Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

ডেঙ্গু মহামারীর মোকাবিলায় সচেতন মানুষের অংশগ্রহণ জরুরী

images (22)
Dr. Subarna Goswami

Dr. Subarna Goswami

Health Administrator
My Other Posts
  • September 30, 2022
  • 8:13 am
  • No Comments

কোভিডের দগদগে ঘা পুরোটা এখনো শুকোয়নি, বরং তা আবার চাগাড় দিয়ে উঠছে। এর মধ্যেই রাজ্যে ডেঙ্গু মহামারীর আকার নিতে চলেছে। অতিমারীর অভিঘাত কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই অপ্রস্তুত ও অপ্রতুল স্বাস্থ্যব্যবস্থা এই ধকল নিতে পারবে না, যদি সচেতন মানুষ তার প্রতিরোধে ও মোকাবিলায় অংশগ্রহণ না করে।

ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাস-ঘটিত রোগ, যার প্রধান উপসর্গ জ্বর। দুই থেকে সাত দিনের আকস্মিক প্রবল জ্বরের সঙ্গে চোখের পিছনে ব্যথা, গাঁটে গাঁটে, হাড়ে বা পেশীতে ব্যথা, মাথাব্যথা, গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, লালচে র‍্যাশ – এই লক্ষণগুলির মধ্যে অন্ততঃ যে কোনো দুটি থাকলে তা সম্ভাব্য ডেঙ্গু বলে ধরতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে জ্বর অল্প, র‍্যাশ বেশী হতে পারে। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করা দরকার। র‍্যাপিড কিটে পরীক্ষা না করানোই ভালো, কারণ এর ফলাফল সম্পূর্ণ বিশ্বাসযোগ্য নয়। এলাইজা পদ্ধতিতে রক্তপরীক্ষা করাতে হবে সরকারী হাসপাতাল, পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা কোন স্বীকৃত ল্যাবরেটরি থেকে। জ্বর যদি পাঁচ দিনের বেশী না হয়, তাহলে এনএস-১ অ্যান্টিজেন টেস্ট, আর পাঁচদিন পেরিয়ে গেলে ম্যাক এলাইজা বা আইজিএম পরীক্ষা করাতে হবে। এই দুটো পরীক্ষা একই সঙ্গে করানো বা আইজিজি পরীক্ষা করানো অর্থহীন।

এদেশে ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটে ধরণ (সেরোটাইপ) পাওয়া যায়, তার মধ্যে যে কোন একটি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হবার পর শরীরে সেই সেরোটাইপের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরী হয়ে থেকে যায়, যা পরে সারাজীবনে কখনো ঐ একই সেরোটাইপ দ্বারা আক্রান্ত হলে তা প্রতিরোধ করে। কিন্তু পরের বার অন্য কোন সেরোটাইপের খপ্পরে পড়লে আগের অ্যান্টিবডির সুবাদে অ্যান্টিবডি-নির্ভর সংক্রমণ বৃদ্ধি হবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে রোগেল জটিলতা বাড়ে। এবছর দক্ষিণবঙ্গে ডেঙ্গু-৩ সেরোটাইপ সংক্রমণ বেশী হচ্ছে, অথচ কোভিডের আগে ডেঙ্গু-২ সংক্রমণ বেশী হত। বরং উত্তরবঙ্গে ডেঙ্গু-৩ আগে বেশী হত। ফলে দক্ষিণবঙ্গে যাদের আগে ডেঙ্গু হয়েছে, তাদের এবছর আবার ডেঙ্গু হলে বাড়াবাড়ি হবার সম্ভাবনা বেশী থাকবে।

ডেঙ্গুর কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধ বা টীকা নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি আপনা থেকেই সেরে যায়, বিশেষতঃ জীবনে প্রথমবার ডেঙ্গু হলে। তবে জ্বরের সঙ্গে পেটে ব্যথা, বারবার বমি, বুকের ভিতর বা পেটে জল জমার লক্ষণ, মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ, রক্তবমি বা রক্ত পায়খানা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা, অস্থির অস্থির ভাব, দ্রুতগতিতে শ্বাসপ্রশ্বাস, সারাদিনে মূত্রের পরিমাণ হ্রাস, যকৃতের আকার বৃদ্ধি – এগুলো মারাত্মক ডেঙ্গুর বিপদ লক্ষণ। ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় রক্তে প্যাকড্ সেল ভল্যূম (পিসিভি) বাড়লে এবং প্লেটলেট বা অনুচক্রিকার সংখ্যা দ্রুত কমতে থাকলেও বিপদের আশঙ্কা। প্রবল ডেঙ্গুতে রক্তনালী থেকে প্লাজমা চুঁয়ে বেরিয়ে আসে, ফলে বুকে-পেটে জল জমে শ্বাসকষ্ট, শরীরের নানা জায়গায় সাংঘাতিক রক্তপাত ছাড়াও হৃৎপিন্ড, বৃক্ক বা শরীরের অন্যান্য যন্ত্র বিগড়েও যেতে পারে।

