এনার নাম নার্গিস মুহাম্মদী। বয়স ৫৩ বছর। নিবাস ইরান। পেশায় চিকিৎসক। বর্তমান নিবাস তেহরানের কুখ্যাত ইবন কারাগার। সেখানে খুনে, ধর্ষকের মতন ভয়াবহ অপরাধীদের সঙ্গে তাঁর বসবাস এক ছোট্ট কুঠরীতে। প্রায় ৬ বছর ধরে বন্দী। দম বন্ধ করা পরিবেশ। আগে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন। বর্তমানে সাজা “কমে” ৩৫ বছর জেল ও তারপরও বেঁচে থাকলে ১৫৬ ঘা প্রকাশ্যে চাবুক।
অপরাধ? ভয়াবহ। প্রকাশ্যে তিনি হিজাব বা বোরখা না পরে বেরিয়েছিলেন। সেই অপরাধে চাবুক মারার শাস্তি। তার পর আরো ভয়াবহ অপরাধ, নারীদের হিজাব বোরখা বাধ্যতামূলক পরার আইন রদ, নারীর শিক্ষার অধিকার, পুরুষের সমান অধিকার দাবী। এছাড়া নিজের গর্ভের অধিকার। অর্থাৎ নারী নিজে না চাইলে গর্ভবতী হবেন না, তিনি জন্ম নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি ব্যবহার করবেন স্বেচ্ছায়। নারীরও অধিকার থাকবে তালাক দেবার। নারী চিকিৎসক না পেলে পুরুষ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করার অধিকার। ইত্যাদি। শুনে মনে হতেই পারে এসব আবার আন্দোলনের বিষয় নাকি? কিন্তু হ্যাঁ। ইরান, সিরিয়া, লিবিয়া, বর্তমান ইরাক এসব জায়গায় সময় থমকে গেছে শতাধিক বছর আগে।
উনি কিন্তু ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধ ঘোষণা করেন নি সলমন রুশদি বা তসলিমা নাসরিনের মতন। বরং উনি রীতিমতন ইসলাম ধর্ম পড়াশুনা করেই প্রমাণ করেছিলেন যে কোনো দাবীই ইসলাম বিরোধী নয়। অনেকটাই বিদ্যাসাগরের মতন। উনি নিজেও সাধারণত হিজাব পরেন বেশীরভাগ সময়, ধর্মও পালন করেন নিয়ম অনুযায়ী। কিন্তু কোনো রকম জোর জবরদস্তির বিরোধী। সবার আগে নারীর শিক্ষা, চাকরী এসবের অধিকার দাবী করেন।
এই ভয়ানক অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
এই মহান “অপরাধী” কে এই বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
আপনাকে কুর্নিশ জানাই। আপনার পাশে আছি। আপনারাও থাকুন। ওনার মুক্তি দাবী করুন।
Copied from Soumya Chakraborty