Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

গোগোলের পেট ব্যথা

Screenshot_2022-04-03-12-06-56-59_680d03679600f7af0b4c700c6b270fe7
Dr. Aniruddha Deb

Dr. Aniruddha Deb

Psychiatrist, Writer
My Other Posts
  • April 3, 2022
  • 12:07 pm
  • One Comment

মেডিক্যাল কলেজে গোগোল আমার চেয়ে এক বছরের জুনিয়র ছিল। ভালো নাম অভিজিৎ। কে যেন একবার বলেছিল, “ওরে গোগোল, ডাক্তারি পড়ছিস, নামটা বদলা। এরকম নাম নিয়ে ডাক্তার হলে আর খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে হবে না।” গোগোল অবাক হয়ে বলল, “কেন? অভিজিৎ নাম নিয়ে ডাক্তার হওয়া যায় না?”

“যাবে না কেন? কিন্তু তোর যা নাম, তাতে তো পেশেন্টের কাছ থেকে ভিজিট নিতে পারবি না।”

গোগোল বলেছিল, “তা নয়। আমি অ–ভিজিট। তাই আমি ডাক্তারকে ভিজিট দিই না। তোরা কেউ আমার কাছ থেকে ভিজিট নিতে পারবি না।”

মুখে যাই বলুক, ভিজিট–নেওয়া ডাক্তারিতে গোগোলের আপত্তি নিশ্চয়ই ছিল। তাই ডাক্তারি পাশ করে চলে গিয়েছিল গ্রামে। এন–জি–ও করতে। সেখানে খুব গরিব, দুস্থ, অসহায় জনসাধারণের সেবা করছিল — যতদিন ধান্দাবাজ রাজনীতিবিদরা করতে দিয়েছিল — ততদিন।

আমরা যখন ডাক্তারি পড়ি তখন কলকাতার ডাক্তারি দুনিয়ার অন্যান্য জায়গা থেকে অনেক পেছিয়ে আছে (এখনও আছে, তবে অত বেশি না)। মানুষ কাজ করে না বলে যেমনি পেছিয়ে থাকা, তেমনই পেছিয়ে থাকা অভাবের ফলে। আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, তখন আমাদের শিক্ষকরা তেড়েফুঁড়ে শেখাতেন, যন্ত্রের ওপরে নির্ভর করে ডাক্তারি করবে না। ডাক্তারি মানে যন্ত্রনির্ভরতা নয়। নিজের হাত, চোখ, কান দিয়ে রোগীর রোগনির্নয় করো। কথাগুলো শুনতে যেমন ভালো লাগত, একই সঙ্গে তেমন বিশ্বাস করতাম যে অ্যামেরিকান বা ব্রিটিশ সাহেবরা খুব বোকা। যন্ত্রনির্ভর হয়ে ওরা ডাক্তারি ভুলেই গেছে।

কিন্তু যখন একটা বিশেষ গল্প আমাদের চল্লিশ বছর বয়স্ক লেকচারার থেকে আরম্ভ করে আটান্ন বছরের প্রফেসর, হেড অফ ডিপার্টমেন্ট সক্কলেই নিজের জীবনের ঘটনা বলে বলতে শুরু করলেন, তখন সন্দেহ হতে শুরু করল।

গল্পটা এরকম —

ইংল্যান্ডে কোনও এক হাসপাতালে একটা ক্লিনিক্যাল মিটিং হচ্ছে। এই ধরনের মিটিং–এ হাসপাতালের সব ডাক্তাররা মিলে একজন কঠিন রোগের রোগী নিয়ে বসেন। তার রোগলক্ষণ, নাড়ি–নক্ষত্র বিচার করে সবাই মিলে একটা মতৈক্যে আসার চেষ্টা করেন — রোগীর কী হয়েছে, এবং কী ভাবে তার চিকিৎসা হবে।

