আজ সকাল থেকেই মনটা বেশ ফুরফুরে সুজাতার। আজ ইন্দ্রনীলের সাথে তৃতীয়বার ডেটিং যাচ্ছে সে! বিকেল পাঁচটায় ওরা মিট করবে স্টার থিয়েটার সামনে! সেখানে একটা ‘শো’ দেখার পর দুজনে মিলে ডিসাইড করে চলে যাবে কোনো একটা রেস্ট্রুরেন্টে। সেখানে ডিনার করে ফিরবে, যে যার বাড়িতে! এই মোটামুটি প্ল্যান। তাই সকাল থেকে নিজেকে বেশ গুছিয়ে রেখেছে সুজাতা।
ইন্দ্রনীলের সাথে ওর সম্পর্ক খুব বেশি দিনের নয়!বড়োজোর আড়াই মাস! মেসেজ এই কথা হতো ওদের বেশি! কিন্তু এর মধ্যেই সুজাতার ইন্দ্রনীলকে বেশ মনে ধরেছে! মনে হচ্ছে ওই যেন পারফেক্ট ম্যান! প্রথম দিন তো এত বেশি বকাঝকা করে ফেলেছিলো, যে ইন্দ্রানীল বেশ অপ্রস্তুত হয়ে যায়! যদিও পরে টেক্সট করে ব্যাপারটা সামলে নেয় ও! আজ সে বদ্ধপরিকর! পুরো ভাবে আজ সে ইন্দ্রনীলকে ইমপ্রেস করবেই! আজ মলিকে অনেকক্ষণ ধরে আদর করলো ও! মলি ওর পোষা বিড়ালের নাম! ওর সুখ-দুঃখের সাথী! বাড়িতে কোনও কাজ না থাকলে ও মলির সাথেই অনেকটা সময় কাটায়! দুপুরবেলা ইন্দ্রনীলকে ফোন করে জানিয়ে দিলো আজ যেন সময়ের একটু আগেই এসে যায় ও, কিছু কথা বলার আছে। সাড়ে চারটার সময় স্টারের সামনে এসে সুজাতা ইন্দ্রনীলকে খুঁজে পেলো না!
তখনই মেজাজটা খারাপ হতে শুরু করলো! একা একা এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগে কারও! বার বার করে পই পই করে দিলো পাঁচটার আগে আসতে! তবুও কেন এলো না ছেলেটা! ফোন করে বিজি পাচ্ছে!
প্রচণ্ড বিরক্ত লাগছে সুজাতার। তখন পৌনে পাঁচটা বেজে গেছে! আর মাত্র ১৫ মিনিট বাকি! একা একা দাঁড়িয়ে থাকতে নিজেকে বড্ড অপাংক্তেয় মনে হতো লাগলো ওর! একটু পরে ইন্দ্রনীল মেসেজ করেছে- কলেজ স্ট্রিট এ এক মিছিলে আটকে গেছে! গাড়ি বন্ধ! ও চাইলেও আসতে পারবে না জলদি। সুজাতা ফিরতি মেসেজ পাঠালো- কেন তুমি আগে বাড়ি থেকে বেরোয় নি??
ইন্দ্রনীল ফোন করে সরি চেয়ে নিল! বলল গাড়ি চলা শুরু হয়েছে! আর ১০ মিনিট লাগবে! শেষমেশ যখন ইন্দ্রানীল এসে পৌঁছল তখন ৫ টা ১৫ মিনিট। বাস থেকে নেমেই সে সুজাতাকে দেখতে পায়! ছুটে এসে হাত ধরে।
সিনেমা হলের দিকে এগোতেই হাত এক ঝটকায় ছাড়িয়ে নেয় সুজাতা! প্রচণ্ড রেগে আছে সে। ওর পক্ষে আর এই রাগ চেপে রাখা সম্ভব নয়! সে সাফসাফ ইন্দ্রানীলকে জানিয়ে দিল যদি এইটুকু মিনিমাম দায়িত্ববান সে হয়ে উঠতে পারে যে সময়ের মধ্যে আস্তে পারে না! তাহলে যেন সে আর যোগাযোগ করার চেষ্টা না করে! ইন্দ্রনীল অনেক বোঝাবার চেষ্টা করলো যে ওর কোন দোষ নেই! সে সময় মতই বেরিয়েছে! কিন্তু সুজাতা কিছু যেন বুঝতেই চায় না! রাগে-দুঃখে ওর চোখে জল চলে আসছে! সে ঠিক করে নিল আজকে সে ফিরে যাবে! ইন্দ্রানীলের সাথে থাকা ওর পক্ষে সম্ভব নয়! ওলা বুক করে বেরিয়ে গেলো সুজাতা!হতবাক ইন্দ্রানীল দাঁড়িয়ে রইলো চৌরাস্তার মোরে!
