দুজনেরই বয়েস হবে পঁচিশ তিরিশ,
ফালতুতে বসে থাকা দুজনেরই দুচোখের বিষ,
দুজনেই অস্ত্রে নিপুণ। কবে যে সুযোগ পাবে,
তেমন খোয়াব দেখে ট্রিগারে আঙুল করে খুব নিশপিশ।
দুজনেই মা’কে ভালোবাসে।
নিয়মিত ফোন করে, ছুটি পেলে বাড়ি ছুটে আসে,
এক দুটো ঝাড় ভুলে, হবু বউ ভূমিকায় এসে গেছে কেউ,
দুজনেই ঝড় তোলে নিভৃত সময় পেলে ঘন হওয়া শ্বাসে।
দুজনেই ফুটবল খেলাটার পোকা।
অবসরে মুঠোফোনে মাথা থাকে ঝোঁকা,
লিউডনেস্কি বা এমবাপে খেললে তো নাওয়া ঘুম ছোটে,
বিপরীত সাপোর্টার পেয়ে গেলে যথারীতি শুরু তাল ঠোকা।
দুজনেরই ঊর্দিতে দেশ লেগে আছে।
বাকিদের শান্তির ঘুম দিতে সীমান্তে ওরা জেগে আছে,
যদিও আলাদা দেশ, তবু সৈনিক ও দৈনিক ধাঁচ সব একই,
ইদানিং এর নেতার ওপরে ওর নেতা খুব রেগে আছে।
দুজনেই ডাক পেলো যুদ্ধে যাওয়ার।
মা’কে ভিডিও কল সেরে, চুম্বন রেখে দিয়ে ঠোঁটে প্রেমিকার,
দুজনেই চলে গেলো। এর দেশ ঝাঁপাবে ওর দেশের দখলে,
ওরা তার বোড়ে শুধু। পাশা খেলে চলে কোনো হায়ার পাওয়ার।
দুজনেরই লাশ পড়ে যুদ্ধের শেষে।
মৃত্যু অপেক্ষা করে শিয়রের কাছে প্রত্যেক ঊর্দির বেশে,
এ কাহিনী ভিন্ন কিছু নয়। শুধু দুজনের সমাপ্তি আবেগে আলাদা,
একজন মরেছে আক্ষেপে, আর একজন তার প্রাণ দিলো হেসে।
একজন দখলদারের দলে। অন্য যুবক তার রক্তের অঞ্জলি দিয়েছে স্বদেশে।
পুঃ : এই সব কাহিনীর পুনশ্চ থাকে।
ইতিহাস দুটো লাশ ফেলে আসে অতীতের সময়ের বাঁকে।
নেতাদের হাতে হাত মিলে যায়, কাগজে বেরোয় ছবি পাশাপাশি হাসি,
শান্তির বিভ্রম গতকালই ঘটে যাওয়া যুদ্ধকে ঢাকে।
সকলেই ভুলে যায় ওই দুই যুবকের বিয়ে ভাঙা হবু বউ আর দুই মা’কে।