#সবিনয়_Information।
15th August Vs 26th January.
15ই আগস্ট 1947, আমরা সবাই জানি, ঐ দিন ভারত স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু এটা জানি না, তখন আমাদের দেশের নাম ছিল “Dominion of India.”
Dominion কি জিনিস?
ডোমিনিয়ন হল ব্রিটিশ কমনওয়েলথের অধীনে একটা দেশ, যার নিজস্ব গভর্নমেন্ট আছে।
Dominion is a country of the British Commonwealth having it’s own Government. এই ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাসটা ছিল 1950 সাল পর্যন্ত। তখন পণ্ডিত নেহেরু প্রাইম মিনিস্টার থাকলেও তাঁর মাথার ওপরে ছিলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন, তাঁর ওপরে ছিলেন কিং জর্জ; এবং কিং ছিলেন রাণী এলিজাবেথের অধীনে। অর্থাৎ চাচাজী ছিলেন প্রশাসনের চতুর্থ ব্যক্তি।
1948 সালে মাউন্টব্যাটেন তাঁর দেশে পাড়ি দেন। তাঁর জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন রাজাজী। রাজাগোপালাচারী। 1950 নাগাদ আমাদের সংবিধান সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয়। তারপরে আমরা এই রাজা রাণী সিস্টেমের সমাপ্তি ঘোষণা করি। 26শে জানুয়ারী 1950, ঐ দিন ভারত প্রজাতন্ত্র ঘোষিত হয়, এবং চাচা নেহেরু হন সেকেণ্ড ইন কম্যাণ্ড; CEO of the country. অর্থাৎ ঐদিন ভারত সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন হয়ে ব্রিটিশরাজ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে।
আরো আছে।
1947 থেকে 1949 পর্যন্ত ভারতের আর্মি চিফ ছিলেন Sir Rob Lockhart & Sir Roy Butcher, দুই ব্রিটিশ বিশ্বযুদ্ধ ভেটেরান। তারপরে আসেন Sir Edward Parry(1951), Sir Charles Pizey(1955), & Sir Stephen Carlill (1958 পর্যন্ত)। অর্থাৎ ভারতীয় আর্মি চিফ তৈরি হতে এগারো বছর কেটে গেছে।
(তবে আমি জানতাম কারিয়াপ্পা হলেন প্রথম আর্মি চিফ, সেটা 1949. Bivas Roy Choudhury আলোকপাত করতে পারবে।)
আর এয়ারফোর্স?
Sir Ronald Ivelaw-chapman এবং Sir Gerald Gibbs ছিলেন সর্বোচ্চ পদে। 1954 সাল পর্যন্ত। তারপরে প্রথম Air force প্রধান হন সুব্রত মুখার্জি। স্বাধীনতার সময় মুখার্জি সাহেব বলেছিলেন ঐ পদের জন্য তৈরি হতে তাঁর পাঁচ সাত বছর দরকার। তিনি ছিলেন ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্স কলেজের গ্র্যজুয়েট। তা সত্ত্বেও তিনি লণ্ডনের Imperial Defence College এ কোর্স করতে যান নিজেকে ঐ পদের উপযুক্ত হবার জন্য। তারপর 1954 সালে তিনি তৈরি হয়ে এয়ারফোর্স চিফের পদে বসেন।
কি বোঝা গেল?
এক. আমাদের দেশ স্বাধীনতার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত ছিলনা 1947 সালে।
দুই. আমরা আমাদের প্রভুদের সাথে যথেষ্ট বন্ধুভাবাপন্ন ছিলাম।
তিন. তখনকার নেতারা এইসবই জানতেন। তাঁরা “অহিংসা” অস্ত্রটিকে বেশি ব্যবহার (Overuse) করেছেন।
ভাবুনতো, ব্রিটিশরা যদি তাড়াহুড়ো করে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে আকস্মিক বিদায় নিতো, তাহলে কী হতো? তাদেরতো এই দীর্ঘদিন ধরে পাওয়ার ট্রান্সফার করবার কোনো দায় ছিলনা! আসলে কংগ্রেসের নেতারা জানতেন কোনো কিছু তৈরি না করে দায়িত্ব নিয়ে ফেললে দেশটাকে একত্র করে তৈরি করা যাবেনা। দেশ টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে।
এবারে নেতাজী সুভাষের কথায় আসি। তিনি একটা আর্মি গঠন করেছিলেন, সৈন্যরা ট্রেনিংপ্রাপ্ত হয়েছিল, অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন, দেশের বাইরে আজাদ হিন্দ সরকার গঠন করেছিলেন, তার নিজস্ব মন্ত্রীমণ্ডলী গঠিত হয়েছিল, (Exile Government), একডজন দেশের সাপোর্ট পেয়েছিলেন, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ইমফল ও কোহিমাতে যুদ্ধ করেছেন, সেই যুদ্ধ was later adjudged the greatest battle Britain has ever fought. ব্রিটিশদের পক্ষে সেই যুদ্ধ এক কঠিন যুদ্ধে পরিণত হয়েছিল। নেতাজীর আর্মিতে তিনটে ডিভিশন, ছ’টা রেজিমেন্ট এবং মহিলা রেজিমেন্টও ছিল। কতখানি দূরদর্শী ছিলেন তিনি।
একদিকে নেতাজী যখন বিদেশে বসে এইভাবে ভারতের স্বাধীনতার জন্য তৈরি হচ্ছেন, তখন দেশে বসে নেতারা অহিংসার ট্যাবলেট জল দিয়ে চিবোচ্ছেন আর ভাবছেন কখন স্বাধীনতা দান করে ব্রিটিশরা চলে যাবে! “(Someone to dole out freedom to them.”) নেহেরু এবং অন্যান্যরা তৈরিই ছিলেননা যে একটা স্বাধীন দেশের জন্য আর্মি সংগঠিত রাখা কতখানি জরুরী। ( “…and in fact were clueless about setting up armed forces. Little did they realise that they had to protect the freedom they were given.)
——–
আজ চোখের সামনে একটা দেশে পাওয়ার ট্রান্সফারের নামে বজ্জাতির ফলে ভেঙে ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে, সেই দেশের নাগরিকসমাজ একটা ধ্বংসের মুখে।
তাই এই পুরোনো টপিকটা আবার পড়লাম। সবার সাথে শেয়ার করলাম। ভেবে দেখুন, পূর্ণ স্বাধীনতা, টোটাল পাওয়ার আমরা কবে পেয়েছি? 15ই আগস্ট 1947, নাকি 26শে জানুয়ারী 1950?
এই লেখার সমস্ত সূত্রের লিঙ্কটা আমার প্রথম কমেন্টেই দিয়ে দেবো।
জয় হিন্দ।