মেডিকেল কাউন্সিল ভোটের গণনা নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই।
পরশু রাতের শেষে সকালবেলায় গণনায় যখন আচমকা ‘জলপানের বিরতি’ ঘোষিত হলো, তার আগে আমরা ভালোরকম এগিয়ে ছিলাম।
সাত ঘণ্টার ‘সংক্ষিপ্ত’ বিরতির শেষে নতুন করে গণনা শুরু হওয়ার পর দেখা গেল, আমাদের অজস্র প্যানেল-ভোট বাতিল হচ্ছে, কেননা কোনও সহৃদয় ব্যক্তি সেই প্যানেলের পর আরও একটি বাড়তি ভোট দিয়ে ব্যালটটিকে ক্যানসেল করিয়ে ফেলেছেন। তার পরও গতকাল রাত্তির অবধি আমরা এগিয়ে ছিলাম, সবক’টি টেবিলেই।
নিরবচ্ছিন্ন ভোটগণনায় দ্বিতীয় বিরতি শুরু হয় গতকাল সন্ধে সাতটা থেকে। শুরু হয় আজ বেলা বারোটা থেকে। অর্থাৎ বিরতি সতেরো ঘণ্টার।
এবারে আমাদের প্যানেল-ভোট বাতিলের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। মানে, যতগুলো প্যানেল ভোট আমরা পাচ্ছি, তার চাইতে বেশি প্যানেল ভোট বাতিল হচ্ছে। বিভিন্ন রঙের কালিতে, বিভিন্ন হাতের লেখায় – যাকে বলে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য – আমাদের প্যানেল ভোটে বাড়তি দু-একখানা ক্রস চিহ্নের অমায়িক সহযোগিতা।
এতে লজ্জিত বা ক্রুদ্ধ বা হতাশ বা বিস্মিত কোনও কিছুই হচ্ছি না, কেননা মাননীয়া বলেইছেন, তলায় তলায় কখন শিল্প হয়ে যাবে, আপনারা বুঝতেই পারবেন না। আর মহতের গুণ এই যে, তাঁদের বাণী সচরাচর বহুমাত্রিক।
চিকিৎসকদের কাউন্সিল ভোটের এই হাল দেখে বিস্মিত হওয়ারও মানে হয় না, কেননা লেসার এভিল সরকারবাহাদুরের গণতান্ত্রিক উদ্যমের প্রায়োগিক রূপ গতকাল অনেকেই চাক্ষুষ করেছেন আমাদের ঢিল-ছোঁড়া দূরত্বে। অর্থাৎ, করুণাময়ীর অপার করুণার প্রকাশ সল্টলেক করুণাময়ীতে।
এই সামান্য নির্বাচন ঘিরে বহুস্তরীয় শিল্পের প্রকাশ যা দেখা গেল, তা এককথায় অনির্বচনীয়। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ভোটদান থেকে ভোটগণনা, পুরোপুরি ঘটল নজরদারিহীন। সিসিটিভি মনিটরিং ছাড়াই।
অবশ্য নজরদারি বা সিসিটিভি মনিটরিং থাকলে এমন করে ‘তলায় তলায় শিল্প হয়ে যাওয়া’-র বিস্ময় ও চমক আমাদের প্রাপ্তি হতে পারত না।
অতএব…
পুনঃ- এই যাবতীয় অনাচার যাঁর প্রত্যক্ষ নজরদারি বা পরোক্ষ প্রশ্রয়ে ঘটতে পারল, তাঁর নাম – মানস চক্রবর্তী। মেডিকেল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার। এই নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার। মানুষটাকে চিনে রাখুন। তবে গালিগালাজ করবেন না।
কাউকেই অকারণ অমুকের বাচ্চা তমুকের বাচ্চা বলে অবলা প্রাণীর অপমান করবেন না।