খাদ্য
হাইপারটেনশন প্রতিরোধে এবং হাইপারটেনশনের চিকিৎসায় ওষুধপত্রের সাথে সাথে খাদ্য ও শরীরচর্চার যথেষ্ট ভূমিকা আছে।
যেসব খাবার উপকারীঃ
হাইপারটেনশনে তাজা ফল যেমন- লেবু, পেয়ারা, আমলকী, কামরাঙা, আপেল, কমলা, পেস্তা, বাদাম, ডালিম, কলা, নাশপাতি, পেঁপে ইত্যাদি নিয়মিত খেতে হবে।
এ ছাড়া সবুজ শাকসবজি যেমন- প্রায় সব ধরনের সবুজ শাক (পালংশাক, কলমিশাক, মুলোশাক, পাটশাক ইত্যাদি) এবং বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, শসা, মুলা, লাউ, মটরশুঁটি, ঢেঁড়স, বেগুন, কুমড়ো ইত্যাদি। এ ছাড়া খেতে পারেন প্রোটিন জাতীয় প্রায় সব ধরনের খাবার (চর্বিযুক্ত মাংস, চিংড়ি ও ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে)।
যেসব খাবার উচ্চ রক্তচাপের রোগীর পরিত্যাগ করা উচিতঃ
১. লবণ এবং বেশি লবণযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। এর সঙ্গে বিট লবণ এবং অন্যান্য মুখরোচক লবণ গ্রহণ করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। সাধারণত উচ্চরক্তচাপে সারাদিনের ৫- ৬ গ্রামের বেশি লবণ গ্রহণ করা উচিৎ নয়(এক চা চামচ)।
২. অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার- কেক, পেস্ট্রি, নুডলস, পরোটা, লুচি, আইসক্রিম ইত্যাদি খাওয়া যাবে না।
৩. ডিমের কুসুম, খাসির মাংস, গরুর মাংস ইত্যাদি খাওয়া যাবে না।
৪. চাটনি অর্থাৎ আচার খাওয়া যাবে না। কারণ আচারে প্রচুর তেল ও লবণ ব্যবহার করা হয়; যা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য খুবই ক্ষতিকর।
সারাদিনের খাবারে পটাশিয়াম জাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়াতে পারলে উচ্চ রক্তচাপের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়। সাধারণত ডাবের জল, কলা ও সবজিতে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে।
DASH ডায়েট(Dietary Approaches to Stop Hypertension) কি?
আমেরিকার ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথ, হাইপারটেনশন প্রতিরোধের জন্য এই রকম খাদ্যের প্রচলন করে। এই ডায়েটে প্রচুর সব্জি, ফল, গোটা দানাশস্য, কম স্নেহ পদার্থ যুক্ত দুগ্ধজাত খাদ্য থাকে। তাছাড়াও মাছ, মুরগীর মাংস, বাদাম এবং বিন থাকে। চিনি ও উচ্চ ক্যলোরির শর্করাজাতীয় খাদ্য, এবং উচ্চ পরিমাণ স্নেহ পদার্থ যুক্ত খাদ্য(যেমন রেড মিট) পরিহার করা হয়।
একথা মনে রাখতে হবে হাইপারটেনশনের সাথে অনেক সময় রোগীর ডায়াবেটিস এবং ডিসলিপিডেমিয়া থাকতে পারে। ডায়েট চার্ট বানানোর সময় সেগুলিও মাথায় রাখতে হবে।
বডি মাস ইনডেক্স বা BMI কি?
বডি মাস ইনডেক্স নীচের সমিকরণের দ্বারা বের করা যায়। এর সাহায্যে বোঝা যায় কেউ অতিরিক্ত রোগা বা স্থূল কিনা।
বডি মাস ইনডেক্স= দেহের ওজন (কেজি) ÷ {দেহের উচ্চতা (মিটার)}²
• < ১৮.৫০ ………….. ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম।
• ১৮.৫০ — ২৪.৯ ………স্বাভাবিক ওজন।
• ২৫.০০ — ২৯.৯ ……..অতিরিক্ত ওজন।
• >৩০.০০ ………………স্থূলতা
হাইপারটেশনের রোগীদের আদর্শ বডি মাস ইনডেক্স হলো ১৮.৫- ২২.৫। স্থূল ব্যক্তিদের হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়। তাছড়া স্থূল ব্যক্তিদের হাইপারতেনশন থাকলে হৃদরোগের সম্ভাবনাও অনেক বেড়ে যায়। তাই বড়ি মাস ইনডেক্স ২৩এর বেশি হলে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে তা কমানোর চেষ্টা করা উচিৎ।