১০ ফেব্রুয়ারি অভয়া মঞ্চ বৃহত্তর বিধাননগরের পক্ষ থেকে আমরা কয়েকজন রাজারহাট গৌরাঙ্গ নগরের ধর্ষিতা ও খুন হয়ে যাওয়া নাবালিকার বাবা মায়ের সাথে দেখা করতে গেছিলাম। ওনারা বাড়িতে না থাকায় দেখা হয়নি। সেখানেই জানতে পারি ঐ অঞ্চলের শুলুংগুড়ি গ্রামের ১১ বছরের এক নাবালিকা গত ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ থেকে নিখোঁজ।
তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে আমরা হাজির হই নিখোঁজ মেয়েটির বাড়িতে। ওর বাবা মায়ের সাথে কথা বলে জানতে পারি ওনারা ১লা অক্টোবর, ২০২৪ এ থানায় ডায়েরি করেন। প্রথম এক দুমাস থানা তাঁদের কাছ থেকে কিছু খোঁজখবর নেওয়া/ জিজ্ঞাসাবাদ করা ছাড়া আর কিছুই করেনি পুলিশ। এমনকি এফ আই আর হয়েছে কিনা তাও জানেন না। কেননা এফ আই আরের কোন কপি ওনারা পাননি।
মেয়েটির বাবা নির্মাণ শ্রমিক। একটা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গত এক বছর ধরে তেমন কোন কাজ করতে পারেন না। মেয়েটির মা গৃহপরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। ওনাদের ৮ বছর বয়সী আর একটি মেয়েও আছে। আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ মেয়েটির আমরা বাবা মাকে সাথে নিয়ে তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানতে থানায় যাবো স্থির করি। সেই মর্মে আমরা কেন্দ্রীয় অভয়া মঞ্চের সাথে যোগাযোগ করি এবং আহ্বায়কদের মধ্যে অন্তত একজন যাতে আমাদের সাথে থাকেন সেই অনুরোধ করি।
আজ আমরা থানায় গেছিলাম ২৫ জনের একটি দল যাদের মধ্যে অভয়া মঞ্চের সদস্যরা ছাড়াও ঐ পরিবারের প্রতিবেশী ও আত্মীয়রাও ছিলেন। কয়েকজনের প্রতিনিধি দল নিউটাউন থানার আইসির সাথে দেখা করেন। তাঁরা হলেন নিখোঁজ মেয়েটির বাবা মা, পীযূষ রায়, দেবাশিস সিনহা, সুনেত্রা সেনগুপ্ত, শর্মিষ্ঠা বক্সী, তরুণ ব্যানার্জী এবং কেন্দ্রীয় অভয়া মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক মণীষা আদক।
কথা বলে যা বোঝা গেল প্রথম কয়েকদিন একটু নড়াচড়া করলেও অন্যান্য ঘটনার মতো এক্ষেত্রেও পুলিশ খুব বেশী এগোয়নি। আমাদের কথামতো এফ আই আরের কপি বাবা মায়ের হাতে তুলে দেন ওঁরা। আমাদের প্রতিনিধিরা পুলিশের সক্রিয়তা ও তদন্তে গতি দাবি করেন, যাতে মেয়েটিকে বাবা মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া যায়। সাতদিন পরে তদন্তের অগ্রগতি কি হলো তা জানতে আবার আসবেন বলেও জানিয়ে আসা হয়।
গৌরাঙ্গ নগর, শুলুংগুড়ি সহ রাজারহাটের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘিরে দুষ্কৃতীরাজ চলছে। এই ধরনের নানা ঘটনার দৃষ্টান্ত ঐ অঞ্চলে আছে। নিরাপত্তা (বিশেষ করে মেয়েদের) নেই বললেই চলে। অভয়া মঞ্চ বৃহত্তর বিধাননগর আগামীদিনে এলাকার সাধারণ মানুষকে সংগঠিত করে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় অভয়া মঞ্চের সহযোগিতাও প্রত্যাশা করছি আমরা।
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫।
✊✊✊✊