যাই হোক, ইংল্যান্ডের এই বিখ্যাত হাসপাতালে এক রোগীকে নিয়ে বিপদে পড়েছেন চিকিৎসক। পেটের টিউমারটা হয়েছে সেটা কোথা থেকে গজিয়েছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। এমনকি এ–ও নাকি বোঝা যাচ্ছে না, যে সেটা পেটের ভেতরের নাড়িভুঁড়ি বা প্লীহা–যকৃত থেকে উঠেছে, নাকি পেটের মাংশপেশী থেকে। আলট্রাসাউন্ড হয়েছে — তাতে বোঝা যাচ্ছে না, সিটি স্ক্যান প্লেট হাতে বড়ো বড়ো ডাক্তাররা হাঁ করে তাকিয়ে আছেন, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

পেটের ভেতরে টিউমার হলে ডায়াগনসিস না করে অপারেশন করা যায়। পেট কেটে দেখা যায়, বা দেখার চেষ্টা করা হয় কোথায় কী সমস্যা। তবে তা হয় একেবারে শেষ অবস্থায়, যখন টিউমার কেটে বাদ না দিলে রোগীর জীবনসংশয় হতে পারে। পেট কাটলেই সবসময় বোঝা যায় না টিউমার গজিয়েছে কোথা থেকে। ডাক্তাররা এমন অপারেশন করতে পছন্দ করেন না। জানলামই না পেটের মধ্যে কোথায় কী খুঁজতে হবে, পেট কেটে হাতড়াতে শুরু করলাম, এটা ভালো ডাক্তারি নয়।

এই রোগীর বিপদ আরও বেশি। অপারেশন করে ডায়াগনসিস করতে গেলে পেটের মাস্‌ল্‌ কেটে ঢুকতে হবে, কিন্তু টিউমার যদি মাস্‌ল্‌ থেকেই হয়ে থাকে, তাহলে তাতে ছুরি লাগালে মারাত্মক ফল হতে পারে — সুতরাং না জেনে অপারেশন করা যাবে না। সেই জন্যই এত স্ক্যান — সিটি, আলট্রাসাউন্ড — এ সব।

এখানে বলে রাখি যে আমরা তখনও সিটি স্ক্যান–এর প্লেট বা মেশিন চোখে দেখিনি। বইয়ে ছবি দেখেছি মাত্র। আমরা মেডিক্যাল কলেজে থাকাকালীন কলকাতা শহরে প্রথম দুটো আলট্রা–সাউন্ড মেশিন এসেছিল। প্রথমটা আমাদের কলেজের গায়নকোলজি বিভাগে। সেটা কোথাও রাখার জায়গা ছিল না। সাহেবদের আমলে গায়নকলজির সবচেয়ে কৃতি ছাত্র/ছাত্রীকে ডিপার্টমেন্টে একটা ঘর দেওয়া হত। গুডঈভ স্কলারের ঘরের নাম গুডঈভ রুম। সেই ঘর গুডঈভ স্কলারকে দেওয়া বন্ধ হয়েছে সে কবেকার কথা কারও মনেও নেই। ঘরটা খালি পড়ে রয়েছে বলে সেখানে স্থান হয়েছিল আলট্রা–সাউন্ড যন্ত্রের। নূরজাহানদি — গায়নকলজির মেডিক্যাল অফিসার ডা. নূরজাহানকে পাঠানো হয়েছিল ইংল্যান্ডে, সরকারের পয়সায় শিখে আসতে কী করে আলট্রাসাউন্ড মেশিন ব্যবহার করে গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্য বোঝা যায়। নূরজাহানদি শিখেছিলেন, কিন্তু ফিরে আসার আগেই ওঁর ট্রানসফার অর্ডার তৈরি ছিল, দেশে ফিরে তিনি দেখলেন তাঁর জায়গায় মেডিক্যাল কলেজে অন্য কেউ এসেছেন। তাঁকে যেতে হবে মালদা।

সরকারি চাকরির এই গল্প যাঁরা জানেন না, তাঁরা ‘ইয়েস প্রাইম মিনিস্টার’ দেখতে পারেন।

