কোন নির্দিষ্ট ঘটনার জন্য নয়, বরং আইনের চোখে পুরো বিষয়টি দেখা যাক।
পনের ষোল বছর আগে পড়েছিলাম পারিখ-এর ফরেনসিক মেডিসিন।
আর একজন প্রবাদপ্রতিম ফরেনসিক এক্সপার্ট ডাঃ এ কে গুপ্ত স্যারকে পেয়েছিলাম হাতের সামনে!
সেখান থেকেই বেসিক জিনিস গুলো ক্লিয়ার করার চেষ্টা করছি।
সাম্প্রতিক কোন পরিবর্তন হয়ে থাকলে, কেউ বলবেন।
******
* Death Certificate-এ cause of death আর mode of death – এই দুটো বিষয় পুরোপুরি আলাদা।
ধরা যাক, কাউকে বিষ প্রয়োগ করা হলো।
সেই বিষ তার হৃৎপিণ্ডের ওপর কাজ করল এবং মৃত্যু ঘটালো।
তাহলে cause of death হয় পয়জনিং, mode of deathহয় হৃৎপিণ্ডের বন্ধ হয়ে যাওয়া।
রক্তপাতের পরে শক এ চলে গেলে, রক্তপাত হবে মৃত্যু র কারণ!
* এক্ষেত্রে বিষক্রিয়ার প্রমাণ তৎক্ষণাৎ জানা না থাকুক বা নাই থাকুক, বা হৃৎপিণ্ড বন্ধ হবার কারণ জানা থাকুক নাই থাকুক, লিখতে হবে pending investigation !!!
এবং বডি পাঠাতে হবে পোস্ট মর্টেম করতে!!
এখানে কারো (সে যত বড় বোদ্ধাই হোক বা যতই আপনজন হোক) কোন ব্যক্তিগত মতামতের সামান্যতম দাম নেই!
* বহু দিন পিজি হাসপাতালের এমার্জেন্সিতে থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি – সিনিয়ররা যেটা করতে বলতেন-
Brought dead নিয়ে এলে ডাক্তারের একমাত্র কাজ ডেথ কনফার্ম করে পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেওয়া! বডি পোস্ট মর্টেম-এ পাঠানোর ব্যবস্থা করা!
কারো আপত্তিই গ্রহণযোগ্য নয়!!
কেউ জোর করে বডি নিয়ে যেতে চাইলেও পুলিশকে জানাতে দেখেছি!!!
* ডেথ কনফার্ম করা এবং ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া চিকিৎসক আলাদা হতেই পারে। সেক্ষেত্রে যিনি ডেথ সার্টিফিকেট লিখবেন, তিনি জেনে নেবেন ঠিক কখন কিভাবে কী কী দেখে ডেথ কনফার্ম করা হয়েছে।
সেই সময়ই লিখবেন!
হাসপাতালে ভর্তি রোগীর ক্ষেত্রেও এটাই করা হত।
* কোন ডাক্তার ডিসি না দিয়ে পোস্ট মর্টেম করাতে বললে, সেটাই করাতে হবে!!
* তারপর যদি কেউ পোস্ট মর্টেম ছাড়াই ডিসি লিখে দেয়,তাহলে সেই দায় পুরোপুরি তার!!
* Cardiorespiratory failure কোনভাবেই মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা যায় না!!
এটা যারা একবার হলেও ডিসি লিখেছে তারা জানে।
* ডেথ কনফার্ম করা আর ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান।
একটাতে ক্লিনিক্যাল এবং অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই একমাত্র বলা যায় যে কেউ মারা গেছে কিনা।
ফরেনসিক মেডিসিন এ বিষয়ে নির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে আইন অনুযায়ী।
নির্দিষ্ট সাইন আছে ডেথ কনফার্মেশন করার জন্য।
কিছু আপাতদৃষ্টিতে বোদ্ধা এমন মানুষকে বলতে চাই, হিট স্ট্রোক, ইলেকট্রোকিউশন ইত্যাদি এবং সবার পরিচিত কলেরা বলে একটি রোগ আছে, যে রোগে সাসপেন্ডেড অ্যানিমেশন বলে একটি জীবন মৃত্যুর মধ্যবর্তী অবস্থাও তৈরি হতে পারে!