ডেঙ্গু সংক্রমণের ফলে প্রথমদিকে শরীরের কোষের ভিতর থেকে তরল পদার্থ কোষের বাইরে বেরিয়ে যায়, ফলে সেসময় বেশী মাত্রায় স্যালাইন দিতে হয় রোগীকে। আবার দু’তিন দিন পরে আপনা থেকেই ঐ বেরিয়ে আসা তরল পদার্থ কোষের ভিতরে ঢুকতে শুরু করে। তখন স্যালাইনের মাত্রা না কমালে শরীরে তরল বেশী হয়ে গিয়ে হৃদযন্ত্রের বোঝা বাড়ায়। ফলে বিপদ হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট মাপে স্যালাইনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ জরুরী। অল্প কিছু ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ হতে পারে। অনেক সময় রক্তের অনুচক্রিকাগুলো (প্লেটলেট) কার্যক্ষমতা হারিয়ে একসাথে দলা পাকিয়ে যায়। ফলে গুনতিতে কম পড়ে। যন্ত্রে রক্তপরীক্ষার সময় এই দলা পাকানো অনুচক্রিকাকে যন্ত্র চিনতে পারেনা বলে সংখ্যা আরো কম দেখায়। কিন্তু টেকনিশিয়ান রক্তের নমুনা অণুবীক্ষণের তলায় রেখে গুনে দেখলে অতটা কম দেখায় না। সেক্ষেত্রে অনুচক্রিকা রক্তের ডেসিলিটার প্রতি দশ হাজারের নীচে নামলে তবেই বাইরে থেকে শরীরে অনুচক্রিকা প্রবেশ করাতে হয়। এমনিতে ডেঙ্গু সেরে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কার্যক্ষমতা হারানো অনুচক্রিকাগুলো ফের কার্যক্ষমতা ফিরে পায়, দলা পাকানো অবস্থা থেকে পৃথক হয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। ফলে গুনতিতে আবার বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে।

ডেঙ্গু ধরা পড়লে রোগীকে পরিপূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে, প্রচুর জল ও অন্যান্য তরল খাদ্য খেতে হবে। প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনও জ্বরের ওষুধ চলবে না। রক্তচাপ রোজ মাপতে হবে, তা কমছে কিনা দেখতে হবে। অন্য বিপদ লক্ষণগুলো দেখা দিচ্ছে কিনা খেয়াল রাখতে হবে, রক্তের হিমাটোক্রিট বা পিসিভি তুলনামূলকভাবে বাড়ছে কি না নজর রাখতে হবে।

ঈডিস মশা ডেঙ্গু রোগীর রক্ত পান করার পর তার শরীরে এই ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি হয় ও তা মশার লালাগ্রন্থিতে চলে যায়। এর সপ্তাখানেক পর সংক্রামিত মশা সুস্থ লোককে কামড়ালে তার ডেঙ্গু হতে পারে। ডেঙ্গুর মশা দিনের আলোয় রক্তপান করে, বিশেষতঃ ভোরে‌ ও সন্ধ্যায়। সেসময় মানুষ জেগে থাকে ও নড়াচড়া করে। ফলে একটা স্ত্রী ঈডিশ মশাকে একবার পেটপুরে রক্তপান করবার জন্য ৫-৬ জন মানুষকে কামড়াতে হয়। মশাটির লালাগ্রন্থিতে যদি ডেঙ্গু ভাইরাস থাকে, তবে একবার উদরপুর্তি করতে গিয়ে সে অন্ততঃ ৫-৬ জনকে সংক্রমিত করে। ফলে ডেঙ্গু অত্যন্ত দ্রুততায় ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় একই পরিবারের অনেকে একসাথে সংক্রমিত হয়। রোগীর জ্বর যে ক’দিন থাকবে, সেই ক’দিন ও তারপরের দু’দিন দিনে ও রাতে তাকে মশারির মধ্যে রাখতে হবে যাতে মশা রোগীকে কামড়াতে না পারে। তাহলেই রোগ ছড়াবার সম্ভাবনা কমবে। জ্বর সেরে যাবার দিন দুয়েক পর মানুষের রক্তে আর ডেঙ্গু ভাইরাস থাকে না।

