টিভিতে খবরটা পড়ে অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেনি যে শান্ত, লাজুক স্বভাবের মেয়ে রিমি আত্মহত্যা করতে পারে। ক্লাস এইটের ছাত্রীটি কোনো সুইসাইড নোটও রেখে যায়নি।
রিমি বরাবরই পড়াশোনায় বেশ ভালো। কোনো বছর পরীক্ষায় ফার্স্ট ছাড়া সেকেন্ড হত না। ক্লাসে তার একমাত্র বন্ধু শোভা। তার সঙ্গেই দু চারটে কথা বলে। টিচাররাও তার শান্তভাব দেখে ভালোবাসতো।
কিন্তু কী এমন ঘটল যে এত বড় সিদ্ধান্ত নিল?
সে বিষয় জানা গেল শোভার কাছ থেকে। যেদিন দুর্ঘটনা ঘটে সেদিন অংকের ক্লাস টেস্ট ছিল। রিমি ব্যাগ থেকে পেনসিল বক্স বের করতে গিয়ে কাগজে মোড়া প্যাডটা আচমকাই মেঝেতে পড়ে যায়। তড়িঘড়ি সে তা তুলে নিয়ে ব্যাগে পুরে দেয়। রিমি কিছু একটা যে ব্যাগে ভরছে তা লক্ষ করেন টিচার। তিনি বলেন, সে যা ব্যাগে করে লুকিয়ে এনেছে তা যেন বের করে দেখায়। কো এডুকেশন স্কুল। ক্লাসশুদ্ধ ছেলেমেয়ের সামনে লজ্জায় সে কী করবে বুঝতে পারে না। ওদিকে টিচারও ছাড়ার পাত্র নন। তিনি বলেন, যদি রিমি তা না দেখায় তাহলে তাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হবে। চোখ দিয়ে অঝোরে জল পড়তে থাকে তার। কিছুতেই সে ব্যাগ থেকে তা বের করতে পারে না। শেষ পর্যন্ত টিচার বলেন, সেদিন আর ক্লাস না করে বাড়ি চলে যেতে। আর পরদিন স্কুল থেকে যেন টিসি নিয়ে যায়। কারণ এমন বেয়াদপ ছাত্রীর ওই স্কুলে পড়ার কোনো অধিকার নেই। কাঁদতে কাঁদতে ক্লাস থেকে চুপচাপ বেরিয়ে যায়। বাড়ি গিয়েও কাউকে কিছু বলতে পারেনা। নিজের ঘরে গিয়ে বেছে নেয় সব কষ্ট থেকে মুক্তির পথ।
অন্যদিকে শ্রীমন্তীও পড়াশোনায় যথেষ্ট ভালো। ক্লাস সিক্স পর্যন্ত প্রথম তিনের মধ্যে থাকতো। কিন্তু পিরিয়ড শুরু হওয়ার পর থেকেই জীবন বদলে যেতে শুরু করে। যেদিন প্রথম পিরিয়ড হয়, সেদিন গিয়ে ঠাকুমার কাছে কথাটা জানায়। কারণ ছোটো থেকে ঠাকুমাই ছিলো তার বন্ধু। কিন্তু পিরিয়ডের কথা জানার পর ঠাকুমার যেন অন্য রূপ। তাঁর কড়া নির্দেশ, শরীর খারাপ হলেই স্নান করতে হবে, ওই কদিন কোনো পুরুষ শিক্ষকের কাছে পড়তে যাওয়া যাবে না। এমনকি অশুচি অবস্থায় বাড়ির কোনো ছেলেদের ছোঁয়া যাবে না। মায়ের চেষ্টায় পিরিয়ডের দিনগুলোতে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি পেলেও ক্রমাগত লেখাপড়ায় পিছিয়ে যেতে থাকে সে। কারণ পিরিয়ড শুরুর তিন দিন আগে থেকে শরীরে নানারকম উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। এ সব নিয়ে মায়ের সঙ্গেও কিছু আলোচনা করতে পারে না। আর পিরিয়ড শুরু হলে এত পেটব্যথা, তার সঙ্গে অনিয়ন্ত্রিত ফ্লো চলতে থাকে যে বিছানা থেকে উঠতে পারে না। এরপর থেকেই রেজাল্ট খারাপ হতে থাকে।
আর সবিতা ক্লাস ইলেভেন-এ পড়ার সময় প্রাইভেট টিউটরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে ওঠে। এমনিতেই তার পিরিয়ড অনিয়মিত হত বলে ২-৩ মাস বন্ধ থাকায় তা নিয়ে তেমন গা করেনি। আর শারীরিক তেমন কোনো উপসর্গও ছিল না। খাওয়াদাওয়ায় বরাবরই বায়না ছিল। সে সময়েও খেতে চাইতো না বলে মা-ও তা নিয়ে কিছু ভাবেনি। আস্তে আস্তে শরীর জানান দিতে থাকে, তার শরীরে বেড়ে উঠছে তার সন্তান। ভয়ে তখন কী করবে কিছু বুঝে উঠতে পারে না। তড়িঘড়ি প্রাইভেট টিউটরকেই সে কথা জানায়। সে পুরোপুরি অস্বীকার করে সেই দায়। এক বন্ধুর পরামর্শে দ্বারস্থ হয় এক হাতুড়ে ডাক্তারের। তাতে শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়। অবস্থা এমন হয় যে হাসপাতালে ভরতি করতে হয়। ততদিনে ৭ মাস হয়ে গেছে। প্রেগন্যান্সির কথা জানতে পেরে সবিতার বাবা-মা তা টারমিনেট করানোর কথা বললেও ডাক্তারবাবু তাতে রাজি হন না। ১৭ বছরের মেয়ে শেষ পর্যন্ত জন্ম দেয় এক শিশু কন্যার।
আসলে এসবের জন্য দায়ি আমাদের সচেতনতার অভাব। এখনো অধিকাংশ লোকের কাছে পিরিয়ড খোলাখুলি আলোচনার বিষয় নয়। এ সম্পর্কে বাবা, মা থেকে শুরু করে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকারও তাই মত। পরিবারে বয়স্ক ব্যক্তিরা নানা ভুল ধারণা নিয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু তাদের সেই ধারণা বদলানোর জন্য এ ছেলে-মেয়েদের এগিয়ে আসা দরকার। পিরিয়ড যে একটা স্বাভাবিক শারীরিক ক্রিয়া সে বিষয়ে জ্ঞানের অভাবেই এখনো এত সমস্যা হচ্ছে। অনেকে ভাবেন এ নিয়ে আলোচনা করলে ছেলে মেয়ে বিগিড়ে জেতে পারে। তাই যতটা সম্ভব লুকিয়ে রাখাই ভালো। এই কারনেই সবিতার মতো মেয়েরা অসময়ে অন্ধকারে তলিয়ে যায়। রিমির মতো মেয়েদের মৃত্যুর পথ বেছে নিতে হয়। প্যাডম্যানের মতো ছবি তাদের কাছে অশ্লীলতা ছাড়া কিছু নয়। পরিবারে বাবা, মা, স্কুলের শিক্ষিকারা যদি একটু এ বিষয়ে সচেতনতার পাথ দেন তাহলে একটা সুন্দর সমাজ গড়ে উঠতে পারে।
Every parent’s should be more careful about their girl child .
Every parent’s should be more careful about their girl child .At the time if their first period parent’s should be very conscious for their girl child so that they did not done any mistakes. They should be avoid any kind of connection with there boy friends from that times so that they don’t have any problems or getting pregnant.