কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে যখন মেডিকাল অফিসার হিসেবে কাজ করতাম তখন অন্য রাজ্যের নার্সিং স্টাফ নিয়ে সাধারণ মানুষের তাচ্ছিল্য দেখেছি। দু’চারটে রোগী র সাথে একটু বন্ধুত্ব হলে দেখেছি যে তারা আমাকে বেশ একটু মনের কথা বলা যায় ভেবে বলেছে ‘আরে এই মালায়লি, চিঙ্কি গুলো কোথা থেকে আসে বলুন তো। ইডিয়ট সব।’
প্রতিবাদ করতাম। কারণ কত যত্ন নিয়ে ভোর থেকে ব্যাক কেয়ার দেওয়া, ওষুধ দেওয়া, খাবারের তত্ত্বাবধান করা সবকিছুই করতো ব্রাদার আর সিস্টাররা। কতদিন এমন হয়েছে ইনটিউবেশন করতে পারছি না, Bougie ব্যবহার হাতে ধরে সিনিয়র নার্স শিখিয়ে দিয়েছে। ভিন রাজ্যে ভিন ভাষার মানুষের সেবা করতে ওরা নির্ভয়ে চলে আসতো। খাবারের অসুবিধা, ভাষার অসুবিধা কাজ করে ঢেকে দিতো।
নার্সরা অনেকেই ব্যথিত হয়ে রাজ্য ছেড়ে গেছে। সংখ্যাটা একটা নির্দিষ্ট সময়ে হয়তো কম। দু বছর কাজ করে অনেককে দুবাই চলে যেতে দেখেছি। কেউ কেউ দেশে ফিরে গেছে। কেন চলে যাচ্ছে জানতে চাইলে বলেছে নিজের ব্যাবসা করবো। তোমাদের শহরে থাকবো না। ম্যানেজমেন্ট জানতো আবার কাউকে পাবে। বুঝতো না একজন অভিজ্ঞ স্টাফ গেলে আরেকজন অভিজ্ঞ স্টাফ পাওয়া কত কঠিন।
বাঙালী হয়ে ভয়ানক উন্নাসিকতা আমাদের। তার ফল অজস্র। আজ ছেড়ে যাওয়া নার্সের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বহুদিনের অসুখ। আজ প্রকাশ পেয়েছে। করোনা অনেক শাক দিয়ে মাছ ঢাকা গল্প প্রকাশ করে দিচ্ছে।
করোনা খারাপ। করোনা কিছুটা ভালোও।