“…কত বছর মানুষ বাঁচে পায়ে শেকল পরে?
কবার তুমি অন্ধ সেজে থাকার অনুরাগে?
বলবে তুমি দেখছিলে না তেমন ভালো করে।
কত হাজারবারের পর আকাশ দেখা যাবে?
কতটা কান পাতলে তবে কান্না শোনা যাবে?
কত হাজার মরলে তবে মানবে তুমি শেষে?
বড্ড বেশি মানুষ গেছে বানের জলে ভেসে।”
পরিষ্কার করেই বলছি ফের লকডাউন আমরা কেউই চাই না!
লকডাউন সর্বরোগহর নয়, এমনকি করোনা কিলারও না!
লকডাউন একটা আপৎকালীন প্রক্রিয়া যার মধ্যে দিয়ে একটা দেশ প্রস্তুত হয়!
এই মারীর সূচনাকালে রাজ্যে বা দেশে যথেষ্ট পরিমাণে পিপিই, মাস্ক, স্যানিটাইজার, কোভিড বেড, অক্সিজেন সিলিন্ডার, ভেন্টিলেটর, একমো মেশিন ছিল না! এই লকডাউন, সময় কেনার একটা পরীক্ষিত প্রক্রিয়া!
একবছর আগে আমাদের এই কথাগুলো বলা হয়েছিল, আবার হচ্ছে! পার্থক্য হলো, শুধু এবার এখনো থালা বাটি বাজাতে বলা হয় নি! প্রদীপ জ্বালানো হয় নি আর পুষ্পবৃষ্টি করা হয় নি!
অথচ এখন আমাদের করোনার সঙ্গে লড়ার ওই প্রযুক্তিগুলি আছে, চিকিৎসাকর্মীরা আজ একবছর আগের তুলনায় অনেক বেশি প্রশিক্ষিত, অভিজ্ঞ! সরকারী বেসরকারী ব্যবস্থাগুলিও প্রস্তুত, এমনকি এসে গেছে প্রতিষেধক টিকা!
দ্বিতীয় ঢেউ যে আসবেই চিকিৎসকদের সেই উপর্যুপরি সাবধানবাণীতে আমাদের প্রশাসনিক কর্তারা কর্ণপাত না করে মেতে রইলেন ভৌতিক ভোটোৎসবে! তার সঙ্গে উবে গেলো জনমানসে সচেতনতা।
মাস্ক, স্যানিটাইজেশন আর ফিজিক্যাল ডিস্ট্যানসিং প্রায় পাস্ট টেন্স হয়ে গেলো! ভ্যাকসিনকে কেউ কেঊ ভাবলেন অপ্রয়োজনীয়! সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নিলেনই না টীকা! কেউ ভাবলেন ভ্যাকসিন নেওয়া মানেই অতিমানব হয়ে যাওয়া!
আর এখন শুরু হয়েছে আজই ভ্যাকসিন না নিলে কালই আমার করোনা হবে এই আতঙ্ক!
আর কিছু আত্মঘাতী বিতর্ক
১. মহারাষ্ট্রে তো ভোট ছিল না, তবে বাড়লো কেন?
২. বাংলায় তো আর কুম্ভমেলা হয় নি! বাড়লো কেন?
৩. সব দোষ বুঝি ইলেকশন কমিশনের?
৪. মাস্টারগুলো ভয়ে স্কুল বন্ধ করে রেখেছে।ওদিকে মাইনে পাচ্ছে কিন্তু!
এদিকে নিঃশব্দে অপেক্ষাকৃত তরুণতর রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি, অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়া, আর গত বছরের তুলনায় কিছু ভয়ঙ্কর রোগলক্ষণ চিন্তার ভাঁজ ফেললো চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের!
বাড়ির গ্যারাজে, বেসমেন্টে অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত করতে শুরু করলেন কিছু সহনাগরিক!
রেমডেসিভির নামে একটি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধকে করোনারোগহর হিসেবে প্রচার করে কালোবাজারি করে নেওয়া গেলো!
এই সব যখন হয়ে টয়ে গেলো, রোগের বিস্তার যখন আকাশ ফুঁড়ে উঠলো, তখন মনে পড়লো ভোটোৎসব এখন ভূতপূর্ব!
তাই আসুন আবার লকডাউন লকডাউন খেলি!
লকআপে তুলে দি জীবন ও জীবিকা