ঈডিশ বা গায়ে সাদা-কালো ডোরাকাটা বাঘ-মশা ডিম পাড়ে ঘরের ভিতরে এবং ঘরের বাইরে আশপাশে কোনও ছোট-বড় পাত্রে পরিষ্কার জমা জলে। ডিম পাড়ে কলসিতে, বালতিতে, মগে, জারিকেনে, ব্যাটারির খাপে, এয়ারকন্ডিশনার বা রেফ্রিজারেটরের ট্রে-তে, অব্যবহৃত টায়ারে, ড্রামে, বাগানে বা চাতালে কোথাও অল্পস্বল্প জল জমলে, খানাখন্দে, চৌবাচ্চায়, ফুলদানিতে বা ফুলের টবে, ইঁট ভেজানো জলে, ছাদে জমা জলে, আধমালা নারকেলের খোলে, কচুজাতীয় গাছের পাতার ডান্ডিতে, বাঁশঝাড়ে কাটা-বাঁশের গোঁড়ার গর্তে বা অন্য গাছের কোটরে জমা জলে। ঈডিশের ডিম শুকনো পরিবেশেও মাসের পর মাস বেঁচে থাকতে পারে। পরে জল পেলে ডিম ফুটে লার্ভা হয়, আর এই লার্ভা থেকে পিউপা হয়ে পূর্ণাঙ্গ মশা হতে প্রায় ১১ দিন সময় লাগে। তাই প্রতি সাতদিনে একবার বাড়ির ভিতর ও আশপাশের মশার ডিম পাড়ার সম্ভাব্য সমস্ত জমা জল ফেলে দিয়ে পাত্রগুলোকে হয় নষ্ট করে দিলে বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য পাত্র ঘষেমেজে পুনরায় ব্যবহার করলে মশার সংখ্যা বিপদসীমার নীচে নেমে আসবে। পরিত্যক্ত টায়ার, কচুগাছের পাতার ডান্ডি ইত্যাদির নীচের অংশে পেরেক ফুটিয়ে ফুটো করে দিতে হবে, যাতে জল জমে না থাকে। গাছে বাঁধা বা বেদীতে রাখা জলভরা মঙ্গলঘট থাকলে সেগুলির মুখ গামছা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে, পাতকুয়োর উপর মশারির ঢাকনা দিয়ে রাখতে হবে, যাতে মশা সেখানে ঢুকে ডিম পাড়তে না পারে। পরিত্যক্ত বাড়ি, নির্মীয়মান বাড়ি, ধর্মস্থান, অফিস-কাছাড়ি, ফল ও সব্জীবাজার এলাকা, বুজে যাওয়া নালা, জঞ্জালের স্তুপ – এইসব জায়গায় অনেকসময় জল জমে থাকে সবার অগোচরে। চা-বাগান অঞ্চলে নিরাপদ পানীয় জলের সরবরাহ অপ্রতুল হওয়ায় মানুষের প্রবণতা থাকে বড় বড় ড্রামে জল সঞ্চয় করে রাখার, সেগুলি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। শহরে বহুতল আবাসনে অনেক ফ্ল্যাট তালাবন্ধ হয়ে পড়ে থাকে দীর্ঘকাল, তার ভিতরে কমোড, প্যান, ফ্রিজ ও এসি-র ট্রে, ফুলদানীতে জল‌জমে থাকে। এক্ষেত্রে আবাসন কমিটির কাছে ডুপ্লিকেট চাবি থাকা বাঞ্ছনীয়, যাতে নিয়মিত জল ফেলে বা ফ্ল্যাশ করে দেওয়া যায়। স্ত্রী ঈডিশ মশার শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস থাকলে সে ডিম পাড়ার সময় ডিমের মধ্যেও ভাইরাস রেখে যায়। ফলে ঐ ডিম ফুটে নতুন মশা জন্মালে তার শরীরেও ভাইরাস চলে আসে। তাই জল ফেলার সঙ্গে সঙ্গে পাত্রটিকে ঘষেমেজে ডিম-মুক্ত করা জরুরী।

