উপসর্গ
হাইপারটেনশনে আক্রান্ত অধিকাংশ ব্যক্তির কোনো উপসর্গ থাকে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অন্য কারণে ডাক্তার দেখানোর সময় রক্তচাপ মাপতে গিয়ে হাইপারটেনশন ধরা পরে। সে কারণে প্রতিটি পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির প্রতিবছর অন্তত একবার করে রক্তচাপ মাপা উচিৎ।
শুনলে আশ্চর্য লাগবে, ভারতবর্ষের জনসংখ্যার প্রায় ত্রিশ শতাংশ মানুষের হাইপারটেনশন আছে। অর্থাৎ প্রতি তিনজন মানুষের মধ্যে একজনের রক্তচাপ বেশি থাকে। গ্রামের মানুষদের থেকে শহরের মানুষদের মধ্যে হাইপারটেনশনের প্রাদুর্ভাব অনেক বেশি। এ থেকে বোঝা যায় হাইপারটেনশনের সাথে শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক চাপ অঙ্গাঙ্গী ভাবে যুক্ত। এছাড়াও অজ্ঞাত কারণে ভারতের অন্য অঞ্চলের তুলনায় পূর্ব ভারতের মানুষদের মধ্যে হাইপারটেনশনের রোগী অনেক বেশি।
আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো যাঁদের রোগ নির্ণয় হয়েছে এবং যাঁরা হাইপারটেনশনের জন্য ওষুধ খাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষের চিকিৎসা সত্ত্বেও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে না। ফলে তাঁরা উচ্চ রক্তচাপের জন্য নানারকম সমস্যায় ভোগেন। সেই কারণে শুধু ওষুধ খেলেই হবে না, তার সাথে নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করাও জরুরি। আর যাঁদের হাইপারটেনশন আগে থেকে নির্ণয় হয় না, তাঁরা হঠাৎ করে হার্ট এটাক বা স্ট্রোকের মতো ভয়ংকর অসুখে আক্রান্ত হন। যার ফলে তাঁদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
হাইপারটেনশনের উপসর্গ
আগেই বলা হয়েছে হাইপারটেনশনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশিরভাগেরই কোনও উপসর্গ থাকে না। রক্তচাপ মাপতে গিয়ে তাঁদের হাইপারটেনশন ধরা পরে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাইপারটেনশনে আক্রান্ত ব্যক্তি চিকিৎসকের কাছে নিম্নলিখিত উপসর্গ গুলি নিয়ে আসতে পারেন।
- মাথা বা ঘাড়ে ব্যথা।
- দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া।
- মাথা ঘোরা।
- অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে যাওয়া।
- বুকে ব্যথা।
- বুক ধড়ফড় করা।
- কানের মধ্যে বা ঘাড়ে দপদপ করা।
- নাক দিয়ে রক্ত পরা ইত্যাদি।
তবে আরেকবার একই কথা বলতে চাই, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হাইপারটেনশনের কোনও উপসর্গ থাকে না। তাই ২০ বছর বয়সের পর থেকেই প্রত্যেকের অন্তত বছরে একবার রক্তচাপ মাপা উচিৎ। রক্তচাপ মাপা ছাড়া আর অন্য কোনও উপায়ে হাইপারটেনশন নির্ণয় করা সম্ভব নয়।
কাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত রক্তচাপ মাপতেই হবে?
- ডায়াবেটিস রোগী।
- আগে স্ট্রোক হয়েছে এমন রোগী।
- আগে হার্ট এটাক হয়েছে এমন রোগী।
- কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত রোগী।
- স্থূল ব্যক্তি।
- তামাকের নেশায় আক্রান্ত ব্যক্তি।
- পরিবারে অন্য কারো হার্টের অসুখ বা স্ট্রোকের ইতিহাস থাকলে।
প্রথম অবস্থায় হাইপারটেনশন ধরা পড়লে এবং প্রথম থেকেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে দীর্ঘ সুস্থ জীবন কাটানো সম্ভব। তাই কোনও সমস্যা না থাকলেও প্রথম থেকেই খাদ্যাভ্যাস পাল্টানো, ব্যায়াম ও ওষুধপত্রের মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিৎ। মনে রাখতে হবে হাইপারটেনশন হলো নিঃশব্দ ঘাতক। চিকিৎসায় কোনও রকম গাফিলতি করলে এই রোগ হঠাৎ করে মৃত্যু বা পঙ্গুত্বের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
আমার বয়স 39 বছর… আমার রক্তচাপ ওষুধ খেয়েও 130/95 mm of Hg তে দাঁড়িয়ে আছে… আমার কী আরো রক্তচাপ কমানোর প্রয়োজন আছে?
আমার বয়স 39 বছর… আমার রক্তচাপ 130/95 mm of Hg.. আমি নিয়মিত ওষুধ খাই, এরপরেও কী রক্তচাপ কমানোর ওষুধ খেয়ে যেতে হবে?
ডায়াস্টোলিক প্রেশার আরো কমানোর প্রয়োজন। ৮৫ মিমি মারকারির নীচে রাখা উচিৎ।
স্যার, আপনার সাথে জানতে থাকলাম……… আমার এক ছাত্রীর দীর্ঘ ৬ মাসের বেশি সময় ধরে হার্ট-বিট যথেষ্ট বেশি| মেয়েটি দীর্ঘ ১ বছর হলো সংসার বিচ্ছিন্না| স্বামী পরিত্যক্তা(স্বামীর পরকীয়ার কারণেই)| মায়ের ক্যানসার| বাবা ছোট বেলা থেকেই মা-মেয়ে রেখে পলাতক| দিদিমাই মানুষ করেছে| আমি বারাসাত থাকাকালীন ওকে কয়েক বছর পড়িয়েছিলাম| খুব ভালো স্টুডেন্ট| যাইহোক দীর্ঘদিন অনিশ্চিত জীবন, দুঃশ্চিন্তা, মা -দিদাকে নিয়ে টিউশন পড়িয়ে চলছে ওর| এমতাবস্থায় শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে, সাথে বেশি হার্টবিট| স্যার, এ ব্যাপারে আপনার পরামর্শ পেলে ভালো হয়| খুব অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যে দিয়েও যাচ্ছে ও|
এক্ষেত্রে নিকট বর্তী হাসপাতালে দেখানো উচিৎ। মেয়েটি সম্ভবত মানসিক উৎকন্ঠায় ভুগছে, তার থেকেও এমন হতে পারে। কিন্তু রোগীকে পরীক্ষা না করে, না দেখে কোনো কিছু বলা উচিৎ নয়।
Thank you Sir.