(সব চরিত্র কাল্পনিক। বাস্তবের সাথে মিল থাকলে তা সম্পূর্ণ ভাবে কাকতালীয়। )
১
রাজিয়া বসে আছে প্রিন্সিপালের ঘরের বাইরে। খুব স্পষ্টভাষী, সাহসী এবং সৎ মেয়ে। সঙ্গে আছে পৃথা। খানিকক্ষণ পরে স্যার ডেকে পাঠালেন। ঘরে ঢুকে রাজিয়া বলল- স্যার কিছু অভিযোগ ছিল।
বিনম্র গলাতেই বলল।
স্যার তৃতীয় বর্ষেরই এন টি’র প্রফেসর ছিলেন। স্যার হেঁসেই বললেন- আবার কী অভিযোগ তোমার?
– না স্যার হোয়াইট কোট সেরেমনিতে আমাদের মানে ইন্টার্নদের বসার জন্য কোনো আসন ছিল না। কিন্তু কনভোকেশনে কী হবে?
– আরে বাবা ওসব নিয়ে তোমার চিন্তা করার কোনো দরকার নেই। সব ব্যবস্থা আমরা করে দেব।
– কিন্তু স্যার আমাদের কনভোকেশনে চিফ গেস্ট হিসেবে কারা আসবেন? আমরা কি চিকিৎসা শাস্ত্রের কোনো দিকপালদের নিমন্ত্রণ করতে পারি? মানে ধরুন…
কথা শেষ করার আগেই স্যার বলে উঠলেন
-“আরে বাবা তুমি চিন্তা করো না। আমাদের কারেন্সি গ্রুপের চে়য়ারম্যান থাকবেন, উনি হবেন গেস্ট অব অনার, আমাদের এম এস স্যার থাকবেন, আমি তো থাকবই আর দেখি কাকে পাওয়া যায়।
বৃথা বাক্যব্যায় না করে রাজিয়ারা বেড়িয়ে যাচ্ছিল, কারণ কথা বলে লাভ নেই। স্যার আবার ডেকে বললেন – রাজিয়া বলছি তোমাদের কনভোকেশনের সার্টিফিকেট ডিজাইন করা হয়ে গেছে নিশ্চয়?
– হ্যাঁ স্যার
– তাহলে দেখাও
রাজিয়া মোবাইল বাড়িয়ে দিল। স্যার মনোযোগ দিয়ে দেখলেন।
– এমা! একি করেছ? আমাদের কারেন্সি গ্রুপের লোগো কই?
– স্যার এই ডিজাইনটা আমরা করেছি। কারেন্সি গ্রুপ করে দেয় নি। তাই এতে অস্ক্লেপিয়াসের দণ্ড দেওয়া ওই লোগো দেবার থেকে বেশি ভালো মনে হল।
– হ্যাঁ কিন্তু কলেজ তো কারেন্সি গ্রুপের।
– আমিও স্যার পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হয়েছি, ম্যানেজমেন্ট কোটায় না।
পৃথা ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল – না না স্যার হয়ে যাবে আজকের মধ্যেই।
ওরা বেরিয়ে যাবার পর স্যার ভাবলেন সত্যিই তো মেয়েটা ভুল কিছু বলেনি। কিন্তু তিনি নিজেকে শিখিয়েছেন যে ন্যায্য বাক্য সর্বদা বলতে নেই। বহুদিনের অভিজ্ঞতা আর বয়সের ভার তার শিরদাঁড়াতেও পড়েছে।
২.
কলেজের ও পি ডি তে বসে পেশেন্ট দেখছেন ড. ইন্দ্র রায়। একবার মোবাইলে নিজের ব্যাংক ব্যালান্স চেক করে নিলেন। এখনো মাইনে আসেনি। যদিও এটা নতুন কিছু নয়। গত তিন মাস ধরেই একই গল্প। এমন সময় কোর্স কো- অর্ডিনেটর সঞ্চিতা দি ঘরে ঢুকে বলল- স্যার, পরের ওয়ার্ড ক্লাসটা আপনি নিয়ে নেবেন? চ্যাটার্জী স্যার নেবেন না বললেন। বাচ্চারা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
– কেন আজতো আমার ক্লাস নেই। কমলেশ কি করছে? আর চ্যাটার্জী নেবে না কেন?
