গরমের দাবদাহের পরেই আসে বর্ষাকাল। এতদিনের অপেক্ষা শেষ হয়, সিজনের প্রথম দিনের বৃষ্টির ফোঁটা গায়ে পড়লে এক স্বর্গীয় অনুভুতি হয়, মনে হয় যেন তাপিত প্রাণ শীতল হয়।
কিন্তু এর সাথে আসে নানান রোগ-ভোগ। বর্ষা শুরু হলেই বায়ুর হিমিউডিটি বেড়ে যায়, যা ব্যাকটিরিয়া, ভাইরাস ও ফাঙ্গাসের বাড়-বাড়ন্তের অনুকুল পরিবেশ তৈরি করে। আসে মশা, মাছি- একা আসে না, আসে নানা রোগের জীবাণু বহন করে।
এই আলোচনায় আমরা এই বর্ষাকালে আমাদের বাংলায় বা ভারতে যে সকল রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে, তাই নিয়ে আলোচনা করব।
ঠান্ডা লাগা, সর্দি যদিও খুব বেশি হয়, তবুও আরও অনেক রোগ আছে, যা মারাত্মক ও প্রাণঘাতী হতে পারে। তেমন দশটি রোগের কথা সংক্ষেপে বলব। আজ আলোচনা করব ম্যালেরিয়া নিয়ে।
ম্যালেরিয়া
এটিও মশাবাহিত রোগ। তবে এনোফিলিস জাতীয় মশা ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্লাসমোডিয়ামকে বহন করে এবং মশার কামড়ের মাধ্যমে এই জীবানু আমাদের রক্তে ঢোকে।
শরীরে ঢুকে এরা আমাদের লোহিত রক্ত কনিকাকে আক্রমণ করে এবং ধ্বংশ করে। ফলে রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে। চার রকমের প্লাসমোডিয়াম ম্যালেরিয়া রোগ তৈরি করে। তার মধ্যে ভাইভাক্স সবচেয়ে বেশি, কিন্তু অতটা মারাত্মক নয়। আর ফ্যালসিপেরাম খুব মারাত্মক, পাহাড়ি বা জঙ্গল এলাকায় বেশি হয়।
উপসর্গঃ
প্রথম উপসর্গ জ্বর। বেশিরভাগ সময়েই জ্বর আসে কাপুঁনি দিয়ে। এই জ্বর ম্যালেরিয়ার জীবানুর উপর নির্ভর করে কখনও দুই তিন পরে, কখনও তিন দিন পরে আবার প্রতিদিনই আসতে পারে।
জ্বরের সাথে থাকে দুর্বলতা, মাথা ধরা, দ্রুত নিশ্বাস নেওয়া, ক্লান্তি ও অবসন্নতা।
কখনও কখনও পেটে ব্যাথা, বমি, গা হাতপায়ে ব্যথা হতে পারে।
যদি খারাপ ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়া আক্রমন করে, তবে মস্তিস্ক বা কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, মুত্রের সাতে রক্ত বের হতে পারে। অনেক রুগীর মৃত্যুও হতে পারে। তাই ম্যালেরিয়া সন্দেহ হলে দ্রুত চিকিৎসার দরকার।
রোগ নির্ণয়ঃ
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সহজেই রোগ নির্ণয় করা যায়। এন্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে আধ ঘন্টার মধ্যেই ম্যালেরিয়া রোগ ধরা যায়। তারপর চিকিৎসা করালে সম্পূর্ণ নিরাময় হয়।
তাই কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এলে সাথে সাথেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
(আগামী কালের আলোচনা চিকুনগুনিয়া নিয়ে…)