আমাদের চলমান আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি নিয়ে এর আগে বহুবার বহু প্রশ্ন উঠেছে, আমরা প্রত্যেকবার তার উত্তর দিয়েছি এবং ভবিষ্যতেও দেবো। কিন্তু কোন একটি আন্দোলন ঠিক পথে চলছে তখনই বোঝা যায় যখন সেই আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করতে বিভিন্ন মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়। আমাদের আন্দোলনের সবচেয়ে জোরের জায়গা এর সততা, এর আগে আমরা দেখেছি আমাদের সহযোদ্ধা আশফাক উল্লাহ নাইয়া সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ বলে অপপ্রচার করা হয়েছে। আরো বহু সহযোদ্ধার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কুরুচিকর অপপ্রচার চলেছে।
কিন্তু আজ যে জিনিস আমরা দেখলাম তা সব সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে। ‘সংবাদ প্রতিদিন’ নামক এক দৈনিক খবরের কাগজের প্রথম পাতায় আজ একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে যেখানে আরজিকর মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ, ধর্ষণ খুনের মামলা ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে জেল হেফাজতে থাকা সন্দীপ ঘোষের সাথে কয়েকজনের ছবি দেখা যাচ্ছে। যার মধ্যে আর জি কর মেডিকেল কলেজের থ্রেট কালচারের বিভিন্ন পরিচিত সদস্য সৌরভ পাল, আশিস পান্ডে, শ্রীশ চক্রবর্তী এদেরকে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু অত্যন্ত আশ্চর্যজনক ভাবে সৌরভ পালের ছবিটিতে গোল দাগ করে এই দৈনিক সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় ক্যাপশন করা হয়েছে ‘সন্দীপ ঘোষের পাশে দেবাশিস হালদার’। যদিও ভিতরের (৫ নং) পাতায় ছোট করে লেখা আছে ছবির সত্যতা যাচাই করা হয়নি, কিন্তু একটি দৈনিক সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় সত্যতা যাচাই না করে সরাসরি ভাবে ক্যাপশনে এরকম কথা লেখা যায় কি?!
নৈতিকভাবে বা আইনিভাবে?!
সংবাদ মাধ্যমের যে বন্ধুরা এই পোস্ট দেখতে পাচ্ছেন তারা এই প্রশ্নের উত্তর দেবেন আশা রাখছি।
প্রসঙ্গত, এই সৌরভ পাল সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ সেই থ্রেট সিন্ডিকেট এর একটি অংশ, যাদেরকে আরজিকর মেডিকেল কলেজের কলেজ কাউন্সিল NMC গাইডলাইন মেনে তদন্ত কমিটি বসিয়ে, তদন্ত করে এবং দোষী সাব্যস্ত করে সাসপেন্ড করেছিল। যদিও নবান্নে শেষ মিটিংয়ে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এই কলেজ কাউন্সিলের তদন্ত কমিটির মান্যতা কে কার্যত খারিজ করে দেন, ও পরোক্ষ ভাবে ‘অভিযুক্ত’ দের পক্ষ নেন এবং তার পরদিন হাইকোর্ট-এ এই সাসপেনশন এর উপর আপাতত স্টে অর্ডার জারি হয়েছে।
এর আগেও আমরা দেখেছি ‘সৌতাজ বিশ্বাস’ নামক কোন একটি প্রোফাইলকে সহযোদ্ধা দেবাশিস হালদার এর প্রোফাইল বলে মিথ্যে অপপ্রচার করা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া তে। কিন্তু একটি দৈনিক সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় যেভাবে বেমালুম একজন অন্য মানুষকে দেবাশিস হালদার বলে শিরোনাম করা হলো তা যদি অনিচ্ছাকৃতও হয়, তাহলেও তা ক্ষমার অযোগ্য কারণ এটি আন্দোলন সম্পর্কে মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এবং যদি এটি ইচ্ছাকৃত হয় তাহলে কোন উদ্দেশ্যে কাদের সুবিধার্থে করা হচ্ছে সেটি বুঝে নিতেও অসুবিধা থাকার কথা নয়।
আমরা আশা করব সংবাদ প্রতিদিন অবিলম্বে নিজেদের ভুল স্বীকার করে সংবাদপত্রে নির্দেশিকা দেবে। আমরা ফোন করে বিষয়টি তাদের অবগত করেছি, তাদের এডিটোরিয়াল বোর্ডকে আমরা চিঠিও পাঠাবো। যদি তাতেও কাজে না হয় আমরা আইনজীবীদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনে আইনি নোটিশ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ঐ কাগজের ভুল স্বীকারের সততা নেই।