আসুন, পরিচয় করা যাক বাঙালির রেনেসাঁর নায়ক, প্রগতিবাদীদের নয়নের মনি রাজা রামমোহন রায়ের কিছু প্রগতিশীল মানসিকতার সাথে।
১৮২৩ সালের ৩১ মার্চ সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণাদেশ জারি হওয়ার পরে, আইনটি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে রামমোহন মোট ৫৫টি অনুচ্ছেদ সংবলিত যে সুদীর্ঘ আবেদনপত্রটি কিং ইন কাউন্সিল (King in Council)-এর কাছে পাঠান, তার প্রথম অনুচ্ছেদেই তিনি ইংল্যান্ডের রাজাকে ‘আমাদের জীবন, সম্পত্তি ও ধর্মের অভিভাবক’ রূপে চিহ্নিত করেন এবং আবেদনপত্রটির শেষ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত, এই অনুগত প্রজার সুর অব্যাহত থাকে।
আবেদনটির চতুর্থ অনুচ্ছেদে তিনি জানান: “অপ্রত্যাশিতভাবে ভারতবর্ষকে তার পূর্বতন শাসকদের দীর্ঘ অত্যাচার থেকে মুক্ত করে ইংরেজদের শাসনব্যবস্থায় ন্যস্ত করার জন্য, জগৎপিতাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে আমি এখন আমার প্রবন্ধ শেষ করছি। [ইংরেজরা] এমন এক জাতি যারা কেবল নিজেরাই নাগরিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা ভোগ করে না, বরং যেসব জাতির ওপর তাদের প্রভাব বিস্তৃত হয়, তাদের স্বাধীনতা ও সামাজিক সুখসমৃদ্ধির বিধান প্রতিষ্ঠা করে এবং সাহিত্য ও ধর্মীয় বিষয়েও [তাদের] মুক্তচিন্তাকে অনুপ্রাণিত করে।”
এর পাশাপাশি আবেদনটির তৃতীয় অনুচ্ছেদে ব্রিটিশদের ভারতবর্ষ জয়ের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন: “কয়েক শতাব্দী ধরে হিন্দুস্থানের বৃহত্তর অংশ মুসলমান শাসনের অধীনে ছিল, [ফলে] এ দেশের মূল অধিবাসীদের নাগরিক ও ধর্মীয় অধিকার ক্রমাগত পদদলিত হয়েছিল… কিন্তু মুসলমান শাসকদের রাজত্বকালে বাংলার অধিবাসীরা দৈহিক অপটুতা ও সক্রিয় পরিশ্রমের অনীহা হেতু শাসকদের প্রতি একান্তভাবে বিশ্বস্ত ছিল, যদিও তাদের ধনসম্পদ প্রায়শই লুণ্ঠিত হয়েছে, ধর্মের অবমাননা হয়েছে এবং যথেচ্ছভাবে তাদের হত্যাও করা হয়েছে। অবশেষে অশেষ করুণাময় জগৎপিতা, সেই অত্যাচারীদের কবল থেকে নিপীড়িত বাংলার অধিবাসীদের উদ্ধার করে নিজের তত্ত্বাবধানে গ্রহণ করার জন্য ইংরেজদের অনুপ্রাণিত করেন। এসব বিষয়গুলি বিবেচনা করে এবং এদেশের কল্যাণের জন্য [ইংরেজদের] সচেষ্ট হওয়ার কথা মনে রেখে… আপনার কর্তব্যপরায়ণ প্রজাবৃন্দ ইংরেজদের কখনও বিজয়ী দল হিসেবে দেখেনি, বরং পরিত্রাণকর্তা হিসেবে দেখেছে; মহারাজকে কেবল একজন শাসক হিসেবেই দেখেনি, পিতা ও রক্ষক হিসেবেও দেখেছে।”
রামমোহন যে এখানে ‘এ দেশের মূল অধিবাসী’ হিসেবে হিন্দুদের চিহ্নিত করেন এবং হিন্দু ও মুসলমানদের দুটি স্বতন্ত্র ধারা হিসেবে তুলে ধরেন, সে কথা না বললেও চলে। এই আবেদনে তিনি যে মুসলমানবিদ্বেষ ও ব্রিটিশপ্রীতির নমুনা হাজির করেন, পরবর্তী প্রায় ১০০ বছর ধরে নবজাগরণের আলোয় ‘আলোকিত’ ভারতবর্ষের হিন্দু জনসমষ্টি সেই ধারা অব্যাহত রাখবেন। এক মূর্খ চাড্ডি দেখলাম ফেবুতে পোষ্ট দিয়েছে রামমোহন নিয়ে কিঞ্চিৎ রাগ প্রকাশ করে। ওরে বাছা, নিজের ধর্মবাপকে চিনলি না!