এর পরের ধাপ হল যেখানে জমা জল ফেলা যাচ্ছে না, অর্থাৎ চৌবাচ্চা, নর্দমা, পরিত্যক্ত কুয়ো ইত্যাদিতে হেক্টর প্রতি দু’শো লিটার লার্ভানাশক তেল ছড়ানো। বিকল্প হিসেবে পোড়া মোবিল বা ডিজেলও কাজে দেয়। সেক্ষেত্রে প্রতি দশ স্কোয়্যার ফিট জলের উপরিতল পিছু এক লিটার হিসেবে তেল ঢালতে হবে। এছাড়া লার্ভা মারার কীটনাশক অনেক আছে, যার মধ্যে অ্যাবেট জাতীয় কীটনাশক খুবই কার্যকরী – টেমিফস নামে বাজারে পাওয়া যায়, তরল ও বালি-দানা দুরকমই পাওয়া যায় – ৫০ লিটার দীর্ঘ নর্দমার জন্য এক লিটার তরল যথেষ্ট। দামও খুব বেশী নয়, তবে প্রোডাক্টগুলি সেন্ট্রাল ইনসেক্টিসাইড্ বোর্ড অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন কমিটি দ্বারা স্বীকৃত সংস্থা থেকে কিনতে হবে।

এবছর বর্ষা দেরীতে নেমেছে। তার উপর শারদ উৎসব এগিয়ে এসেছে। উৎসবের দিনগুলোতে মানুষের যাতায়াত বেশী হয়, ফলে এক অঞ্চল‌ থেকে আরেক অঞ্চলে ডেঙ্গু ছড়ায়। এই সময় নিকাশী ও জঞ্জাল পরিস্কারের কাজে কিছুটা ঢিলে পড়ে। অন্যদিকে নানারকম খাবারের প্যাকেট, চায়ের ভাঁড়, ঘুগনীর ঠোঙা, আইসক্রীমের কাপ চারদিকে ছড়িয়ে থাকে। মন্ডপ ও রাস্তার ব্যারিকেড খুলে নেবার পর অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত থেকে যায়। এসময় বৃষ্টি হলেই ঈডিশ মশার পোয়াবারো।

প্রাপ্তবয়স্ক ঈডিস মশা মারতে পতঙ্গনাশক রাসায়নিক মেশানো উত্তপ্ত ধোঁয়া ছড়ানো হয় বাড়ির আশেপাশে। আগে টেকনিক্যাল ম্যালাথিয়ন নামক রাসায়নিক ব্যবহার করা হত, এখন তার বিরুদ্ধে মশার প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে। ফলে এখন ৫% সাইফেনোথ্রিন ব্যবহার করা হয়। এর জন্য ফগিং মেশিন লাগে, আর লাগে পেট্রোল ও ডিজেল। সকাল ও সন্ধ্যায় ঈডিস মশা বেশী সক্রিয় থাকে বলে ঐ দুটি সময় ফগিং করলে সবচেয়ে ভালো ফল মেলে। সমস্ত বাড়ির দরজা-জানালা খুলে রেখে বাড়ির আশেপাশে ফগিং করতে হয়। প্রতিটা বাড়ির ভিতরে অন্ধকার কোণা থেকে ফগিং শুরু করে বাইরের দিকে এলে আরো ভালো হয়। বাড়িতে দিনে ও রাতে দীর্ঘস্থায়ী পতঙ্গনাশক রাসায়নিকে চোবানো মশারী ব্যবহার করা জরুরী। বাইরে বেরোলে ফুলহাতা জামা ও ফুলপ্যান্ট, অর্থাৎ শরীরের অধিকাংশ ঢাকা থাকে এমন পোষাক পড়তে হবে। সিনেমা হল বা কোন বদ্ধ ঘরে গেলে হাতে-পায়ে-গলায় মশা-বিকর্ষক ক্রীম মাখা যেতে পারে।

ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অপরিকল্পিত দ্রুত নগরায়ন ও অ-পরিবেশবান্ধব মুনাফাসর্বস্ব বাণিজ্যের পাশাপাশি যেখানেই নিকাশী ব্যবস্থা বেহাল, পঞ্চায়েত ও পুর-পরিষেবা দুর্বল, সেখানেই মশার বাড়বাড়ন্তের পরিবেশ অনুকূল। ফলে ডেঙ্গু মহামারীর আকার নিচ্ছে, ম্যালেরিয়াও উর্ধ্বমুখী। রাজ্যে শুধুমাত্র গত সপ্তাহেই আট হাজারেরও বেশী ডেঙ্গু সংক্রমণ ধরা পড়েছে, চলতি সপ্তাহে তা আরো বাড়তে চলেছে। আজকের দিনে দু’হাজারের বেশী ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি। উৎসবের সপ্তাহে দৈনিক সংক্রমণ দু’হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে, যদি রক্তপরীক্ষার হার কমে না যায়। সবচেয়ে বেশী সংক্রমণ কোলকাতা, হাওড়া, উঃ ২৪ পরগণা, হুগলী, মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলায়। দঃ ২৪ পরগণা, নদীয়া, বাঁকুড়া, কালিম্পং ও আলিপুরদুয়ারেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। বীরভূম, পুরুলিয়া, দুই বর্ধমান, উঃ দিনাজপুরেও সংক্রমণের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী। পাশাপাশি ম্যালেরিয়া ও কোভিড সংক্রমণও রাজ্যে ক্রমবর্ধমান। গত একমাসে রাজ্যে দৈনিক কোভিড সংক্রমণ দ্বিগুণ বেড়েছে। কোভিড রোগীর একই সাথে ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গু সংক্রমণ ঘটলে জটিলতার চূড়ান্ত অবস্থা হয় এবং তা হচ্ছেও কোথাও কোথাও।

১৬ থেকে ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা ও ৬০ শতাংশের বেশী আপেক্ষিক আর্দ্রতা ঈডিশের ডিম পাড়ার আদর্শ অনুকূল আবহাওয়া। প্রশাসনিক উদাসীনতা এবং সরকারী মশানিধন কর্মসূচীতে মানুষের দুর্বল অংশগ্রহণ পরিস্থিতিকে আরো মশা-সহায়ক করে তোলে। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত সচেতন নাগরিক ও সংগঠনগুলোকে বাড়তি দায়িত্ব পালন করতেই হবে। ঠিক যেমনভাবে কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় স্বেচ্ছাসেবায় নেমেছিল যুব সম্প্রদায়। মশা নিয়ন্ত্রণ, লার্ভানিধন কর্মসূচীর পাশাপাশি বাড়ি-বাড়ি প্রচার, জ্বরের রোগীর সন্ধান, দু’দিনের বেশী জ্বর হলেই নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে রক্তপরীক্ষার ব্যবস্থা, প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করা, চিকিৎসকদের সাহায্য নিয়ে গ্রামীণ এলাকায় ও শহরের বস্তি এলাকায় ফিভার ক্যাম্প, ফিভার ক্লিনিক আয়োজন করাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রতিটি পুরসভার প্রতি ওয়ার্ডে ও প্রতি পঞ্চায়েতে মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্দিষ্ট কর্মীদল রয়েছেন। তাঁরা ঠিকমত কাজ করছেন কিনা নজরদারী করতে হবে। সপ্তায় একটি নির্দিষ্ট দিনে গণ সাফাই অভিযান করতে হবে। পুর-এলাকায় ও ব্লকস্তরে রক্তপরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানোর দাবীতে, হাসপাতালে ফিভার ওয়ার্ড চালুর দাবীতে নাগরিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। উৎসবে সামিল মানুষ যাতে মাস্ক পড়েন, দূরত্ববিধি মানেন, মশার বংশবৃদ্ধির সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি না করেন, তার জন্য মন্ডপগুলোতে অবিরাম প্রচার করতে হবে। সামাজিক মাধ্যমকেও ব্যবহার করতে হবে প্রচার ও দ্রুত যোগাযোগের জন্য।

বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গুর সাম্প্রতিক বাড়বাড়ন্তের কারণগুলির মধ্যে অন্যতম হ’ল অপরিকল্পিত দ্রুত নগরায়ন, যত্রতত্র কৃত্রিম জলধারণের পাত্র ফেলে রাখা, প্লাস্টিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, নিকাশী ব্যবস্থার অপ্রতুলতার দরুন জল জমে থাকা, অপর্যাপ্ত পুর ও পঞ্চায়েত পরিষেবার ফলে সময়মত জঞ্জাল অপসারণ না হওয়া। ফলে ডেঙ্গু মোকাবিলায় একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কার্যকরী আন্তঃরাষ্ট্রীয় নীতিগ্রহণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ, দ্রুত রোগনির্ণয় ও উপযুক্ত চিকিৎসার সরকারী ব্যবস্থাপনার সম্প্রসারণ, বিজ্ঞানসম্মত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্থানীয়স্তরে গণ-উদ্যোগ এবং যথাযথ পুর ও পঞ্চায়েত পরিষেবা, নিশ্চিত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন জরুরী।

PrevPreviousMostbet Türkiye Çevrimiçi Kumarhane Mostbet Casin
Nextআকাশ-কুসুমNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

শিষ্য তথা ছাত্রদের শিক্ষারম্ভ ও শিক্ষাদান – চরক- ও সুশ্রুত-সংহিতা (২য় ভাগ)

June 12, 2025 No Comments

 (সূত্রের জন্য পূর্ববর্তী অংশের লিংক – https://thedoctorsdialogue.com/indoctrination-and-teaching-of-medical-students-in-charaka-and-susutra-samhita/) শিক্ষালাভের পরে চিকিৎসক হিসেবে আত্মপ্রকাশ আগের অধ্যায় শেষ করেছিলাম এই বলে – “উপনয়ন এবং শিক্ষালাভ করার পরে ছাত্ররা/শিষ্যরা

এই বঞ্চনার দিন পার হলেই পাবে জনসমুদ্রের ঠিকানা

June 12, 2025 No Comments

আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের পাশবিক হত্যার পর কেটে গেল দশটি মাস। দুর্নীতি ষড়যন্ত্র পূর্বপরিকল্পিত ধর্ষণ ও হত্যা- কোথাও সন্দেহ বা অস্পষ্টতার জায়গা নেই।

ঊর্মিমুখর: ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

June 12, 2025 No Comments

আচার্য শীলভদ্র ত্বরাহীন শান্তকণ্ঠে কহিতেছিলেন –“ইহা সত্য যে সমগ্র উত্তরাপথে পাশুপত ধর্মই আদি শৈবধর্ম। এই সনাতন পাশুপত ধর্মের ধ্যান ও কল্পনার মধ্যেই হিন্দুধর্মের শ্রেষ্ঠ বিকাশ

অভয়া স্মরণে

June 11, 2025 No Comments

তবু লড়ে যায় ওরা! তবু লড়ে যায় ওরা! দশ মাস হল। প্রায় তিনশত দিন। বিচারের আশা,অতি ক্ষীণ তবু লড়ে যায় ওরা! বল এমন করে কি

কাউকে অবসাদগ্রস্ত মনে হলে তাঁর পাশে থাকুন – তাঁর একাকিত্ব ও হতাশা দূর করুন – কিন্তু অবশ্যই তাঁকে ডাক্তার দেখাতে বলুন

June 11, 2025 No Comments

কোনও আত্মহত্যার খবর এলেই ফেসবুকে একধরনের বিকৃত সহমর্মিতাবোধের বন্যা বয়ে যায়। বিশেষত, আত্মহত্যার যদি কোনও রগরগে কারণ (পরকিয়া প্রেম ইত্যাদি) খুঁজে না পাওয়া যায়, তাহলে

সাম্প্রতিক পোস্ট

শিষ্য তথা ছাত্রদের শিক্ষারম্ভ ও শিক্ষাদান – চরক- ও সুশ্রুত-সংহিতা (২য় ভাগ)

Dr. Jayanta Bhattacharya June 12, 2025

এই বঞ্চনার দিন পার হলেই পাবে জনসমুদ্রের ঠিকানা

Gopa Mukherjee June 12, 2025

ঊর্মিমুখর: ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

Dr. Sukanya Bandopadhyay June 12, 2025

অভয়া স্মরণে

Dr. Asfakulla Naiya June 11, 2025

কাউকে অবসাদগ্রস্ত মনে হলে তাঁর পাশে থাকুন – তাঁর একাকিত্ব ও হতাশা দূর করুন – কিন্তু অবশ্যই তাঁকে ডাক্তার দেখাতে বলুন

Dr. Bishan Basu June 11, 2025

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

559578
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]