– না মানে চ্যাটার্জী স্যার বললেন যা টাকা পাই তাতে একটার বেশি দুটো ক্লাস নেব না। আর কমলেশ স্যারের কথাতো জানেন আপনি। উনিও ক্লাস নিতে চান না আর ছেলেরাও ওনার ক্লাস করতে চায় না।
– আচ্ছা ওদের বল মেল মেডিসিন বেড নম্বর ৫ এর হিস্ট্রি নিতে। ডা. ইন্দ্র রায়। ক্লাস নিতে পারলে উনি খুব খুশি হয়ে যান। ছাত্রদের বকা দেয়া আবার হাতে ধরে শেখানো সবই উনি করেন। পড়ানোর পর জানতে চাইলেন- কিরে তোরা তোদের অ্যাকাডেমিক ডিনকে বল আমার ক্লাস একটু কমাতে। গতকাল ক্লাস নিলাম, আজও পড়ালাম, কালকেও দেখছি নিউরো পড়াতে বলছে। মেডিসিনে এম ডি বলে কি আলুর মত সব তরকারিতে দিয়ে যাবি?
একজন ছাত্র বলল- কিন্তু ডিন স্যার মানে অভিষেক স্যার তো ছেড়ে দিয়েছেন
– সে কিরে ও আবার কেন ছাড়ল ওর বউ তো মাইক্রোবায়োলজি পড়াত, সেও কি ছেড়ে দিয়েছে?
– হ্যাঁ স্যার শুধু ওনারাই নন বায়োকেমের অরবিন্দ স্যারও ছেড়ে দিয়েছেন
– বলিস কি!! তাহলে পড়ায় কারা?
– স্যার ওই এনাটমিতে ৩ জন, বায়োকেমে -১ জন,ফিসিও – ২ জন, প্যাথলজি- ৫ জন। আর ফরেনসিকে ৪ মাস কোনো প্রফেসর ছিলেন না এখন শুনেছি একজন ম্যাডাম এসেছেন।
– থাম থাম, আর বলতে হবে না। কাল আমায় ডাকিস না। কমলেশের কাছে ক্লাস করে নিস।
– না না স্যার আপনি পড়ান , উনি কিছু পড়ান না।
পিছন থেকে কেউ আবার বলে উঠল- নিজে জানলে তো পড়াবে।
– এই চুপ। বলে চলে গেলেন ড. ইন্দ্র। মনে মনে বললেন এত পা চেটেও তো শেষ রক্ষা হল না। সেই অভিষেক আর অরবিন্দকে তো ছাড়তে হলোই।
লাঞ্চ করে চেম্বারে ফিরতেই দেখলেন একটা চিঠি এসেছে। ভাবলেন হয়ত স্যাক করা হয়েছে। নিজেই নিজেকে বললেন বাঁচলাম। কিন্তু চিঠি পড়তেই একি এতো শিব ঠাকুরের আপন দেশে আইন কানুন সর্বনেশে। চিঠিতে লেখা ইউনিটের ডাক্তারদের সপ্তাহে দুদিন ₹২০/- ভিজিটে দেখতে হবে। আজব ব্যাপার। ডেকে পাঠালেন সঞ্চিতা দিকে।- এর মানেটা কি?
– আজ্ঞে স্যার এর মানে সোম আর বৃহস্পতি আপনাকে ইউনিটে বসে ₹২০/- নিয়ে দেখতে হবে আর বাকিদিন আপনি স্পেশালিটি ওয়ার্ডে ₹৪৫০/- তে দেখবেন।
– আমি না হয় ₹২০/- তে দেখলাম কিন্তু এক্স রে, ব্লাড টেস্ট, ইউ এস জি এইগুলো কি কম টাকাতে হবে? কোনো ছাড় আছে?