চিনতে অবশ্য কেই বা পেরেছে। রামের বিরুদ্ধে রামকে দাঁড় করিয়ে সতীদাহকে হাতিয়ার করে জ্ঞানী গুণী বামদের কেউ কেউ এমন লাফালাফি করলেন সারাদিন যে দেখে রামদেবও লজ্জা পেয়ে যাবে। তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন না যে লর্ড বেন্টিংক যখন রাম মোহনের কাছে সতীদাহ নিয়ে তাঁর মতামত জানতে চান, তখন রামমোহন লিখছেন,”এ বিষয়ে আইন প্রচলিত হলে জনসাধারণের মনে আশঙ্কা দেখা দিতে পারে যে, যখন ইংরেজরা [এদেশে] ক্ষমতা লাভের প্রয়াসী ছিলেন, তখন তাঁরা [আমাদের] ধর্মের ক্ষেত্রে সার্বিক সহনশীলতার অনুমোদন কূটনীতি সিদ্ধ মনে করেছিলেন। কিন্তু [সে বিষয়ে] প্রাধান্য অর্জনের পর তাঁদের প্রথম কাজই হল সহিষ্ণুতার পূর্ব প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা এবং পরের স্তরই হবে মুসলমান বিজয়ীদের মতো আমাদের ওপরে তাদের ধর্ম চাপিয়ে দেয়া।”
অতি বড় চাড্ডি ছাড়া রামমোহন এর এই লজিক (নাকি কুৎসা) মেনে নেয়া কষ্টকর যে মুসলমান বিজয়ী শাসকরা হিন্দুদের ওপর তাদের ধর্ম জবরদস্তি করে চাপিয়ে দিয়েছে। দিলে পরে ভারত জুড়ে তো হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে যেত কোন কালে। এই রাম’কে আপন করে নেয়ার জন্য কি মাতামাতি ওই বামবীরদের। ওই চাড্ডির পোস্টে গিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে কমেন্ট করে আসছে। শকিং, রিয়েলি শকিং।









আরে বাবা তাঁকে সংবাদ পত্র চালাতে হতো।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কথা বলেছেন তিনি।
আলটিমেটাম তখন শাসক যারা সেই ইংরেজ দের দিয়েই তো সতীদাহ প্রথা আইন করে উচ্ছেদ করিয়েছেন তারপর বাল্যবিবাহ। তাঁর অবদান টা তো ভোলার কথা নয়।সে সময় ইংরেজদের সাথে ওঠবস তখন। চাড্ডিদের কথা আমি জানি না।
তবে রাজা উপাধি তারপর রায়রায়ান তালুকদার উপাধি এসব পেতে যেমন পূর্ব পুরুষ জমি জিরেতিয় ও অন্যান্য হেতু মানবিক গুণ থাকা দরকার তেমনি ইংরেজদের খোশামদও অবশ্যম্ভাবী। এটা চিরকাল।
রবীন্দ্রনাথের নাটক উপাধি ওসময়ও অমন রসকদম্ব বিদেশী শাসকের প্রতি সবই ছিলো।কেউই ছেড়ে কথা বলেনি তাঁর জন্য।
তবে সব পেরিয়ে তাঁর আলো রাজকীয় অন্যান্য যাবতীয় তখন কার দিনের অন্ধকার কে কাটিয়ে দেয়।
আর হয়েছে তো প্রচুর হিন্দুমন্দির ধ্বংস হয়েছে।
আসলে যে যখন রাজত্ব এসছে ভারত বর্ষ টাকে একেবারে লুটেপুটে খেয়েছে। আর আমরা ভেবেছি
ঠিক আছে,এর চেয়ে বুঝি এইই ভালো হবে।
রামমোহনও একজন নাগরিক সর্বোপরি একজন অনুভবী মানুষ।
প্রোপাগান্ডার একটা কোর্স বোধহয় এই পোস্ট কর্তা তথা লেখক সমুদ্র সেনগুপ্ত করিয়াছেন রিসেন্ট কোথাও সেটা আমি বা আমরা জানি না।
‘নাইট’।* টাইপো।আরও লেখা যায়।কিন্ত এখানে এটুকুই থাকল আপাতত।বেশী লেখা যায় না এইখানে ।অসুবিধাজনক, টাইপিং সিস্টেমের।
মোদ্দা কথা আমি দেশের বা দশের কাজের জন্য সেই দেশের শাসকের সঙ্গে তো একটু কম্প্রমাইজে যাবই বা যেতেই হয়।অবশ্যই সেটা যদি সমাজশোধারক ভালো কাজ হয়। নোবেল পরিষেবা যেটাকে আমরা বলি।🫠তো সেইটা করতে গেলে …
তারপর উপাধি এইসব।
মোটের উপর সব ভুলে তাঁর গঠনমূলক কাজ টি কে দেখতে হয়।
আর সেইটাই সব কিছুকে পেরিয়ে যায়।ইতিহাস, সময়, দলিল।
এ বুদ্ধি মোদি তথা চাড্ডিদের আসবে না।সেইজন্যই তো দেশ টা আজ দ্বেষে ভরে গেছে।
🫠😉☺️