আমরা যখন ইডেন হাসপাতালের তিনতলার করিডোর দিয়ে হাঁটতাম, তখন আমাদের শিক্ষকরা শেখাতেন, “এইটা হল গুডঈভের ঘর। এতেই আছে আমাদের আলট্রাসাউন্ড মেশিন। পরীক্ষায় এগজামিনার জিজ্ঞেস করবেন, ‘মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র? তোমাদের আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন কোথায়?’ বলতে না পারলে গায়নিকলজিতে ফেল।” ডাক্তারিতে পাশ–ফেল অনেক সময়ে নানারকম অদ্ভুত জিনিসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকত। তার সঙ্গে ডাক্তারির কোনও সম্পর্ক না–ও থাকতে পারে।

দ্বিতীয় মেশিনটা এসেছিল একটা প্রাইভেট এক্স–রে ক্লিনিকে। নামটা… থাক। তার উদ্বোধন হয়েছিল বিরাট করে (হবেই বা না কেন? প্রথম চালু–মেশিন বলে কথা)। সব বড়ো বড়ো ডাক্তারদের ডাকা হয়েছিল। পরে আমাদের বিভাগীয় প্রধান বললেন, “গেলাম, দেখলামও। একটা লোককে শুইয়ে তার পেটে একটা কী লাগিয়ে লাগিয়ে টিভির মতন এক যন্ত্রে দেখালেন এই তার পেটের ভেতরে লিভার, এই পিলে, এই কিডনি… খানিক বাদে আর থাকতে না পেরে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আচ্ছা আপনি আমাদের বলছেন লিভার, কিডনি — আমরা দেখছি। কিন্তু আপনাকে কে বলে দিল যে এটা লিভার আর ওটা কিডনি?’ ব্যাস! এমনি রেগে গেলেন, যে তক্ষুনি ডেমনস্ট্রেশন বন্ধ করে দিলেন। খাবারের প্যাকেট দিয়েছিলেন, সে–ও প্রায় কেড়ে নেন আরকি!”

তখন আমরা হেসেছিলাম, কিন্তু কাণ্ডটা তার কিছুদিন পরেই ঘটল। পেটব্যথা নিয়ে একজন পেশেন্ট এল সার্জারি বিভাগে। ভারপ্রাপ্ত সার্জন–শিক্ষক বললেন, “এ ঠিক গল ব্লাডারের মতো মনে হচ্ছে না, কিন্তু আর কী হতে পারে তা–ও তো বুঝছি না। আচ্ছা, এক কাজ করা যাক, নতুন মেশিন এসেছে শহরে, ওখানে পাঠানো যাক। আলট্রাসাউন্ড করে দেখা যাক কী হতে পারে।”

রোগী গেল, ফিরে এল রিপোর্ট নিয়ে — গল স্টোন। স্যার সেই রিপোর্ট আর রোগীর পেটের ছবির প্লেট দেখিয়ে ছাত্র আর জুনিয়ার ডাক্তারদের পড়ালেন, “দেখো, এই রোগী যা যা সিমটম নিয়ে এসেছিল, বা ওর পেটে হাত দিয়ে যা পেয়েছিলাম, তাতে কখনও নিশ্চিতভাবে বলা যেত না — যে এটা গল স্টোন। তাহলে বুঝলে তো, যা আমরা দেখতে পাই না, তা আধুনিক যন্ত্রে দেখা যায়। কাল অপারেশন হবে। তোমরা সবাই এসো।”

পরদিন পেট কেটে দেখা গেল রোগীর গল ব্লাডারই নেই। কপালদোষে শরীরে গল ব্লাডার ভ্রূণাবস্থা থেকেই তৈরি হয়নি। কনজেনিটাল অ্যাজেনেসিস অফ গল ব্লাডার। পেটব্যথারও কোনও কারণ পাওয়া গেল না — অপারেশন সম্পূর্ণ বিফল।

