(আরো বিশদে জানা ও আলোচনার পর বিস্তারিত বক্তব্য জানানো হবে।)
একটা সংক্রামক ব্যাধির অতিমারী – যার প্রকোপ এখনও পুরোপুরি কাটেনি এবং অর্থনীতির উপর যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি নিঃসন্দেহে, যাতে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার নড়বড়ে চেহারা বেআব্রু হয়ে গিয়েছে, শিক্ষাব্যবস্থার শিকড় ছিঁড়ে গিয়ে আস্ত এক প্রজন্মের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছে – সেই বিশেষ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এই বাজেটকে হতাশজনক বললেও কম বলা হয়।
এই বিশেষ ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত মনে রেখেই বলি, প্রাথমিক ভাবে আমরা মনে করি আজকের ঘোষিত বাজেট স্বাস্থ্য ও শিক্ষার জন্য একটি হতাশাজনক বাজেট।
মনে রাখতে হবে, শিক্ষাহীন নাগরিক দেশের অর্থনীতিকে পিছিয়ে দেয়! এর সঙ্গে অসুস্থতা যোগ হলে সার্বিক অর্থনীতির পক্ষে তা ভয়াবহ। দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কারণে আমরা সম্প্রতি যে কোভিড অতিমারীজনিত দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছি তার পর মানুষের স্বনির্ভরতা ও সক্ষমতার বৃদ্ধির দিক থেকে বিচার করলে সরকারের এই আচরণ – যা বাজেটে প্রতিফলিত – দায়িত্বজ্ঞানহীন।
স্বাস্থ্যকে অধিকারমুখী (Health as a Right) না করে ইন্সুরেন্সমুখী করার অর্থ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা থেকে ধীরে ধীরে সরকারের দায় লাঘব করা। তদুপরি, সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার পরিবর্তে ইন্সিওরেন্স বেসড পরিষেবা শিরোধার্য হলে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদেরও কর্পোরেট কর্মী বানিয়ে তাদের আয়ের ও কর্মস্থানে পেশার অধিকার খর্ব করার সম্ভাবনা থাকবে। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে এই ব্যবস্থা যতখানি বিপজ্জনক, কর্পোরেট মালিকের বাণিজ্যের পক্ষে তা ততোখানিই সুবিধের।
সকলের জন্য স্বাস্থ্য, নিদেনপক্ষে ওই পথের দিকনির্দেশকারী শ্রীনাথ রেড্ডির নেতৃত্বাধীন উচ্চস্তরীয় বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৭-র মধ্যে ২.৫% এবং ২০২২-এর মধ্যে জিডিপির ন্যুনতম ৩.৫% স্বাস্থ্যখাতে সরকারের খরচ স্বপ্নই থেকে গেল। এমনকি ২০১৭-র জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি জিডিপির যে ২.৫% স্বাস্থ্যখাতে খরচ করার কথা বলেছিল তাও গুরুত্ব পেল না।
স্বাস্থ্যকে আরো বেশী করে কর্পোরেটমুখী করার সমস্ত সম্ভাবনা নিহিত রয়েছে এই বাজেট প্রচেষ্টায়। মধ্য, ছোট ও প্রান্তিক ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো ধুঁকছে এবং আগামীতে আরো বেশী করে ধুঁকবে।
বিগত দু’বছর ধরে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে সচল রাখতে গিয়ে আত্মবলিদান দেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের কোনো ঘোষণা না থাকা আমাদের হতাশ করেছে।
মানসিক রোগের জন্য ২৩ টি টেলিকন্সাল্টেশন কেন্দ্রের ঘোষণাকে স্বাগত, কিন্তু ভারতের মতো সুবিশাল দেশের মানসিক রোগের মহামারীতে ২৩টি সেন্টার কতদূর সমস্যার সমাধান করবে সেটা বলা মুশকিল।
অবশ্য এই বাজেটের পর আরো আরো বেশী দেশবাসী ও কোভিড যোদ্ধা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তাঁদের আরও উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য-পরিষেবার দরকার লাগবে। তার জন্যই সম্ভবত এই আগাম উদ্যোগ!
We are Alice in the Wonderland — after all this budget looks like a NOBEL wishing thesis — GOD permitting — BE IT