– না, স্যার।
– তাহলে আমি কেন কম টাকায় দেখব? (একটু রেগে গিয়ে বললেন।)
– আমি কি করে জানব স্যার। আমি তো শুধু এখানে কাজ করি।
বলতে বলতেই ঘরে ঢুকল ড. বিপিন চ্যাটার্জী। সামনের চেয়ারে বসে বললেন- কিছু বুঝলে?
– না, ঠিক বুঝতে পারছি না।
– যে রোগী তোমাকে বাইরে ₹৪৫০/- দিয়ে দেখাত সে যখন জানতে পারবে তুমি ₹২০/- তে দেখছ সে আর তোমার কাছে বাইরে দেখাতে আসবে না। তারপরে দেখো নিজেরা ইনভেস্টিগেশনের এক টাকাও কমাবে না কিন্তু তোমাকে লাভ করতে দেবে না। তার সাথে বাকি গল্পটা বুঝতে পারছ না! তোমাকে তো আর সরাসরি বেরিয়ে যেতে বলতে পারে না। এতো দিনে তো বুঝেই গেছ কলেজে একটা মাস টার্মিনেশন চলছে। ভাল লোকগুলোকেও ছেড়ে যেতে হচ্ছে। ওই অরবিন্দ আর অভিষেকের কথা যদি বাদ দাও তাহলেও অনেক ভালো সিনিয়র লোক ছেড়ে দিল। যারা যোগ্য অভিজ্ঞ তাদের রাখতে বেশি টাকা দিতে হয়। আগে যেখানে একজন ভাল ডাক্তারের জন্য কর্পোরেটদের ২.৫-৩ লাখ দিতে হত এখন সেটা ৫০-৬০ হাজারেই হয়ে যাবে। তাই ধীরে ধীরে সবাইকে সরাচ্ছে। কমবয়সী নতুন অনিভিজ্ঞদের নিলে বেশি টাকা দিতে হবে না। এইভাবে চিপ লেবার প্রমোট করছে। আর কমলেশের মত ডাক্তাররা কি পড়াবে? রেনডস ফেনোমেননকে বলে বার্জার ডিসিস!! আমি তো ছাড়ছি খুব শিগগিরি, তুমি কি করবে?
– দেখছি।
৩
সন্ধ্যেবেলা ছাত্রদের মেসে বসে সবাই আড্ডা আলোচনা করছে। চা,মুড়ি, চানাচুর, খেতে খেতে ওয়ার্ড বিভিন্ন কেস, হেল্থ পলিসি, রেশনাল মেডিসিন, এইসব নিয়েই কথা। এগুলো এই বেসরকারি কলেজে বিরল।
রাজিয়াদি বলল- কি অবস্থা! এইবার শুনছি ইন্দ্র স্যার ছেড়ে দেবেন। কলেজ তিন মাস মাইনে দেয়নি! আমাদেরই মাইনে হয় ১৫ তারিখ!! এইবার আর কেউ থাকল না। তোদের কি বলছেরে ? তোদের কি মাইনে বাড়বে?
সবে ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হওয়া সুকমল বলল- না দিদি।
– তোরা জিজ্ঞেস করেছিলি?
– হ্যাঁ দিদি। প্রিন্সি বলল,” তোমরা বেশি নিয়ে কি করবে? তোমাদের তো আর সরকারি কলেজের মত এত পেসেন্ট দেখতে হবে না।”
– বাঃ এ তো দারুণ কথা! প্রিন্সিপাল তো বেসরকারি কলেজের তা ওকি সরকারি কলেজের প্রিন্সিপালের থেকে কম টাকা নেয়? নিজেরা তো অনেকেই এসেছে আর্মি থেকে। বলে আমরা আর্মির ডাক্তার। তা আর্মিতে তো ওয়ান রাঙ্ক ওয়ান পেনশন করে চিল্লায়। এইখানে তাহলে সেই কথা কেন প্রযোজ্য নয়?