সার্জন’স রুমে স্যার ভুরু কুঁচকে বসে আছেন, কয়েকজন সাহসী ছাত্র গিয়ে বলল, “কিন্তু স্যার, কাল যে আপনি আমাদের পড়ালেন — গলস্টোন… আলট্রাসাউন্ডের প্লেট দেখালেন…”

স্যার মাথা নেড়ে বললেন, “আরে আমি কি ছাই জানি নাকি? তোমরা যত আলট্রাসাউন্ড দেখেছ, আমিও ততই দেখেছি। আমি দেখলাম রিপোর্টে লেখা আছে গলস্টোন। তোমাদেরও তাই দেখালাম।”

এমতাবস্থায় ইংল্যান্ডের ডাক্তাররা সিটি স্ক্যান প্লেট নিয়ে মাথা চুলকোচ্ছেন সে গল্প তো আমাদের ভালো লাগবেই।

ইংল্যান্ডের হাসপাতালে বহু আলোচনার পরও যখন টিউমারটা পেটের ভেতরে, না কোথায়, তা–ই স্থির করা যাচ্ছিল না, তখন হঠাৎ হাত তুললেন এক জুনিয়র ডাক্তার — ভারতবর্ষ থেকে সদ্য গিয়েছেন। বললেন, “আমি একবার রোগীকে পরীক্ষা করে দেখি?” সাহেব ডাক্তাররা বললেন, “অবশ্যই…” মনে ভাবলেন, হাতি ঘোড়া গেল তল…

ভারতবর্ষ থেকে সদ্য ডাক্তারি পাস করা ছেলেটি (বলা বাহুল্য, তবু জানিয়ে রাখি — সে বাঙালিও বটে) রোগীকে বললেন, “আপনি হাত দুটো আকাশে তুলে শুধু পেটের মাংশপেশীর ওপরে জোর দিয়ে বসার চেষ্টা করুন দেখি…”

রোগী ওঠার চেষ্টা করামাত্র ছেলেটি তাকে আবার শুইয়ে দিয়ে বললেন, “ঠিক আছে।” তারপর ঘরভর্তি ডাক্তারের দিকে ফিরে বললেন, “জেনটেলমেন, এই রোগীর টিউমার মাংসপেশীতে নয়, পেটের ভেতরের কোনও প্রত্যঙ্গ থেকেই উদ্ভূত। আপনারা অনায়াসে পেট খুলে দেখতে পারেন টিউমারের উৎপত্তি কোত্থেকে।”

সবাই অবাক! এ কোথাকার হনু রে? এ কী রকম খেল? ছেলেটি খুব কাঁচুমাচু মুখ করে বলল, “কিন্তু এ তো রাইজিং (উত্থান) টেস্ট — আমাদের বইয়ে লেখা আছে। এইভাবে রোগীকে উঠিয়ে বসালে টিউমার পেটের ভেতরে থাকলে মাংসপেশী শক্ত হয়ে চাপা পড়ে যাবে, ছোটো দেখাবে। আর মাস্‌ল্‌–এ হলে ফুলে আরও বড়ো হয়ে উঠবে।”

মহারথীরা মুখ চাওয়া–চাওয়ি করছেন, রাইজিং টেস্টের নামই কেউ শোনেননি — এমন সময় একেবারে পেছনের সারি থেকে এক অশীতিপর বৃদ্ধ সার্জন হাত তুলে কাঁপা গলায় বললেন, “ইয়েস, ইয়েস, মেনি ইয়ার্স এগো আই রেড অ্যাবাউট দ্য রাইজিং টেস্ট ইন সাম বুক (হ্যাঁ, হ্যাঁ, বহু যুগ আগে আমি কোনও বইয়ে এই রাইজিং টেস্টের কথা পড়েছি বটে)!”