ওদিকে সুজাতার মনের মধ্যে যে কি ঝড় বয়ে যাচ্ছে! তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়! যে দিন শুরু হয়েছিল আলাদা এক সম্ভবনা নিয়ে তাকে নিজে হাতে খুন করলো সুজাতা! অসম্ভব কষ্ট হচ্ছে ওর। আজকে সকালের পারফেক্ট ম্যান ইন্দ্রনীল এখন ওর প্রচন্ড ইরিটেশনের কারণ! আজ বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে আলাদা করে সিগারেট খেতেই হবে ! নতুবা এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি নেই! আজ ইন্দ্রনীলকে অনেক কিছু বলার ছিল ওর! কিন্তু কি যে হয়ে গেলো! কিছুতেই ইন্দ্রনীলকে আগের অবস্থানে বসাতে পারছে না ও! ফোন বন্ধ করে রেখেছে সে! ইন্দ্রের সাথে কথা বলার মতো ক্ষমতা ইচ্ছে কোনটাই ওর নেই! মনটা যেন একদম ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে! রাগ, দুঃখ, বিতৃষ্ণা, প্রশ্ন সব মিলেমিশে ভিড় করছে একসাথে! সমস্ত কিছুর মধ্যে কষ্টটাই যেন বেশি বুকে বিঁধছে! বালিশে মুখ গুঁজে কেঁদে যাচ্ছে সুজাতা! এই বেপরোয়া মনের রাশ ওর হাতে নেই!
ওপরের ঘটনাটি, কোনো গল্প নয় সেই অর্থে! একটি মানসিক সমস্যাকে তুলে ধরার চেষ্টা মাত্র! যা হল Fear of abandonment, সুজাতার জীবনে এটাই একমাত্র ঘটনা নয়! শুধু অপেক্ষা নয়! অনেক কিছুতেই ওর এই সমস্যা হয়! সেই উদাহরণ আরো অনেক দেওয়া যায়! কিন্তু তা দিয়ে লেখা আকর্ষণীয় করতে চাই না!
তাহলে সরাসরি আলোচনায় আসা যাক। সুজাতার যে সমস্যাগুলো উপরের আলোচনায় উঠে এসছে তা হল
এক ধরনের Personality Disorder-এর সমস্যা! যার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কে স্থায়িত্বের অভাব! ইম্পালসিভিটি, ঘন ঘন মুড সুইং করা, মুহূর্তের মধ্যে কাউকে খুব ভালো থেকে খুব খারাপ ভেবে নেওয়া এই সব মিলিয়ে- এক বিশেষ ধরনের পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার!
Borderline Personality Disorder (BPD)
আসলে পারসোনালিটি বলতে ঠিক কি বোঝায় তা বলা খুব শক্ত! খুব প্রাচীন কাল থেকেই মানুষের পারসোনালিটিকে বিভিন্ন ভাবে ভাগ করা হয়েছে। সুপ্রাচীন গ্রিক, ভারত, মধ্য ইউরোপ সবেতেই এর বর্ণনা খুঁজে পাওয়া যায়! গুরুত্বপূর্ণ হল Personality Traits- যা কিনা প্রত্যেকের নিজস্ব অনুভুতির ধরন, কোনও জিনিস উপলদ্ধি (Perceiving) করার চিন্তার ধরন, যা থেকে তার সেলফ (Self) ও আসেপাশের পরিবেশ নিয়ে নিজস্ব মতামত তৈরি করে, যা কিনা বিকশিত ও প্রকশিত হয় বিভিন্ন রকম সামাজিক ও পার্সোনাল পরিব্যাপ্তিতে!
আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই বিভিন্ন Personality Traits (বৈশিষ্ট্য) থাকে! এখন এই বৈশিষ্ট্যগুলো যখন বিভিন্ন ধরনের পার্সোনাল ও সামাজিক পরিস্থিতিতে অনমনীয় হয়ে যায় ও মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে গণ্ডগোল হয় তখনই পারসোনালিটি ডিসঅর্ডারের সূত্রপাত!