চুপ করে বসে থাকা তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তানিশা বলল- তাও তো ভাল, ব্যাঙ্গালোরের কিছু কলেজে তো টাকাও দেয় না।
– সেটাই তো বলছি তোরা কিছু কর।
সুকমল বলল- কিন্তু বলবে কে? ১৫০ জনের মধ্যে একশ জন আমাদের ব্যাচের হল গিয়ে ম্যানেজমেন্ট কোটার। তাদের তো এই প্রয়োজন নেই।
রাজিয়া দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল- শিক্ষা আর স্বাস্থ্য শেষ হতে চলেছে।
আঞ্জিষ্ণু, ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র। ও রাজিয়াদিকে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে দেখে বলল- এটা কি নতুন নাকি? ৯০ এর দশক থেকেই তো এটা চলছে। আগে একজন ডাক্তার সরকারি কলেজে কাজ শেষ করে বেসরকারি হাসপাতালে রুগী দেখত। সরকার তাকে খুব বেশি মাইনে দিত না কিন্তু শেখানোর একটা ইচ্ছা তাদের মধ্যে ছিল। আর কর্পোরেট তাকে কিনতে পারত না কারণ তাদের বেশির ভাগ পেশেন্ট আসতে সরকারি হাসপাতাল থেকে। কিছু খারাপ কাজ হতো ঠিকই কিন্তু মানুষ সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভাল ডাক্তার পেত, ছাত্ররা ভাল শিক্ষক পেত আর কর্পোরেট এদের মাথায় ছড়ি ঘোরাতে পারত না। তাই এরা সরকারকে হাত করে নিয়ম আনল যে সরকারি ডাক্তাররা বেসরকারি জায়গায় দেখতে পারবে না। আর একটা ভাল ডাক্তারদের বড়ো অংশ বেরিয়ে গেল এই সরকারি জায়গা থেকে। কর্পোরেট যে সরকার চালায় সেটা বোঝা কঠিন নয়।
রাজিয়াদি সব শুনে বলল- আমাদের হাসপাতালের গল্প জানিস তোরা? এইখানে একটাও আর এম ও নেই। একজন আর এম ও-কে ঘণ্টায় ২৫০-৩০০ টাকা করে দিতে হয়। সেই টাকাটা এরা দেয় না। একজন ইন্টার্নকে দিয়ে সেই কাজটা করায়। তাকেও বেশি টাকা দেবে না! আর কলেজ তো প্রতি বছর ভর্তির সময় টাকা বাড়াচ্ছে। আমাদের সময় ছিল ৮ লাখ তার পরের বছর ৯ লাখ তারপর ১০ লাখ আর এখন তো ১৫ লাখ। এবার যারা নিটের মাধ্যমে এসেছে তাদের তো ৬৪ লাখ। এরপর তো ম্যানেজমেন্টের গুলো বাদ দে। ওদের তো ১ কোটি ৪০ লাখ। তাহলে প্রতি বছর তুমি টাকা বাড়াবে কিন্তু দেবার বেলায় ইন্টার্নদের ৩ বছর ধরে একই মাইনে?
অঞ্জিষ্ণু বলল- ডিস্টপিয়া জানো বা ফ্যাসিবাদ। এখানে তাই হয়। কলেজে ভর্তির সময় এখন সই করিয়ে নেওয়া হয় যে হোস্টেলে থাকতে হবে ৫.৫ বছর। আমাদের সময় অবধি এই নিয়ম ছিল না। এখন হোস্টেল ফি বছরে ২.৫ লাখ যারা একসাথে ৩ জন থাকে তাদের। এরপর দুজন থাকা, একা থাকা, এ সি ঘরে থাকা সেগুলো আরো বেশি। এইবার তুমি বল যে ছেলেটা এতগুলো টাকা দিয়ে পড়বে সে কোনোদিন কি সমাজের কথা ভাববে? এই কারণেই টাকা বাড়ানো হয় যাতে স্টেট যা ইচ্ছা তাই করবে কিন্তু ছাত্র নিজের এডুকেশন ফি নিয়ে ভাববে। এইভাবেই ফ্যাসিবাদের বীজ বপন চলছে।
