মনে পড়ে সেই আইকনিক টিন এজ ফ্রেন্ডশিপ আর রোমান্স এর ছবি ববি? মেরা নাম জোকারের পর আর্থিক ভাবে ঝাড় খেয়ে রাজ কাপুরের তখন মাথায় হাত। আর্চি-র কমিকস ভক্ত রাজ ঠিক করলেন টিন এজ লাভ স্টোরি বানাবেন। এই সিনেমায় অভিনয় করতে স্কুল ছাত্রী ডিম্পলকে রাজি করাতে রীতিমত বেগ পেতে হয়েছিল রাজ কাপুরকে। কিন্তু উনি জানতেন যে ওই ইনোসেন্ট সেন্সুয়াল লুক হচ্ছে সিনেমাটার ট্রাম্প কার্ড। শেষে ডিম্পল রাজি হন। বাকিটা ইতিহাস। ট্রেন্ড সেটার।
হিন্দি সিনেমার লাস্যময়ী অভিনেত্রীর কথা হঠাৎ আজ এমনি এমনি শোনাতে বসিনি। সবাই আমরা ব্র্যান্ড এম্বাসেডর শব্দটার সাথে কম বেশি জড়িত। নানান পণ্যের এনডোর্সমেন্ট ছাড়াও নানান সামাজিক বার্তাও বলানো হয় সেলিব্রেটিদের দিয়ে যেমন আমাদের ফিল্ডে ‘দো বুঁদ জিন্দেগি’ – পালস পোলিওতে অমিতাভ বচ্চন। কিন্তু যখন কুষ্ঠ রোগ নিয়ে কথা বলার দরকার হল তখন কেউ এগিয়ে আসেন নি। অসুখটা মানুষজনের কাছে এখনো এত্ত ঘিনঘিনে যে কোনো তারকা রাজি হন নি।
একমাত্র ডিম্পল এগিয়ে এসে ছিলেন। ববি তৈরির আগেই স্কুলে পড়ার সময় কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ডিম্পল। সঠিক চিকিৎসায় ও পরিবার পরিজনদের ভালোবাসায় সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। এই ঘটনা আমরাও জানতে পারতাম না যদি না ডিম্পল নিজে এগিয়ে এসে জানাতেন। কৈশোরের স্বপ্নসুন্দরী এমন একটা গা ঘিনঘিনে রোগে আক্রান্ত ছিলেন জেনে অনেকেই চমকে উঠবেন জেনেও ডিম্পল এগিয়ে এসেছিলেন নিজের মুখে নিজের রোগ, তার সেরে ওঠার সত্য কাহিনী বলবেন বলে। জোর গলায় বলেছিলেন যে কুষ্ঠও একটা নিরাময় যোগ্য রোগ। কুষ্ঠ রোগিকে ভয় বা ঘেন্না পাওয়ার কিছু নেই। তাঁর আবেদন ছিল, “You are not alone in fight for leprosy free India” নিছক অন্তঃসারশূন্য গ্ল্যামার-সর্বস্ব নায়িকা নন, আমাদের দেখা অন্যতম সাহসী হৃদয়বান মানুষ এই ডিম্পল।
আন্তর্জাতিক কুষ্ঠ বিরোধী দিবসে তাই শেষ কথা — যদি বন্ধু হও, তবে বাড়াও হাত, কুষ্ঠ রোগ হবে মাত। কুষ্ঠ রোগ/রোগীকে ঘৃণা নয়, সহযোগিতা করুন তাকে সারিয়ে তুলতে, কুষ্ঠ মুক্ত ভারত গড়তে।