কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ টি বিভাগের নানা পরীক্ষা আছে অগাস্টের শেষ সপ্তাহে, যা তিন মাস আগে থেকে নির্ধারিত। কিন্তু সেই পরীক্ষাসূচি নিয়ে শাসক মহলে আপত্তি উঠেছে তীব্র।
কারণ ২৮ অগাষ্ট তৃণমূল ছাত্রপরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস (যদিও ওটা আসলে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ‘ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস’, এটাও চুরি!), তাই ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন পরীক্ষা হতেই পারে না। কী অপূর্ব আবদার!
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য শ্রীমতি শান্তা দত্তের কাছে ওইদিন পরীক্ষা স্থগিত করার আবেদন করা হয় প্রথমে। কাজ না হওয়ায় তাদের ওপরমহল সক্রিয় হয়েছে যথারীতি। উচ্চ শিক্ষা দফতরের কাছ থেকে চিঠি এসেছে উপাচার্যর কাছে যাতে ওই দিন পরীক্ষা না নেওয়া হয়। আর তৃণমূল ছাত্র নেতারা উপাচার্যের চেয়ারে বসার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শুরু করেছেন তার বিরুদ্ধে কার্যত হুমকিসুলভ বিষোদগার!
শাসকের আস্পর্ধা ভাবুন একবার। তারা কোনো নিয়ম নীতি, আইনকানুনের তোয়াক্কাই করে না। উপাচার্যের মতে ওইদিন কোনো সরকারি ছুটি নেই, কোনো রাজনৈতিক দলের জন্মদিন উপলক্ষে পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হবে কেন। তাহলে তো এখানে যত ছাত্র সংগঠন আছে বা অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে প্রত্যেকেই আবেদন করবে যাতে তাদের প্রতিষ্ঠা দিবসেও বিশ্ববিদ্যালয় কোনো পরীক্ষা না নেয় এবং আজ যদি উচ্চ শিক্ষা দফতরের চিঠির প্রেক্ষিতে ওই দিনের পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করা হয় তাহলে আগামীতে সবার আবেদনকেই মান্যতা দিতে হবে! এভাবে কি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না কি সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ চালানো?
শাসকের সঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠানের আধিকারিক সংঘাতে জড়ান না। বরং সর্বদাই চেষ্টা করেন কী করে শাসকের কৃপা দৃষ্টি তাঁর উপরে বর্ষিত হয়। কিন্তু উপাচার্য শান্তা দত্ত শিরদাঁড়া খাড়া করে অনড় রয়েছেন তাঁর সিদ্ধান্তে। যে ভাবে তিনি শাসকের ভ্রুকুটিকে উপেক্ষা করছেন তা শাসকের পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি আর অন্যায়ের পায়ে নুয়ে পড়া, কেন্নোর মত হামাগুড়ি দেওয়া, ভীরু, অমেরুদন্ডী জৈবিক মৃত্যুর আগে হাজারবার মরে যাওয়া সকল সরকারি আধিকারিকদের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
কুর্নিশ অজেয়, অন্য নাম শান্তা।










একদম সত্যি কথা, পল্লব