DSM 5-এ ‘পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার’-এর যে সংজ্ঞা আছে তা খানিকটা এরকম – দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকা একটা প্যাটার্ন যা মানুষের আভ্যন্তরীণ অনুভুতি এবং বাইরের আচরণকে চিহ্নিত করে, যা কিনা একজনের আকাঙ্খিত কালচারের চেয়ে অনেকটাই আলাদা হয়ে যায়, যা হয় অনমনীয়ও, যা শুরু হয় কৈশোর এর শেষ থেকে, স্টেবল হয় সময় ধরে, যা কিনা তীব্র ব্যাঘাত ঘটায় একজনের আন্তঃব্যক্তিগত সম্পর্কে এবং সামাজিক ও কাজের জায়গার পরিচিতিতে।
থিওরি অফ পারসোনালিটি বলে অনেক আলোচনা রয়েছে। সেই আলোচনা এই লেখার পরিসরের বাইরে।পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার এর ক্ষেত্রে দু ধরনের Approach এর কথা মুলত বলা হয়। এক Idiographic যেখানে আলাদা রকমভাবে Unique বৈশিষ্ট্যকে খোঁজা হয়। সিগময়েন্ড ফ্রয়েড এবং হিউম্যান্সিটিক সাইকোলজিস্টরা মুলত এই ধারার লোক। Gordon Allport এর খুব উল্লেখযোগ্য! অন্যদিকে Nomothetic approach যেখানে অনেক ডাটা এবং তথ্য মিলিয়ে মানুষের পারসোনালিটিকে আলাদা করা হয়! এটি অনেক বেশি বৈজ্ঞানিক ও বায়োলজিক্যাল apporach নিয়ে, এটি অনেক বেশি Evidence Based, এর মধ্যে পড়ে Eysenck Personilty Test এবং Cloninger এর 7-Dimensional Model। পারসোনালিটি ডিসঅর্ডারের প্রিভ্যালেন্স কিন্তু অনেক বেশি ১০ থেকে ২০ %।আউটডোরে বা ইনডোরের সাইকিয়াট্রিক রোগীর প্রায় ৫০% পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার। অন্যদিকে Borderline Personality Disorder পপুলেশানের ২%, সাইকিয়াট্রিক আউটডোরের ১০%, সাইকিয়াট্রিক ইনডোরের ২০% রোগীর মধ্যে থাকে। রোগীদের মধ্যে প্রায় ৭৫% মেয়েরা, কিন্তু তাই বলে ছেলেদের বর্ডারলাইন ডিসঅর্ডার হতে পারে না এমনটাও নয়!
কি করে Borderline Personality Disorder এর ৯ টি Traits বুঝবো??
১) সবসময় একটা পরিত্যাগের ভয় (Fear of abandonment) যা কিনা হতে পারে বাস্তব অথবা নিজের মতো কল্পিত এবং তাকে প্রবল ভাবে এড়ানোর চেষ্টা! । কল্পিত মানে বলতে চাইছি যদি কারও কোন বন্ধুর সাথে কোন তর্ক হয় এবং তার পরেই নিজের মনে মনে ভাবতে শুরু করে ও আমার সাথে বন্ধুত্ব আর রাখবে না!
সবসময় একটা রিজেকশানের উপলদ্ধি এদের গ্রাস করতে থাকে! ও আমাকে ভালোবাসে না, ও আমাকে ছেড়ে চলে যাবে, ও থাকবে না আমার সাথে, তুমি কখনো কেয়ার করবে না! এই চিন্তার মধ্যে ডুবে থাকতে শুরু করে! এবং তাই বার বার আশ্বাস (Reassurance) এর চাহিদা থাকে অপর জনের থেকে! আসেপাশের পরিবেশের বিভিন্ন ছোট-খাটো ঘটনাও খুব বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে!
প্রিয় বন্ধুদের যদি কেউ কোন appointment এ একটু দেরি করে আসে, কোনো থেরাপিস্ট যদি সেশান শেষ হয়ে যাওয়ার কথা বলে, আগে থেকে ঠিক করে রাখা প্ল্যান যদি একটা গুরুতর অনিবার্য কারণে বাতিল করতে হয় তাহলে হঠাৎ করেই এনাদের মধ্যে এক সাংঘাতিক রাগ ও কষ্টের জন্ম হয়! এই পরিত্যাগের ভয় থেকেই বেশিক্ষণ একা না থাকার প্রবণতা এদের মধ্যে শুরু হয়!
এবং শুধুমাত্র গভীর বা খুব কাছের সম্পর্কের ক্ষেত্রেই যে এটা হবে তা নয় সাধারণ বন্ধুত্বের সম্পর্কেও হতে পারে!
২) স্থায়িত্বহীন এবং তীব্র এক আন্তঃপারস্পরিক সম্পর্কে বারবার জড়িয়ে পড়া এবং চূড়ান্তভাবে Idealisation ও Devaluation করা। সম্পর্ক শুরুর প্রথম দিকে অপরজনকে সবচেয়ে ভালো মানুষ ভাবা, ২৪ ঘণ্টা একসাথে থাকার ডিম্যান্ড করা, সব গুরুত্বপূর্ণ সবচেয়ে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ডিটেলিং বলে দেওয়া বা খুব ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত শেয়ার করা। ! হঠাৎ করেই প্রচণ্ড ঝগড়া ফালতু জিনিস নিয়ে, কান্নাকাটি, সিন ক্রিয়েট, রাগ দেখানো এবং অপরজনকে নিকৃষ্ট মনে করতে শুরু করা! কিছুদিন পরেই বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া শুধু যে প্রেমের সম্পর্কের ক্ষেত্রেই হবে তা ফ্যামিলি বাবা-মা বন্ধুত্ব কাজের জায়গায় সবেতেই হতে পারে!
৩) Indentity Disturbance- নিজেদের আত্ম-পরিচিতি ( Self-Image ) সবসময় বিকৃত (Distorted) ধরনের থাকে, নিজেদের সেলফ নিয়ে একটা স্থিতিশীল ভাবনা কখনই এদের মধ্যে থাকে না! সব সময় ‘Who am I??’ এই প্রশ্ন কাজ করতেই থাকে! তাই দেখা যায়
হঠাৎ করেই এনারা নিজেদের কেরিয়ার অপশান, বন্ধু, জীবনের উদ্দেশ্যে নাটকীয় ভাবে চেঞ্জ করে নেয়! এদের সেলফ-ইমেজ এতোটাই ভঙ্গুর থাকে যে আমি কি সেটা বলে উঠতে পারে না বাইরে! নিজেকে নিয়েই সারাক্ষণ ধন্ধে থাকা! অনেকেই নাম ঘন ঘন চেঞ্জ করতে থাকে! নিজেদের আউটলুক চেঞ্জ করে নেয়, হঠাৎ করেই একদিন চুল কেটে ফেলা বা কালার করে ফেলা, এখানে ওখানে ট্যাটু করে ফেলা বা পিয়ারসিং করিয়ে নেওয়া।
আসলে পুরনো সেলফ ভেঙ্গে নতুন সেলফে আসার এই ব্যর্থ চেস্টা চলতেই থাকে! তাই কারও যদি এই Traits অনেক বেশি Dominating হয় তাহলে অনেক সময়ই Multiple Personality Diosorder এর মতো মনে হতে পারে! (বলে রাখা ভালো চুল কেটে ফেললেই আর ট্যাটু পিয়ারসিং করলেই যেন তাকে Borderline Traits বলে মনে না করি )
৪) Impulsivity (ইম্পালসিভিটি)- অন্য কোনও প্ল্যান ভাবার সুযোগ না দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি একটা কাজ শুরু করে দিয়ে যার ফলাফল খুব মারাত্বক হতে পারে!
চারটির মধ্যে অন্তত দুটি ক্ষেত্রে যেখানে নিজেকে ক্ষতি করার চান্স আছে সেই সব জায়াগায় ইম্পালসিভিটি দেখানো- এক-শপিং, দুই- মাদকদ্রব্য গ্রহণ, তিন- যৌন সম্পর্ক, চার-Binge Eating (অনিয়ন্ত্রিত খাবারের প্রবনতা)।
৫) ঘন ঘন মুড (Mood) সুইং এবং মুডের অস্থিতিশীল আচরণ (Affective Instability) এই রোগের এই রোগের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। প্রচণ্ড ইরিটেবল, ডিসফোরিক, অ্যাংসাইটি মুড একদিনের মধ্যেই দেখা যেতে পারে। একঘণ্টার মধ্যে এক মুড থেকে আর এক মুডে চলে যেতে পারে! আসলে নিজেদের ইমোশানকে নিয়ন্ত্রন করার চাবকাঠি এনাদের নিজেদের কাছে থাকে না, বড্ড বেশি ঘটনা নির্ভর ইমোশান তৈরি হয়!এ বং এনারা নিজের ইমোশানের উপর খুব সহজেই অ্যাক্ট করে ফেলেন!
উপরের দুটি বৈশিষ্ট্য (৪ আর ৫) কারও বেশি থাকলে কিন্তু বাইপোলার ডিসঅর্ডার ম্যনিক এপিসোড এর মতো মনে হতে পারে! কিন্ত মনে রাখতে হবে ম্যানিয়াতে কিন্তু অনেক বেশি সময় (৭ দিন) ধরে এই মুডের ওঠানামা হয়, একদিনের মধ্যে নয়!
৬) বারাবার Suicidal অ্যাটেম্পট, Suicidal থ্রেট করা। বার বার নিজেকে ক্ষতি করার কাজ করতে থাকা! সেই Fear of abandonment কে avoid করার চেষ্টা! যদি তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যায় আমি সুইসাইড করে নেবো- একটা কাছে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা! হাতের Flexor Surface উপর (খুব গভীরে নয়) দিয়ে বার বার কাটা, বার স্লিপিং পিলস খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া! অনেকেই স্লিপিং পিলস খাওয়ার সময় ফোন করে অন্যদের জানায়! তখন তারা এসে হাজির হয়! এবং পরিত্যাগের ভয় কাটে! একইসঙ্গে তারা বেঁচে থাকার ইচ্ছে এবং কষ্ট সহ্য করতে না পেরে মরে যাওয়ার আচরণ কাজ করতে থাকে! এনাদের মধ্যে তাই সুইসাইডাল অ্যাটেম্পটের হার খুব বেশি। অনেক ক্ষেত্রেই এটি কিন্তু ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে! কারণ মুহূর্তের ভুলে যদি বেশি পিলস খেয়ে নেয়, হাতের আর্টারি কেটে যায়, কিম্বা গলায় ফাঁসটা ঠিক করে বসে যায় তাহলেই কিন্তু সর্বনাশ!
এবং দেখাও গেছে পুরোপুরি সুইসাইডের ইচ্ছে না থাকলেও Suicidal অ্যাটেম্পটের ক্ষতিতে অনেকেই মারা যান! তার হার ৮-১০%। তাই ট্রিটমেন্টের দিক থেকে এই Traits কে অ্যাড্রেস করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৭) অনেকক্ষণ ধরে একটা খালি বা শূন্য মনের মধ্যে থাকা (Feelings of Emptiness)! আমার ভেতরে কিছু নেই।ফাঁকা। এটাকে ফিল আপ করার জন্যেই নিজেকে সারাক্ষণ কারও সঙ্গে ব্যস্ত রাখা, জিনিসপত্র কেনা, খাবার খাওয়া এই গুলো করে সেই শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা করা! এবং সারাক্ষণ সেই ড্রাইভ এর মধ্যে থাকা যে আমাকে এই Emptiness কাটাতেই হবে! না হলে কোলাপ্স করে যাবো!
৮) অসঙ্গত, অযথা প্রচণ্ড রাগ দেখিয়ে ফেলা এবং নিজের রাগ বা ক্ষোভকে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারা! খুব অল্প কারণেও অনেক বেশি রাগ দেখিয়ে ফেলা! অনেক সময়েই শারীরিকভাবে লড়াই শুরু করে দেয়! তাই বারবার Anger Outburst এর পর একটা অপমানবোধ (Guilt) আর লজ্জা (Shame) এর ফিলিং কাজ করতে থাকে এবং নিজের সেলফ-কে আবার এভিল মনে হতে শুরু করে!
৯) খুব অল্প সময় ধরে একটা সন্দেহজনক চিন্তা, Dissociative symptoms বা স্ট্রেস সম্পর্কিত রিয়েকশ্যান হতে পারে! মানে খুব স্ট্রেস বা কনফ্লিক্ট এর মধ্যে থাকলে সাইকোটিক সিম্পটোম (Reality distortion) হতে পারে! Paranoid Ideation খুব অল্প সময়ের জন্যে তৈরি হয়! যাকে বলে মাইক্রোসাইকোটিক এপিসোড! কিন্ত ওভারঅল ডায়াগনোসিসের এর ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব কম।
এগুলো বাদেও আরও কিছু সিম্পটম দেখা যেতে পারে যেমন কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার ঠিক আগেই নিজেকে সরিয়ে নেওয়া! গ্র্যাজুএশান সম্পূর্ণ হবার আগেই কলেজ বা স্কুল থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া! অনেক সময়েই ‘না- মানুষ; জিনিস এর সাথে খুব গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়! যেমন নিজের পোষা বিড়াল বা পেট, কিম্বা কোন ঘরের উপকরণ–এদের সঙ্গে তীব্র অ্যাটাচমেন্ট ফিল করা!
উপরের ৯ টার মধ্যে ৫ টা থাকলে আমরা তার ডায়াগনোসিস নিয়ে ভাবতে পারি! মনে রাখতে হবে এই Diagnostic Guideline গুলো ট্রিটমেন্ট করাবো বা কি করাবো তার জন্যে বেশি আরোপিত! কাউকে ‘বর্ডারলাইন’ বলে দাগিয়ে দেওয়ার জন্যে নয়! দেখা গেছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার এবং সাবস্টান্স ইউস ডিসঅর্ডার খুব কমন দুটি রোগ যা এর সাথে একই সঙ্গে সহবস্থান করে (অর্থাৎ কিনা কো-মরবিডিটি)।
মোটামুটি অ্যাডোলেসেন্ট পিরিয়ড থেকে এই পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে থাকে! ১৮ বছর হবার আগে একে আলদা করে চিহ্নিত করা হয় না! প্রথম দিকটায় সমস্যাগুলো তীব্র আকারে সামনে এসে হাজির হয়! মুলত যৌবন কালের শুরুর দিকটায়! বেশির ভাগ লোকেরাই ৩০- ৪০ বছরের মধ্যে নিজের আন্তঃপারস্পরিক সম্পর্ক ও পেশামূলক কাজে এক ধরনের একটা স্টেবিলিটি অ্যাচিভ করে ফেলেন!
Borderline Personality Disorder কেন হয়?
এর জবাব সহজ ভাষায় দেওয়া খুব মুশকিল! কোনো নির্দিষ্ট কারণ এখনও বলা যাচ্ছে না! এক, ছোটবেলায় কোন বড়ো ধরনের ট্রমা (মূলত- Sexual, Physical, Verbal Abuse) দুই, কিছু ভালনারেবেল ফ্যাক্টর (মূলত বায়োলজিকাল- যা এখনও সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না) আর তিন, পর পর চলতে থাকা কিছু ট্রিগারিং ঘটনা – এইগুলো একসঙ্গে মিলে (জিন ও পরিবেশের Interaction) এই ধরনের পারসোনলিটি ডিসঅর্ডার তৈরি করতে পারে!
Borderline কথাটা এই অর্থে ব্যবহার হয় যে এটি সবসময় Neurosis আর Psychosis মাঝামাঝি বর্ডারে থাকে! এদের মধ্যে Splitting ডিফেন্স মেকানিসম খুব ব্যবহার হয়- সবাই খুব ভালো নয়তো খুব খারাপ! ১৯৩৮ সালে Adolph Stern এই বর্ডারলাইন টার্ম সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন! কিন্তু Otto Kernberg এর নাম খুব গুরুত্বপূর্ণ ভাবে উঠে আসে যিনি পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার হিসেবে বর্ডারলাইনকে বর্ণনা করেন! Theodore Millon আমেরিকান সাইকোলজিস্ট Borderline Personality Disorder-কে আবার চার রকম ভাগে ভাগ করেন! যদিও DSM 5 একে এখনও অবধি স্বীকৃতি দেয় নি!
কখন একজন বর্ডারলাইন পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করব??
যে কোন পারসনালিটি ডিসঅর্ডার সাধারণত আউটডোর বেসিস এই ট্রিটমেন্ট হয়! কিন্তু বর্ডারলাইন পারসনালিটি ডিসঅর্ডার একদিক থেকে একটু ইউনিক- যেখানে একসঙ্গে Suicidal attempt, তীব্র ইম্পালসিভিটি, মুড সুইং, Anger Outbrust একসঙ্গে হয়!
তাই নিম্নলিখিত পরিস্থিতে রোগীকে ভর্তির কথা ভাবতে পারি-
১) অনেকদিন ধরে যার সাংঘাতিক রকমের নিজেকে ক্ষতি করার চেষ্টা করে (Deliberately Self Harming Behaviour) যাচ্ছে!
২) নিজের উপর কনট্রোল থাকছেনা ইম্পালসিভিটি অনেক বেড়ে গেছে!
৩) ঘন ঘন মাইক্রো-সাইকোটিক এপিসোড হচ্ছে!
৪) যখন অন্য কোনো সাইকিয়াট্রিক কো-মরবিডিটি থাকে যেমন সিভিয়ার ডিপ্রেশান বা বাইপোলার ডিসঅর্ডার।
৫) যখন কেউ মাদকদ্রব্য এ আসক্ত হয়ে পড়েন!
সুজাতার সাথে আমার দেখা হয়েছিল প্রায় দু’বছর পরে! সার্জারি বার্ন ইউনিটে। প্রায় ৭৫-৮০% বার্ন নিয়ে ভর্তি হয় ও! একদিন মায়ের সাথে বিকেলের দিকে খুব ঝামেলা হয় ওর! দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে ও চিৎকার করে বলতে থাকে- ‘তুমি আমাকে একটুও পছন্দ কর না! আমি জানি তুমি আমার কথা একটুও ভাবো না! আমি আজ মরে যাবো।গায়ে দেবো আমি’ এই বলে দেশলাই জ্বালায় ও। ওদিকে মা দরজা ভাঙ্গার উপক্রম করছে! সুজাতা জানি না তখন ঠিক কি ভেবেছিল! হয়তো বা মাকে একটু ভয় দেখিয়ে কাছে পেতে চেয়েছিল! তাই ওড়নার কোনায় একটু আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে চেয়েছিল! কিন্ত ওড়না তে আগুনটা খুব বেশিই লেগে যায়! ও বুঝতে পারেনি ওড়নার একটা দিক ওর কোমরে বাঁধা ছিল! আগুনটা ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেহে! প্রচণ্ড চিৎকারে ঝলসে যায় সুজাতা।
মা দরজা ভেঙ্গে ঢুকে ঝলসানো মেয়েকে নিয়ে ছুটে চলে হাসপাতালে! শেষের ৩-৪ দিন খুব কষ্ট পেয়েছিল ও। এতো বেশি বার্ন ইনজুরিতে সারভাইভ করা খুব মুশকিল! শেষের কয়দিন ও শুধু একটাই কথা বলে গেছে- “মা, আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি। আমি আসলে
মরতে চাইনি। আমি তো তোমাকে একটু ভয় দেখিয়ে কাছে পেতে চেয়েছিলাম! আমার খুব কষ্ট হচ্ছে মা, আমি বাঁচতে চাই!”
সুজাতা বাঁচে নি!
যেকোনো পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার এর চিকিৎসা বেশ চ্যালেঞ্জিং! আর বর্ডারলাইন এর ক্ষেত্রে সেই চ্যালেঞ্জ আরও কয়েকগুন বেশি! পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার অ্যাসসেমেন্টের বিভিন্ন টুলস(Tools) হয়। তার মধ্যে এক ধরনের হয় Projective Test Rorschach Test যা একসময় খুব পপুলার ছিল! Thematic Apprception Test আর Sentence completion Test ও ব্যবহার করা হয়! তবে এর ব্যবহার আগের চেয়ে অনেক কম!আর একধরনের হয় Objective Test যার মধ্যে- Starke R. Hathaway, আমেরিকান সাইকোলজিস্ট এবং J.C. McKinley যিনি একজন নিউরো-সাইকিয়াট্রিস্ট। এঁরা দুজনে ১৯৪০ সাল নাগাদ The Minnesota Multiphasic Personality Inventory (MMPI- I) নিয়ে আসেন। যেখানে ৫৫০ টি question আছে!
পরবর্তীতে ১৯৮৯ সালে MMPI- II তৈরি হয় যা ৫৬৭ টি প্রশ্ন নিয়ে। যেখানে প্রতিটি স্টেটমেন্টকে True, False আর Cannot Say তে রেসপন্ড করতে হয়! MMPI- II হল ক্লিনিকাল সাইকোলজিকাল ফিল্ডে তৃতীয় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত Tools. (প্রথম দুটি হল যথাক্রমে IQ Assessment এবং Achievement Test)।
২০০৮ সালে University of Minnesota MMPI- ড়ফ (Restructured Form) প্রকাশ করে যাতে ৩৩৮ টি প্রশ্ন আছে। যেখানে MMPI- II প্রয়োগ করতে ৬০থেকে ৯০ মিনিট সময় লাগে MMPI- RF সময় লাগে ৩৫ থেকে ৫০ মিনিট। University of Minnesota থেকে ২০২০ সালে MMPI- III প্রকাশিত হয়েছে!
১৯৭৮ সালে Costa and McCrae এক ধরনের Personality Inventory নিয়ে আসেন যাকে বলে NEO-PI R । অন্যদিকে ১৯৯০ এর পর থেকে Personality Trait থিওরির হাত ধরে Big Five personality traits এসে হাজির হয়, যার মূল কারিগর ছিলেন সাইকোলজিস্ট Lewis Goldberg। তিনি পারসোনালিটি বোঝাতে পাঁচটা ফ্যাক্টর এর কথা বলেন Extroversion, Agreeableness, Conscientiousness, Neuroticism, Openness to experience (OCEAN Model)। আর রোজকার ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসে যা বহুল প্রচলিত তা হল International Personality Disorder Examination (IPDE), এটি প্রধানত World Health Organisation (WHO) এবং U.S. National Institutes of Health (NIH) তত্ত্বাবধানে DSM-IV TM এবং ICD-10 এর গাইডলাইন মেনে তৈরি।
রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্র খুব ইনটেন্সিভ এবং দীর্ঘস্থায়ী।
সেই অর্থে ড্রাগ থেরাপির খুব একটা বেশি রোল নেই। যদি ডিপ্রেসিভ এপিসোড থাকে তাহলে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট (মূলত SSRI) ব্যবহার করা হয়, যদি মুড সুইং খুব বেশি থাকে তাহলে মুড স্টেবিলাইসার (লিথিয়াম, ভ্যালপ্রোয়েট কিছুদিনের জন্যে) ব্যবহার করা! কখনো সেকেন্ড জেনারেশান অ্যান্টিসাইকোটিক দেওয়া যেতে পারে।
সাইকোথেরাপির গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি! প্রথম দিকে খুব ঘন ঘন সেশান এবং নিয়মিত ভাবে জোরালো একটা থেরাপি এর দরকার হয়!
Marsha M. Linehan একজন আমেরিকান সাইকোলজিস্ট একটি সাইকোথেরাপির মডেল শুরু করেন যা এখন বর্ডারলাইন পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার এর মূল চিকিৎসা- Dialectical Behavioural Therapy (DBT) এটি একটি Cognitive Therapy থেকে জাত তারই অন্য একরূপ!
অনেকের ক্ষেত্রেই সথিকভাবে DBT এর সেশানের মধ্যে দিয়ে গেলে দারুন ফলপ্রসূ হয়!
DBT অনেক বেশি Evidence Based যার এফিকেসি বিভিন্ন র্যানডোমাইজড ক্লিনিকাল ট্রায়াল দিয়ে প্রমাণিত। DBT মূলত চারটি স্টেজে করা হয়-
স্টেজ ১- (Severe Behavioural Dyscontrol) এখানে প্রথমে রোগীকে মিনিমাম স্টেবিলিটিতে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়! রোগীকে নিরাপদ অবস্থানে নিয়ে আসা ও Crisis Intervention এই ধাপের মূল মন্ত্র!
মেজর সমস্যাগুলোকে( suicidal thoughts, self-harm, addiction) কনট্রোল করে সাময়িক কষ্ট লাঘব করা হয়!
স্টেজ ২-(Quiet Desperation) এখানে অনেক বেশি পরিমাণে রোগীকে নিজের ইমোশানের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে সাহায্য করা হয়! মূলত কোন ট্রমা, প্রচণ্ড Emotional Pain ও ট্রিগারিং ফ্যাক্টর গুলোকে ধরতে পারা!
স্টেজ ৩-(Problems in Living) দৈনন্দিন জীবনের গোলগুলো সুনির্দিষ্ট ভাবে ঠিক করা এবং কাজের মধ্যে দিয়ে inner happiness কে প্রমোট করতে সাহায্য করা!
স্টেজ ৪-(Incompleteness) এখানে থেরাপিস্ট সাহায্য করে নিজের চিন্তাভাবনার স্বাধীনতা ও আনন্দকে খুঁজে পেতে। Spirituality এবং নিজের মধ্যে সার্থকতা খুঁজে পেয়ে জীবনে নেক্সট থাপে এগিয়ে যাওয়া এই স্টেজের উদ্দেশ্য!
এছাড়াও Peter Fonagy আর Anthony Bateman দুইজন মিলে Mentalization-based treatment (MBT) এর মডেল নিয়ে আসেন, যা কিনা BPD ট্রিটমেন্ট এ ব্যাবহার করা হয়! এছাড়া Transference-focused প্স্যছথেরাপ্য (TFP) খুব গুরুত্বপূর্ণ! যেখানে DBT তে অনেক বেশি জোর দেওয়া হয় সবচেয়ে ক্ষতিকারক সিম্পটোমগুলোর উপর সেখানে MBT ও TFP তে অনেক বেশি নিজের ইমোশান ও ফিলিংস এর কনট্রোল এর উপর, প্রতিদিনকার গোল সেট করার উপর জোর দেওয়া হয়!
Systems Training for Emotional Predictability and Problem Solving (STEPPS) যা কিনা University of Iowa তে তৈরি হয়, ২০০৫ সালে যেখানে মূলত দুটি স্কেল ব্যবহার করা হয় (BEST) Borderline Evaluation of Severity Over Time এবং Zanarini Rating Scale for Borderline Personality Disorder। তবে যে কোনো রকম থেরাপি শুরু করার ক্ষেত্রেই এদের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে থেরাপিস্টের সাথে সঠিক Therapeutic আল্লাইঞ্চে (চিকিৎসার ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপিস্ট ও রোগীর মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়) তৈরি হতে! তাই শুরুর দিকে সময় একটু বেশি সময় দিয়ে নিয়মিত করার চেষ্টা করা হয়!
আসলে যে কোনো পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে যদি মিনিমাম স্টেবিলিটি তৈরি না হয়! নিজের পছন্দের জায়গাগুলোকে নিয়ে একটা Comfort Zone যদি না তৈরি হয় তবে মুশকিল!
শেষ করব অনুপমের বিখ্যাত গান দিয়ে- ‘আমি নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নিয়েছি’ গানটা নিশ্চয়ই মনে আছে সবার! এই নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নেওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ! যতক্ষণ না নিজেকে এই গুছিয়ে নেওয়ার কাজটা হচ্ছে ততক্ষণ এই অশান্ত উথালপাথাল মনের দিশা খুঁজে পাওয়া কঠিন! এই গুছিয়ে নেওয়ার কাজটায় আপানকে সাহায্য করতে পারে থেরপিস্ট ও সাময়িকভাবে কিছু মেডিসিন।
কাউকে বর্ডারলাইন বলে দাগিয়ে দেওয়া নয়! তাকে যতটুকু পারা যায় ভরসার জায়গায় নিয়ে আসাটাই কাজ! শুরুর দিকে প্রচন্ড নিয়ম করে এবং সাইকোথেরাপির মধ্যে থাকলে একজন মানুষ অবশ্যই নিজের সমস্যা গুলো সনাক্ত করে তাকে মোকাবিলা করতে পারবেন। এই ভরসা আর বিশ্বাস আমাদের প্রত্যেকেই রাখতে হবে!
খুব প্রাঞ্জলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ভাল লাগল।
মধ্যবয়সী মানুষ যার মানসিক চিকিৎসা ব্যাপারটাতেই অনীহা – তাকে কিভাবে সাহায্য করা যায়?
বস্ততঃ, তার কারণে আজ সংসার ভেঙ্গে যেতে বসেছে। সন্তানের সাথেও স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখেনা।
বাস্তবে কারোর সাথে আন্তরিকভাবে মেলামেশা করেনা। কিন্তু আন্তর্জালে মহিলাদের আস্হাভাজন, নিকট বন্ধু এমন আশ্বাস দেয়।
কোন ব্যাপারেই দায়িত্ববোধ করেনা নিজের অফিসের কাজ ছাড়া।
ocd নিয়ে কিছু বলুন .আমি এই সমস্যায় ভুগছি .