এর পর নিশ্চয়ই সেই রোগীর অপারেশন করে দেখা যায় যে টিউমর পেটের মধ্যেই বটে — কিন্তু সেটা গল্পের মরাল নয়। মরাল হল — বড়ো বড়ো যন্ত্রের চাপে ডাক্তারিটা ভুলে যেও না বাপু।

গোগোলের কাছে কিন্তু মর‍্যালটা ছিল অন্যরকম।

“নিজেরা পারে না সিটি স্ক্যান বুঝতে, তাই আমাদেরও শিখতে দিতে চায় না! কেন রে বাবা? তুই ভালো গরুর গাড়ি চালাতে পারিস বলে কি আমরা প্লেন চড়তে শিখব না?”

ডাক্তারির শেষে গোগোল আর আমি পড়াশোনা আর কর্মসূত্রে পরস্পরের থেকে বহু দূরে চলে যাওয়া সত্ত্বেও যোগাযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়নি। রাঁচিতে এবং কলকাতায় আমার বাড়ি এসেছিল গোগোল — আমার কখনও গোগোলের বাড়ি যাওয়া হয়নি। বেনারসে, আলমোড়ায়, লক্ষ্ণৌতে — কোথাও না। গোগোল প্রায়ই বলত, “দাড়ি, তোকে একবার আমার কাজের সঙ্গে জুড়ে নিয়ে যাব আলমোড়ায়। সারা জীবন তো ক্লিনিকে বসে কাজ করলি, মাঠে নেমে কাজ করা কাকে বলে দেখে আসবি।” কিন্তু হয়ে আর ওঠেনি।

শেষ পর্যন্ত সুযোগ এল ২০০৯–এ। ততদিনে গোগোল আলমোড়া ত্যাগ করেছে চিরদিনের মতো। গেলাম দিল্লিতে ওর সংস্থার মিটিং–এ।

দিল্লি পৌঁছলাম মিটিং–এর আগের দিন সন্ধেবেলা। রাত্তিরে বসলাম গোগোলের সঙ্গে আড্ডা দিতে। দুই ডাক্তারের আলোচনায় চিরকালীন টপিক হিসেবে এল আমাদের দেশের ডাক্তারির দুরবস্থার কথা। খানিক এ–গপ্পো ও–গপ্পোর পরে গোগোল বলল, “যা–ই বলিস, বিদেশে ডাক্তারির অবস্থা খুব ভালো মনে করারও কোনও কারণ নেই। এই আমার কথাই ধর না — আমি তখন ওয়াশিংটনে। ক্লাস নিতে গেছি। হঠাৎ পেট ব্যথা। যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে ভর্তি হলাম ওদের ইউনিভার্সিটি কলেজ অব মেডিসিন–এর হাসপাতালে। বেশ ভালো লেভেলের হাসপাতাল। রোজ হাজার গণ্ডা টেস্ট হচ্ছে, সিটিস্ক্যান, আলট্রাসাউন্ড, হ্যাঁকা–ত্যাকা, ঢেঁকি–কুলো — কোনও ডায়াগনসিস–এর নামগন্ধ নেই। একজন সন্দেহ করে টিবি, তো আর একজন বলে এইড্‌স্‌, আর যিনি সব বোঝেন, তিনি বলেন, ‘না, ক্রিমি হয়েছে। তুমি থাক ইন্ডিয়াতে, এই সবে গিয়েছিলে ব্রেজিল — সব ব্যাকওয়ার্ড দেশ…” আর এদিকে সব টেস্টেরই নর্মাল রেজাল্ট! আর আমি বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছি, আচ্ছা, আমি না হয় ডাক্তারি করি না, কিন্তু এই যে সব সিমটম, এগুলো তো আমি ডাক্তারি পাশ করার সময় বইয়ে পড়েছি। এই সিমটমগুলো একসঙ্গে হলে ডায়াগনসিস করতে তো এক মিনিট লাগা উচিত। এদিকে তাবড় তাবড় সব ডাক্তার, মুখ ফুটে কিছু বলতেও পারি না! শেষে আমি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়েই ফোন করলাম সুকান্তকে। সুকান্তকে মনে নেই? আমাদের ব্যাচ। দেখলেই চিনতে পারবি। ও এখন ইংল্যান্ডে সার্জন। ও শুনে টেলিফোনেই আমাকে বলল, অন্য কিছু হতেই পারে না। তখন আমি পরদিন ওদের কনসালট্যান্টকে বললাম, ‘কিছু যদি মনে না কর, এটা কি গল ব্লাডারের ব্যথা হতে পারে?

