বেশ মোটাসোটা চেহারার মিতা। খাওয়াদাওয়া মেপে খায়। নিয়মিত ব্যায়ামও করে। কিন্তু ওকে যে রোজ স্টেরয়েড খেতে হয়। তাই মুখটা ফুলে গেছে। কিন্তু আজ ও একটা ছোট মাপের হালকা গোলাপি জামা পরে বেরিয়েছে। কেউ কেউ আড়চোখে দেখছে। ওই চেহারায় ওই জামা কাপড়! তাতে মিতার কী! ও নিজের শরীরকে ভালো বাসতে শিখেছে।ও আজ প্রজাপতির মতো উড়ছে। কোনো চোখ ঝলকানি আলোর মধ্যে সাঁতারের পোশাক পরে হাঁটার থেকে এতে বেশি সাহস লাগে।
রিয়ার পিসিওডি আছে। গায়ের লোম বেশি। ঠোঁটের ওপর হালকা গোঁফের রেখা। চিবুকেও অল্পস্বল্প লোম আছে। আগে ওয়্যাক্সিং আর থ্রেডিং না করলে আয়নার সামনে দাঁড়াতেও বাজে লাগতো। কিছুতেই পছন্দমতো জামাকাপড় পরতে পারত না, সাজগোজ করতে পারতো। দামি লিপস্টিক কিনতো কিন্তু ঠোঁটে লাগালে যেন গোঁফ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠতো। তাই সেগুলো ঘরে পরে থেকেই ডেট এক্সপায়ার করে যেত। নিজের ওপর থেকে দিনদিন কনফিডেন্স হারিয়ে ফেলছিল। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে ডিপ্রেশনের ওষুধও খেতে হয়েছে কিছুদিন। কিন্তু আর না। কে বলেছে গায়ে লোম থাকতে নেই? ও যেমন তেমনই থাকবে। পার্লারে যাওয়া বন্ধ করে দিল। নিজের খুশিমতো সাজগোজ করতে লাগল। কোনো প্রশ্নের মেকি উত্তর নয়, ও সমাজকেই প্রশ্নের সামনে দাঁড় করলো।
মুনমুনের হাতে ও গালে শ্বেতী। চিকিৎসা চলছে। আগে যখনই বাড়ি থেকে বেরতো ওড়না দিয়ে মাথা ও মুখের যতটা সম্ভব ঢেকে নিত। ফুল হাতার সালোয়ার কামিজ পরত। মনে সব সময় জড়তা, কেউ যদি কিছু প্রশ্ন করে! অনেকে আছে যারা জেনেবুঝেও প্রশ্ন করে ‘কী হয়েছে’? আজ মুনমুন ছোট হাতার কুর্তি আর জিনস পরে বেরিয়েছে। কোনও স্কার্ফ পর্যন্ত নেয়নি। ও আজ থেকে নিজের মতো চলবে। এত আত্মবিশ্বাস ওই র্যাম্পে হাঁটা মেয়েদের মধ্যেও যেন অমিল।
বিশ্বসুন্দরী আবার কোনও খেতাব নাকি! লোকে বলবে তবেই আমি বিশ্বসুন্দরী হবো, এমন কথা কোথায় লেখা আছে? আমি চাইলেই আমি বিশ্বসুন্দরী। অসুন্দর বলে কিছু হয় না। কিছু লোক সেই সৌন্দর্য দেখতে পায় না। যে দেখতে পায় না, সেটা তার সমস্যা।
ছবি: Partha Bose