হাইপারটেনশন ও কিডনি
হাইপাটেনশনের জন্য কিডনির সমস্যা বা নেফ্রোপ্যাথি হয়। আবার কিডনির সমস্যার জন্যও হাইপারটেনশন হয়। কিডনির অসুখই সেকেন্ডারি হাইপারটেনশনের প্রধান কারণ।
দীর্ঘ দিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত হাইপারটেনশন রেনাল ফেলিওর ও এন্ড স্টেজ রেনাল ডিজিজের কারণ হতে পারে। যাদের কিডনি আক্রান্ত হয় তাঁদের হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেড়ে যায়। হাইপারটেনশনের সাথে ডায়াবেটিস থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। কারণ দুটিই নেফ্রোপ্যাথির প্রধান কারণ।
কিভাবে বোঝা যাবে কিডনি খারাপ হচ্ছে?
অধিকাংশ মানুষই জানেন ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়া মানে কিডনি খারাপ হওয়া। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে অন্তত ৯০% কিডনির কার্যক্ষমতা নষ্ট হওয়ার পরেই তবে ক্রিয়েটিনিন বাড়তে শুরু করে।
একবার ক্রিয়েটিনিন বাড়তে শুরু হওয়া মানে অন্তত ৯০% কিডনির কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে। তখন হাজার চিকিৎসা করলেও কিডনি আগের অবস্থায় ফেরে না। আস্তে আস্তে এর কার্যক্ষমতা আরও হ্রাস পায়।
অতএব হাইপারটেনসিভ নেফ্রোপ্যাথিকে প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করার জন্য আমাদের আলাদা পরীক্ষার প্রয়োজন। এক্ষেত্রে দুটি পরীক্ষা করা যায়। দুটি পরীক্ষাতেই নির্ভর করা হয়, আমাদের মূত্রে কি পরিমাণ এলবুমিন বেরোচ্ছে তার উপর। কিডনির কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক থাকলে মূত্রে কোনো এলবুমিন বেরোয় না।
১. ২৪ ঘণ্টার মূত্রে এলবুমিনের পরিমাপঃ এক্ষেত্রে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মূত্র একটি পাত্রে সংগ্রহ করা হয়। তারপর সেই মূত্রে এলবুমিনের পরিমাণ পরিমাপ করা হয়।
৩০- ২৯৯ মিগ্রা/ডেসিলি= মাইক্রোএলবুমিনিউরিয়া।
>৩০০ মিগ্রা/ডেসিলি= ম্যাক্রোএলবুমিনিউরিয়া।
২. স্পট ইউরিনে এলবুমিন ক্রিয়েটিনিন রেসিও বা এ সি আরঃ এক্ষেত্রে যেকোনো সময়ে দেওয়া মূত্রের নমুনায় এলবুমিন ক্রিয়েটিনিন রেসিও বার করা হয়।
৩০- ২৯৯= মাইক্রোএলবুমিনিউরিয়া।
>৩০০= মাইক্রোএলবুমিনিউরিয়া।
যেহেতু এই পরীক্ষায় সারাদিন ধরে মূত্র জমিয়ে রাখার দরকার নেই তাই এ সি আর পরীক্ষা বেশি জনপ্রিয়।
মাইক্রোএলবুমিনিউরিয়ার রোগীদের চিকিৎসার মাধ্যমে এই স্তরেই আটকে রাখা যায়, অথবা এলবুমিন বেরোনো বন্ধ করে ভালো করে তোলা যায়। কিন্তু একবার মাইক্রোএলবুমিনিউরিয়া হলে তা অপরীবর্তনশীল। আস্তে আস্তে রোগী রেনাল ফেলিওরের দিকে এগিয়ে চলে এবং ৭-১০ বছরের মধ্যে তাদের রেনাল ফেলিওর হয়।
চিকিৎসাঃ
১.রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা। (< ১৩০/৮০মিমি এইচজি)
২. ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের গ্লূকোজ ঠিক রাখা।
৩.রক্তের কোলেস্টেরল ঠিক রাখা।
৪.এছাড়াও কিছু ওষুধ পত্র মাইক্রোএলবুমিনিউরিয়াকে ঠিক করতে পারে।
৫.আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশানের গাইডলাইন অনুযায়ী নেফ্রোপ্যাথি রোগীদের খাদ্যে প্রোটিন কম করা উচিৎ।
মাইক্রোএলবুমিনিউরিয়ার ক্ষেত্রে প্রতিকেজি দেহের ওজনের জন্য প্রতিদিন ০.৮- ১ গ্রাম প্রোটিন।
ম্যাক্রোএলবুমিনিউরিয়ার ক্ষেত্রে প্রতিকেজি দেহের ওজনের জন্য প্রতিদিন <০.৮ গ্রাম প্রোটিন।
কিন্তু একবার মাইক্রোএলবুমিনিউরিয়া হলে তা অপরীবর্তনশীল।
– eta ki macro habe?