র্যাগিং নিয়ে কয়েকটা মিথ বোধহয় এবার ভাঙ্গা দরকার।
মিথ এক) “আমাদের সময়েও একটু আধটু র্যাগিং হতো, ও কিছু নয়”। র্যাগিংকে ট্রিভিয়ালাইজ, করা, তাকে তুচ্ছ করা, খাটো করে দেখানোর এই চেষ্টাটা প্রতিহত করতে হবে। Ragging is ragging তার কোনো ছোট বড় হয় না।
মিথ দুই) “র্যাগিং ব্যাপারটা বেসিক্যালি খারাপ নয়, আতা কেলানে ছেলেমেয়েদের স্মার্ট বানানোর পেছনে এর অবদান থাকে।” – সর্বৈব মিথ্যা কথা, বাজে কথা, যুক্তিহীন নির্বোধের কথা। আমি যে কলেজে পড়েছি আর তার হোস্টেলে থেকেছি ছয় বছর সেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে এককালে র্যাগিং হত। আমাদের ভর্তি হওয়ার আগে থেকেই বন্ধ হয়ে গেছিল। তার ফলে আমাদের কোনো সহপাঠীর স্মার্ট হয়ে ওঠা আটকায় নি।
মিথ তিন) “যারা র্যাগিং করে তারাই পরবর্তীকালে দারুণ বন্ধু হয়ে যায়” – এটাও একটা মিথ। sadomasochist বিকৃত মানসিকতার লোকজনই এই মিথে বিশ্বাস রাখেন। র্যাগিংএর ট্রমা সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হচ্ছে এর সপক্ষে ভুরিভুরি প্রমাণ আছে।
মিথ চার) “র্যাগিং সম্পূর্ণ বন্ধ করা যায় না, একটু আধটু হবেই” – এটাও সম্পূর্ণ বাজে কথা। আমাদের কলেজই এককালে কুখ্যাত ছিল র্যাগিংএর জন্য। সেটা বন্ধ করা গিয়েছিল। কি ভাবে সেটা বলার জায়গায় নেই, কারণ আমাদের ব্যাচ সেটা করে নি। কিন্তু বন্ধ করা যায় যে সেটা প্রমাণিত।
এই মিথগুলি আসলে সযত্নে রচিত ও লালিত পালিত যাতে ওই জঘন্য কলোনিয়াল লিগাসির কুপ্রথাটির ন্যায্যতা প্রতিপাদন করা যায়। এর সাথে যুক্তরা ধরা পড়লেও যাতে শাস্তি ছাড়াই বা লঘু শাস্তি নিয়ে ছাড়া পেয়ে যায়। যাদবপুর সহ বহু কলেজে তাদের ছাত্রাবাসে, র্যাগিং চলছে, অনেকদিন ধরেই চলছে। এবার এই মর্মান্তিক ঘটনাটার পরে সবাই যেমন জেগে উঠেছেন, রেগে উঠেছেন, তাতে আশা করা যেতেই পারে যে এবার এই কুপ্রথাটা বোধহয় বন্ধ হবে। আমাদের খালি একটা কাজ করতে হবে। ঘটনাটা ভুলে গেলে চলবে না। রাগটা ধরে রাখতে হবে। প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে আর সঙ্গে প্রশাসকদের অকর্মণ্যতার জন্য, গাফিলতির জন্যও শাস্তি দিতে হবে। কেউ যেন পার পেয়ে না যায় ন্যাকা বোকা সেজে।
শুনেছিলাম অক্সফোর্ড অন্ত্যজ ছাত্রদের অভ্যর্থনা করার আনন্দই প্রথার জনক।
গোগোলবাবু বলছেন গ্রীসের সৈন্যদের মধ্যে এই প্রথা চালু ছিলো।
একটু বিস্তারে বললে খুশি হৈ।