গরম বেশ ভালোই পড়তে শুরু হয়েছে। এমত পরিস্থিতিতে সাপেদেরও শীত ঘুম শেষ। বহু জায়গা থেকে ইতিমধ্যেই লোকালয়ে সাপ দেখা যাচ্ছে বলে আমাদের শাখা অফিসে ফোনও আসছে। কেউ কেউ সরাসরি আমাদের অফিসেও চলে আসছেন। সব ক্ষেত্রেই আমার বা আমাদের সদস্যদের পক্ষে তো ছুটে যাওয়া সম্ভব নয়।
লোকালয়ে সাপ দেখা গেলে বা কারও বাড়িতে সাপ ঢুকে পড়লে, এই সাপ উদ্ধারের কাজটা করবেন বনদপ্তরের লোকজন। আমাদের কারও সাপ উদ্ধারের কাজটা কিছু ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে করতে হলেও আমি মনে করি এটা বনদপ্তরেরই দায়িত্ব। আমরা সাপ সম্পর্কে সচেতন বিষয় কিছু পরামর্শ দিতে পারি, সাপ কামড়ের রোগীকে মানসিক সাহস জুগিয়ে, সাপের কামড় চিকিৎসা বিষয় নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা গুলোকে চিকিৎসক বন্ধুদের কাছে শেয়ার করতে পারি, এইটুকুই।
আসুন আজ সাপের কামড় এড়াতে আমরা কি কি পদক্ষেপ নিতে পারি সেই বিষয়ে একটু আলোকপাত করি –
এক – অন্ধকারে চলাফেরা করবেন না। অবশ্যই টর্চ বা আলো জ্বালিয়ে পথ চলবেন।
দুই – কোনও কারণে আলোর ব্যবস্থা না থাকলে অবশ্যই তবে হাতে একটি লাঠি নিয়ে রাস্তা ঠুকে ঠুকে যাতায়াত করবেন।
তিন – পথের ধারে যদি কোনো কুকুর থাকে তবে অহেতুক কুকুরটিকে বিরক্ত না করে কিংবা রাগিয়ে না দিয়ে কুকুরটির সাথে বন্ধুত্ব করুন, তাহলে দেখবেন প্রতিদিনকার চলার পথে আপনার বিশ্বস্ত বন্ধুর মতোই সঙ্গী হয়ে কুকুরটি সাপ কামড়ের বিপদ থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।
চার – ভোরবেলা এবং সন্ধ্যেবেলা ধান ক্ষেত দিয়ে অবশ্যই সাবধানে চলাফেরা করবেন। যাঁরা ভোর বেলায় ফুল তোলার জন্য অন্ধকার থাকতেই বেড়িয়ে পড়েন প্লিজ একটু সচেতন ভাবে ফুল তুলতে যাবেন।
পাঁচ – যাঁদের ধানের গোলা আছে অবশ্যই আলো জ্বালিয়ে দেখে নিয়ে তবেই ধানের গোলায় হাত দেবেন।
ছয় – হাঁস মুরগির ঘরে অন্ধকারে হাত একদমই দেবেন না। হাঁস মুরগির ছানা সহ ডিম খাওয়ার লোভে বিষধর গোখরো আগে থেকেই ঢুকে থাকতে পারে।
সাত – বাড়ির চারপাশের জঙ্গল পরিষ্কার করুন। কোন অবস্থাতেই বাড়ির চারপাশে আবর্জনা জমতে দেবেন না।
আট- ইঁটের স্তুপ, টালির স্তুপ, বালির স্তুপ, শুকনো কাঠের স্তুপ শোবার ঘরের পাশে বা দৈনন্দিন চলাফেরার পথে একদমই রাখবেন না। বাড়ির বাচ্চাদের এই সময়ে এই সব জায়গায় যেতে নিষেধ করুন।
নয় – আপনার এলাকার আশেপাশে কোনও পরিত্যক্ত বাড়ি, কিংবা নির্জন বাড়ি দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকলে অবশ্যই আপনার যে পৌর বা পঞ্চায়েত প্রতিনিধি আছেন তাঁদেরকে বলে নিয়মিত ভাবে বাড়িটিকে পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করুন। এরকম ঘরে কিন্তু বিষধর কালাচের বংশ বৃদ্ধি ঘটতে পারে, যা আপনার পক্ষেও বিপদ।
দশ – সব কথার শেষ কথা রাতে অবশ্যই মশারী খাটিয়ে ঘুমোবেন। বিছানাপত্র ঝেড়ে পুঁছে দেখে নেবেন। কোনও পরিত্যক্ত বাক্সে, কাঠের স্তুপে, ইঁদুরের গর্তে হাত দেবেন না। আগে সাবধানে আলো জ্বালিয়ে দেখে, লাঠি দিয়ে নাড়িয়ে তারপর হাত দেবেন। এবং ঘরের ভিতর ইঁদুরের গর্ত থাকলে অবশ্যই সাবধানে গর্ত বুজিয়ে দিন।