এটি এমন অবস্থা, যেখান থেকে জীবন বা মৃত্যু – দুটোই সম্ভব।
না পড়ে থাকলে ফরেনসিক মেডিসিন বই খুলুন!
* কখনোই একজন মৃত ব্যক্তির জন্য দুটো ডেথ সার্টিফিকেট হতে পারে না!
* দু’জন আলাদা ডাক্তার একই ব্যক্তির নামে দুটো ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করতে পারে না!
এমনকি কেউ যদি একই ব্যক্ত র জন্য দুটো ডেথ সার্টিফিকেট জোগাড় করার চেষ্টাও করে, সেক্ষেত্রে কোন না কোন ফাউল প্লে আছে ধরে নিয়ে এগোতে হবে।
* মৃত্যুর সময় নির্ধারণ করার জন্য ফরেনসিক মেডিসিন এ নির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে। নির্দিষ্ট সাইন ঠিক কত সময় পর পাওয়া যাবে, সব লেখা আছে।
যেমন – কারো রাইগর মর্টিস শুরু হয়ে গেলে সেটার নির্দিষ্ট সময় লাগবে।
অ্যালগর মর্টিস এর জন্য নির্দিষ্ট সময় লাগবে!!
* চিকিৎসক কখন গিয়ে ডেডবডি দেখলেন, তার উপর ডিসি-তে মৃত্য র সময় লেখা নির্ভর করে না!!
* যে কোন নন-ইনস্টিটিউশনাল ডেথ সার্টিফিকেট লেখার নিয়ম আছে।
ব্যক্তিগত প্যাডে ডেথ সার্টিফিকেট লেখার নিয়ম আছে কিনা, বিশেষজ্ঞরা বলবেন!
* আইন অনুযায়ী মৃত্যু নিয়ে কাউকে বেনিফিট অফ ডাউট দেওয়ার কোন জায়গা নেই!
* মৃতের বয়স এক্ষেত্রে কোনভাবেই বিবেচ্য নয়!!!
* ডেথ কনফার্ম করা হয়েছে আগে, এমন ক্ষেত্রে ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখিত সময় কখনোই তার পরের হতে পারে না!!
যদি হয়, তাহলে বুঝতে হবে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া ডাক্তার কোন না কোন ভাবে প্রভাবিত হয়েছেন!
* কোন ডাক্তারকে যদি আগেই জানানো হয় যে একজন কেউ মারা গেছে, আপনি আসুন,
তাহলে তিনি ডেথ সার্টিফিকেটে কিছুতেই তার পরের সময় লিখতে পারেন না।
* যদি কোন ডাক্তারকে জানানো হয় যে একজন কেউ মরণাপন্ন, তাহলেও তিনি যখন ডেডবডি দেখবেন, তিনি লিখবেন- আমি এই সময়ে মৃতকে দেখে ডেথ কনফার্ম করেছি!
*****
নিচের কাগজটা
যারা খুব বেশি জানে, তাদের জন্য!!
যারা cause of death আর mode of death এর ব্যবধান বোঝে না, তাদের জন্য!!
যারা আচমকা বেসিক জ্ঞান বুদ্ধির ওপর মানবিকতার প্রলেপ লাগিয়ে অজুহাতকে হাতিয়ার করে ফেলে,তাদের জন্য!!
যারা সিকোয়েন্স অফ ইভেন্টস বিশ্লেষণ না করে ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইত’ বলে ন্যাকা কান্না করে তাদের জন্য!
যারা বোঝে না যে একটা ডেথ সার্টিফিকেট ই নয়, এমন একটা কাগজের ক্ষমতা ঠিক কতটা হতে পারে, তাদের জন্য!!