“পরদিন আমার গলস্টোন ধরা পড়ল।”

গোগোলের গল্প শুনে আমি খাটের ওপর লাফাতে শুরু করেছি। “গোগোল, এটা তোরই হতে হল? তুই কি না বলতি ডাক্তারিতে সব আধুনিক যন্ত্রপাতি হল এরোপ্লেন, আর পেট–টেপা ডাক্তাররা গরুর গাড়ি চালায়।”

“আমি বলেছিলাম? আমি?” গোগোল আকাশ থেকে পড়ল। “কবে?”

পুরো গল্পটা বললাম। গোগোল শুনে বলল, “তাই? আমার অত মনে নেই। তবে আমি কিন্তু বলিনি যে বই না পড়ে, পেশেন্ট না দেখে — শুধু সিটি স্ক্যান করিয়েই ডাক্তার হওয়া যায়।”

PrevPrevious“রেকারেন্ট প্রেগন্যান্সি লস” নিয়ে দু চার কথা
Nextবিনিদ্রNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Md. Sayef
Md. Sayef
4 months ago

Excellent

0
Reply

সম্পর্কিত পোস্ট

ঠিকানার খোঁজ

August 6, 2022 No Comments

সৃষ্টিসুখের একজন ফোন করলেন রাত আটটা নাগাদ। একটা বই আমাকে দিতে এসেছেন তিনি। বইটার ছবি এখানে দিতে পারব না। তার আগে বইটা সম্বন্ধে বলি। দেশভাগ

ওষুধের যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার থেকে যুক্তিসঙ্গত চিকিৎসায়

August 6, 2022 1 Comment

১৯৭৫-এ ভারতীয় ওষুধ শিল্প নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করার উদ্দেশ্যে গঠিত এক সংসদীয় কমিটি তার রিপোর্ট পেশ করে, কমিটির প্রধান কংগ্রেসী সাংসদ জয়শুকলাল হাতি-র নামে এই কমিটির

Protect Yourself from Cyber Crime

August 6, 2022 No Comments

Shared from Dr. Subhamita Maitra’s youtube channel.

আত্মহত্যা কি কথা বলে আটকানো যায়?

August 5, 2022 No Comments

হয়তো যায়, কিন্তু আপনি শুনবেন কি ? জানেন হিসেব বলছে প্রত্যেকটা না হলেও বেশিরভাগ মানুষ আত্মহত্যার চরম সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কাউকে একবার কথাটা বলে ,হয়তো

২০২২ হল আমার আবির্ভাব শতবর্ষ।

August 5, 2022 No Comments

২০২২ হল আমার আবির্ভাব শতবর্ষ। ১৯২২এ আমার অস্তিত্ব প্রথম টের পেয়েছিলেন Wiernal & Bell. তবে মানুষের শরীরে আমার প্রথম ঢুকবার সুযোগ পেতে ১৯৪৯ অবধি অপেক্ষা

সাম্প্রতিক পোস্ট

ঠিকানার খোঁজ

Dr. Arunachal Datta Choudhury August 6, 2022

ওষুধের যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার থেকে যুক্তিসঙ্গত চিকিৎসায়

Dr. Punyabrata Gun August 6, 2022

Protect Yourself from Cyber Crime

Dr. Subhamita Maitra August 6, 2022

আত্মহত্যা কি কথা বলে আটকানো যায়?

Dr. Arunima Ghosh August 5, 2022

২০২২ হল আমার আবির্ভাব শতবর্ষ।

Dr. Belal Hossain August 5, 2022

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

403127
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।