অঙ্কনদা বলল- ছার এইসব। এখানে রোগীদের হাজারো ঝামেলা হয়। সেইসব কথা পরে একদিন আলোচনা করব। এখন ওঠা যাক।
৪
কনভোকেশনের দুদিন আগে রাজিয়ারা জানতে পারে কলেজ শুধু হল বুক করে দিয়েছে। বাকি কোনো ব্যবস্থাই নেই। সব ইন্টার্নদের কাছেই প্রায় বিনা মেঘে বজ্রপাত। না না সবার কাছে নয়। এটা বেসরকারি কলেজ। অনেকেই কোটিপতি। শুধু ডিগ্রি কেনার জন্য আসা। নিজেরাই সব ব্যবস্থা করল ছাত্র ছাত্রীরা। কলেজের তরফ থেকে এসেছেন কারেন্সি গ্রুপের মালিক, তার স্ত্রী, কলেজের এম এস, তিনি আবার এম বি বি এস, এম বি এ, প্রিন্সিপাল স্যার, সিকিউরিটি ম্যানেজার। সাথে করে নিজেদের সোশ্যালিস্ট প্রতিপন্ন করতে আনা হয়েছে হাউস কিপিং স্টাফ, সিকিউরিটি গার্ড, ফ্লোর ম্যানেজার এদেরকে। আসেনি কোনো খ্যাতনামা ডাক্তার। কলেজের কোনো প্রফেসরকেও কলেজের তরফ থেকে নিমন্ত্রণ করা হয়নি। যদিও এটা নতুন কিছু নয়। রাজিয়ারা আগেই এমনটা আঁচ করেছিল। নিজেরাই গিয়ে নিমন্ত্রণ করেছিল সবাইকে। দুজন প্রফেসর বাদে আর কেউ আসেননি। সেই দুজনের মধ্যে একজন ছিলেন ড. ইন্দ্র রায়। হাতে করে ছেলেমেয়েগুলোকে ডাক্তারি শিখিয়েছেন। সবাই খুব খুশি তাকে দেখে। না সবাই নয়। কারেন্সি গ্রুপের চেয়ারম্যান একটুও খুশি নন।
কনভোকেশনের পরে সবাই ফিরে গেছে। সবাই কাঁদছে। প্রাণের বন্ধুদের এবার ছেড়ে চলে যেতে হবে। পরের দিন সকালে স্যারদের প্রণাম করে বিদায় নেবার পালা। ড. ইন্দ্র রায়ের ঘর ফাঁকা। আগের দিন কনভোকেশনের পর তিনি না খেয়ে চলে যান। তিনি সেদিন ওইখানে ছাত্রদের টাকায় খেতে যাননি। গেছিলেন নিজের হাতে তৈরি ভবিষ্যতের ডাক্তারদের দেখতে। তার অভিজ্ঞতা আর বয়সের ভারটা এখনো তার শিরদাঁড়ায় পড়েনি।
রাজিয়ার মনে হল একবার প্রিন্সিপালকে গিয়ে বলে আসে, “তুমিও মানুষ আমিও মানুষ তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়।”
কর্পোরেটের কাছে ডাক্তার তৈরি এখন ইঁট, বালি, পাথর তৈরির মতন। ডেমোক্রেসির ভ্যানগার্ড তৈরি নয়, শিক্ষার লক্ষ্য এখন কর্পোরেটের ক্রীতদাস তৈরি করা।
অ্যান্টোনিও গ্রামসি এদের বলতেন ক্লাসি স্ট্রুমেন্টালি অর্থাৎ ক্লাসিক্যাল সাবঅর্ডিনেট। যে শিক্ষাব্যবস্থায় নিয়মিত প্রতিবাদ, যুক্তিতর্ক, অনুশাসন এবং আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে নাগরিক গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ছিল তা এখন সাত চড়ে রা কাটে না এমন ভৃত্য তৈরির কারখানা। ছাত্ররা এখন নিজেকে কি ভাবে লেবার মার্কেটে বিক্রি করবে তাই ভাবতে ব্যস্ত। স্বাস্থ্য এখন আর মৌলিক অধিকার নয় তা আমিরের অর্থনৈতিক অধিকার।
ভালো।লেখা।
ধন্যবাদ