২১.১০.২২
বিষয়: ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রহসন
ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিলের নির্বাচন চলছে। চিকিৎসক সমাজের মধ্যে অভূতপূর্ব উদ্দীপনার সঞ্চার হয়েছে। কিন্তু চরম লজ্জা ও দুর্ভাগ্যের বিষয়, গোটা নির্বাচনকে চূড়ান্ত নগ্ন প্রহসনে পরিণত করা হল পক্ষপাত দুষ্ট ও ঘৃণ্য দুর্নীতির আঁতুড়ঘর মেডিক্যাল কাউন্সিল নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের নির্লজ্জ পরিচালনায়।
বিগত ২০১৩ ও ২০১৮ সালে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি হওয়ার পরে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে এবারের নির্বাচন হচ্ছে। সবার মধ্যে আশা ছিল, স্বচ্ছতার সাথে আপোস করা হবে না।
কিন্তু আমরা বিস্মিত, একটা গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বিভিন্ন রং-এর (অন্তত চার রকম) খাম আর হাজার হাজার ফেক ব্যালটের (বিবিধ কিসিমের ) দাপাদাপি। একটা নির্বাচনে নিদেনপক্ষে পঞ্চাশ শতাংশ ফেক ব্যালট। পরিকল্পিত ভাবে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে। এক ধরনের ফেক ব্যালটে বিরোধী পক্ষের বেশিরভাগ প্রার্থীদের উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ভোট দিয়ে বিষয়টিকে লঘু করার চেষ্টা করা হয়েছে যাতে অন্য নানা রকম ফেক ব্যালটে (যার সংখ্যা ভয়াবহ) শাসকের পক্ষে রায়দানের মধ্য দিয়ে নোংরা ভাবে কাউন্সিলের কব্জা নেওয়া যায়। রিটার্নিং অফিসার নিজের নির্দেশ তুঘলকি আচরণে ইচ্ছে মতো বদলে দিচ্ছেন। শাসক শক্তি ও কমিশনের নগ্ন আঁতাতে পরিচালিত নির্বাচনে ফেক ব্যালট জিতলে সাংবিধানিক বৈধতা কিভাবে থাকে, তা বোধগম্যতার বাইরে। কাউন্টিং হওয়ার কথা নিরবচ্ছিন্ন ভাবে অথচ সমস্ত বিধিকে বিশেষ উদ্দেশ্যে খুন করা হচ্ছে। অনন্য দুর্নীতির অসংখ্য উদাহরণ প্রত্যেক দিন উন্মোচিত হচ্ছে। যৌথ মঞ্চের প্রার্থী দের প্রাপ্ত প্যানেল ভোটকে নষ্ট করতে অন্য রঙের কালি দিয়ে নষ্ট করার মতো অজস্র উদাহরণ। ফেক ব্যালট ক্যানসেল হওয়ার পর আবার ফিরে আসছে কাউন্টিং এর জন্য।
ভোট হচ্ছে। যেখানে মহামান্য হাইকোর্ট স্বাধীন পর্যবেক্ষক ও সি সি ক্যামেরা রাখতে অনুরোধ করেছে, সেখানে রিটার্নিং অফিসার কিছুতেই সেই নির্দেশের মান্যতা দিলেন না। উদ্দেশ্য পরিষ্কার। আমরা চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চ এই নির্বাচনকে চূড়ান্ত অবৈধ ও গণতন্ত্রের পক্ষে নিকৃষ্টতম উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করছি।
এখনো গণনা চলছে!
জয়েন্ট প্ল্যাটফর্মের প্রার্থীরা এখনও মাথা উঁচু করে,গণনাকক্ষে ধৈর্যশীল ভাবে অংশ নিয়ে চলেছেন!
অবিশ্বাস্য রকমের চুরি, জোচ্চুরি আর জালিয়াতির পরেও আমরা সামান্য হলেও এগিয়েই আছি!
বোঝাই যাচ্ছে জালিয়াতি না হলে আমরা বিশাল ব্যবধানে জিতে যেতাম!
এতো কিছুর পরে যদি জিতেও যাই,তাও এই নির্বাচনকে বাতিল ঘোষণার দাবী আমরা জানাবো! কেন না এইভাবে নির্বাচিত মেডিকেল কাউন্সিলের ওপর না থাকবে চিকিৎসক সমাজের আস্থা , না থাকবে সাধারণ মানুষের ভরসা।
আমরা মনে করি, যদি বঙ্গ সমাজের চিকিৎসকদের আবেগ, সম্মানকে মর্যাদা দিতে হয় এবং গণতন্ত্রের ন্যূনতম বিধিকে রক্ষা করতে হয়, তাহলে অবিলম্বে এই নির্বাচনকে বাতিল ঘোষণা করে কোর্ট অবজারভারের তত্ত্বাবধানে অনলাইন নির্বাচনের নির্দেশ আসা অবিলম্বে জরুরি। আমরা আন্তরিক ভাবে চাই মহামান্য আদালত অনতিবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে এই নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করুক।
বঙ্গ জীবনের গণতান্ত্রিক পরিসরের ন্যূনতম অধিকার অন্তত রক্ষিত হোক।
পুণ্যব্রত গুণ
হীরালাল কোঙার
যুগ্ম আহ্বায়ক
জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল