আপনি মোটামুটি জেনে গেছেন যে করোনা (এবং অন্যান্য যেকোনো সংক্রমণ) প্রতিরোধে পরিষ্কার করে হাত ধুয়ে ফেলার বিকল্প নেই। এবার আসে পরবর্তী প্রশ্ন- ‘কীভাবে’ এবং ‘কখন’?
না, টিভির পর্দায় এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও যেমন নমঃ নমঃ করে বুড়ি ছোঁয়ার মতো করে হাতে স্যানিটাইজার ঢেলে সামান্য নেড়েচেড়ে নিচ্ছেন তাতে করোনার টিকিটুকুও স্পর্শ হচ্ছে না।
হাত ধোওয়াটাও শিখতে হবে। চমকে উঠবেন না। হাত ধোওয়াটাও শেখার জিনিস।
‘কীভাবে’?
********
প্রথমেই মাথায় রাখুন সাবান আর জল দিয়ে হাত ধোওয়াটাই সর্বোত্তম। বিশেষত যদি হাত খুব নোংরা (রোগীর রক্ত কিংবা দেহরস লেগে থাকা অবস্থায় কিংবা শৌচ করার পর) হয় তাহলে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার বিকল্প নেই। অন্যথায়, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। সাবান দিয়ে হাত ধুলে পুরো পদ্ধতির জন্য সময় লাগবে ৪০-৬০ সেকেন্ড, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ক্ষেত্রে ২০-৩০ সেকেন্ড। দুটি ক্ষেত্রেই পরপর একই রকম পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। চলুন, শুরু করা যাক..
০.
ট্যাপ খুলে ফেলুন। হাত ভালোভাবে ভিজিয়ে নিন। ট্যাপ থেকে অল্প করে জল (সাধারণ ঘরের তাপমাত্রার জল) পড়তে থাকুক। বন্ধ করবেন না।
১.
পরিমাণ মতো সাবান হাতে নিন।
২.
দুই হাতের তালু পরস্পরের সাথে ঘষুন। এতে সাবানের ফেনা তৈরি হবে।
৩.
এক হাতের তালু উল্টোহাতের পেছনের দিকের সাথে ঘষুন। মানে, বাম হাতের তালুর সাথে ডান হাতের উল্টোদিক এবং ডান হাতের তালুর সাথে বাম হাতের উল্টোদিক। আঙুল পরস্পরের মধ্যে ঢুকে থাকবে।
৪.
আঙুলগুলো পরস্পরের মধ্যে ঢুকিয়ে দু’হাতের তালু ঘষুন।
৫.
হাতের আঙুল নিজেদের মধ্যে জুড়ে দিয়ে দু হাতে শেকল বানান। ঘষতে থাকুন। এতে আঙুলের পেছনের দিক পরিষ্কার হবে।
৬.
বুড়ো আঙুল উল্টো হাতের তালুর সাথে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিন।
৭.
এবার নখের অগ্রভাগ পরিষ্কারের পালা। আঙুলগুলো কাছাকাছি এনে নখের আগাগুলো একত্রে উল্টোদিকের তালুতে গোল করে সামনে-পেছনে ঘুরিয়ে পরিষ্কার করুন।
৮.
জলে সাবান ধুয়ে ফেলুন।
৯.
একবার ব্যবহারযোগ্য টিস্যু পেপার দিয়ে হাত মুছে দিন।
১০.
ওই টিস্যু পেপার দিয়েই ট্যাপ বন্ধ করুন। খেয়াল রাখুন, আপনার হাত যেন ট্যাপের হাতল স্পর্শ না করে।
১১.
আপনার হাত সুরক্ষিত।
‘কখন’?
******
১.
রোগীকে স্পর্শ করার আগে।
২.
রোগীর শরীরের কোনও অংশ পরিষ্কার করার সময় কিংবা রোগীর দেহে চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও কাজ করার সময়।
৩.
রোগীর দেহরসের সংস্পর্শে এলে।
৪.
রোগীর দেহ স্পর্শ করার পর।
৫.
রোগীর চারপাশের কোনও জিনিস নিয়ে কাজ করলে।
পুনশ্চঃ
হাতে আংটি, বিপত্তারিণীর তাগা, ডুরি, পীরের কবজ ইত্যাদি থাকলে দয়া করে খুলে ফেলুন। বিপদের দিনে ওসব জিনিস কাজেটাজে আসে না। হাত দিয়ে চোখ ঘষা কিংবা নাক-খোঁটার অভ্যেসটা কদিন বিসর্জন দিন।
**************
শুধু লাইক আর শেয়ার নয়, এক্ষুনি গিয়ে অভ্যেস করতে শুরু করুন। শিখে ফেলাটা মোটেই কঠিন নয়। অভ্যেস বজায় রাখাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্রঃ WHO