অবশেষে শেষ পি পি ই টা ছিঁড়ে ডাক্তার বললেন,
যাক, যুদ্ধ শেষ,
কার্ভ মোটামুটি সরলরেখায় এসে গেছে।
কাল থেকে আয়নায় মুখ দেখতে পারবো,
যদিও মুখোশের দাগ থাকবে আরো অনেক দিন।
কাল থেকে আর জ্বর শুনলেই আঁতকে উঠবো না,
উঠতে বসতে শুতে স্যানিটাইজারের দিকে হাত বাড়াবো না,
বাড়িতে সাবান আবার আগের মতো মাসে তিনটে।
আজ বাড়ি গিয়ে মেয়ের কপালে চুমু খাবো,
আর ঘরের সাথীর…
বলেই থমকে গেলেন।
নার্স চেয়ে রয়েছেন ঝকঝকে চোখে,
বহু বহু দিন পরে ডাক্তার যাঁর মুখ দেখতে পেলেন।
নার্স বললেন, কাল থেকে দিন চারেক ছুটি নেবো স্যার,
বর মেয়েকে নিয়ে দীঘা যাবো।
গত চারমাস ওদেক কাউকে কাছে আসতে দিইনি,
পড়শিরা কেউ আমার সাথে কথা বলে নি,
পুরো চারটে মাস আমি হাসপাতাল, পাড়া আর বাড়ি,
সবখানে যেন আইসোলেশনেই।
আপনি ফুচকা খান স্যার?
চারমাস পরে মোড়ের মাথায় ফুচকাওলা বসেছে,
আজ আসার সময় চোখে পড়লো।
ওরা সব্বাই ভালো আছে স্যার,
ফুচকাওলা, ঘটি গরম,
রুমাল আর মোজা বিক্রি করা খোঁড়া ছেলেটাও।
শুধু যে দাদু রলিকের আইসক্রিম বিক্রি করতো,
সে আসেনি। কি জানি…
ডাক্তার ঈষৎ হেসে পকেট থেকে টাকা বের করে বললেন,
চুড়মুড় আনো দেখি!
ওয়ার্ডবয়দের জন্যও কিন্তু।
এটাই আমাদের যুদ্ধজয়ের পুরস্কার, কি বলো?
হাসপাতাল থেকে অনেক দূরে অর্থনীতিবিদ তখন তৈরী হচ্ছেন।
দেখে নিচ্ছেন সিন্দুকের কোণায় কি পড়ে আছে,
সবকটা আধুলি আজ ভীষণ দরকার।
এইবারে যুদ্ধটা শুরু হলো তাঁর।