্থা করতে হবে।