An Initiative of Swasthyer Britto society

  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close

কোভিড ১৯ সবার জন্য স্বাস্থ্য-এর প্রয়োজনীয়তা আবার মনে করাল

IMG_20200811_235023
Piyali Dey Biswas

Piyali Dey Biswas

Journalist--Health worker
My Other Posts
  • October 25, 2020
  • 8:13 am
  • No Comments

সত্তরের কোঠার অমিতাভ আর ১৮ শুভ্রজিত। দুজনেই কোভিডের শিকার। একজন সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরল, অন্যজন কোভিডের জেরে সময়মতো বেড না পাওয়ায় বড় অসময়ে মৃত।

একজন আমার আজন্ম লালিত প্রেম। অন্যজন আমার না দেখা, না চেনা এক ভাতৃপ্রতিম আঠারোর কিশোর প্রাণ।

একজন সুপারস্টার, কোটি কোটি ভক্ত হৃদয় তার জন্য উদ্বেলিত, রোগশয্যায় যাঁর খিদমতে ভারতের শ্রেষ্ঠ ডাক্তারেরা। অন্যজন ভিড়ের একটুকরো মুখ, ঠিক আমাদের মতো এলি-তেলি সাধারণ। কিন্তু সাধারণ মানুষ হয়েও শুভ্রজিৎ এর মৃত্যু কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেছে।

করোনার আবহে অসংখ্য সাধারণ মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে, বেড না পেয়ে, সময় মত অক্সিজেন না পেয়ে বা হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে এমনভাবেই টুপ করে ঝরে পড়ছে?? তা এমন আঠেরোর প্রাণ অকালে ঝরল কেন? কার দায়?
কেন সরকারের দায়!

একটু থামুন। দায়টা শুধু সরকারের নয়। দায়টা আপনারো।

সরকারি চিকিৎসাব্যবস্থা দিনের পর দিন ধুঁকতে ধুঁকতে আপনার চোখের সামনেই অস্থিচর্মসার হয়ে দাঁড়িয়েছে! আপনি কোনদিনও প্রশ্ন করেছেন?! কেন সরকারি হাসপাতালগুলোতে পরিকাঠামো বাড়ানো হয় না? করেন নি! একজন দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবে জনপ্রতিনিধির কাছে এই প্রশ্নটা তোলা আপনার উচিত ছিল কিনা?

না, আপনি চোখ বুজে থেকেছেন। ভেবেছেন আপনার আর্থিক স্বচ্ছলতা আছে, আপনি প্রাইভেট হাসপাতালে এসির ঠান্ডা ঘরে চিকিৎসকের সময় দাম দিয়ে কিনতে পারেন! অতএব আপনি ওখানেই চিকিৎসা করাবেন। যেমনটা এখন করাচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা। এটা আপনার নিজস্ব চয়েজ ছিল।

আজ যখন বেসরকারী হাসপাতাল করোনা রোগের চিকিৎসা করবে না বলে হাত তুলে দিয়েছে, আপনি হাত কামড়াচ্ছেন। যখন করোনা চিকিৎসার নামে লাখ লাখ টাকা বিল কাটছে আপনি অনৈতিক বলে সরকারের কাছে অভিযোগ ঠুকছেন। কেন?

অথচ এই আপনিই, স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড হাতে পেয়ে প্রিয়জনের অপারেশনটা সরকারি হাসপাতালে করেননি। বেছে নিয়েছিলেন বেসরকারি হাসপাতালকেই। তখন একবারও প্রশ্ন তোলেন নি সরকার কেন নিজের টাকা খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছে?? সেই টাকায় তো নিজের পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটানো সম্ভব ছিল! সেটা কেন করছে না??

বরং খুশি হয়েছেন সরকারি হাসপাতালে রোগীর ভিড়ে আপনাকে হারিয়ে যেতে হবে না ভেবে। আজ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো। কোভিড 19 আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সরকারি স্বাস্থ্যপরিকাঠামোর চূড়ান্ত উন্নতি প্রয়োজন। না হলে এই আজকের অবস্থাই হবে। আসলে কোভিড আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙে দেয়নি, বরং আমাদের ভেঙে পড়া স্বাস্থ্যব্যবস্থা কে সামনে এনে দিয়েছে।

টিভিতে মৃত শুভ্রজিতের বাবা বলেছেন আমরা জঙ্গল রাজত্বে বাস করি। প্রকৃত অর্থেই তাই! কিন্তু সমস্যা হল তিনি এতদিন এই জঙ্গলে বাস করছিলেন কিন্তু সেই সময় তাঁর কোন অসুবিধা হয়নি। তিনি কোন প্রশ্ন তোলেননি এই বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে। কিন্তু আত্মজকে হারানোর বেদনায় তাঁর এই উপলব্ধি। জানি তাঁর এই যন্ত্রণা কি অপরিসীম! কি ভীষণ কষ্টের। তাঁর যন্ত্রণাকে একটুও ছোট না করে বলছি সমাজের প্রতিটি মানুষেরই স্বাস্থ্য শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত। কোভিড আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কেন সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি প্রয়োজন। বেসরকারি হাসপাতালের ঢক্কা নিনাদ কতটা ফাঁপা! তাই প্রশ্ন করুন। এখন আর বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর ভরসা রেখে নিজের গা বাঁচানো সম্ভব নয়। তাই সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা ফেরাতে মুখর হোন। কারণ স্বাস্থ্য কোন ভিক্ষা নয়, স্বাস্থ্য আমাদের অধিকার।

আপনি ঠিক শুনেছেন। “স্বাস্থ্য কোন ভিক্ষা নয়, স্বাস্থ্য প্রতিটি নাগরিকের অধিকার”। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য সরকারি স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি করতে বাধ্য। কারণ এই মর্মে তারা আন্তর্জাতিক সনদে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেছে। অতএব আপনার এলাকার জনপ্রতিনিধি যদি মনে করেন হাসপাতালে বিল্ডিং করে দিয়েই তিনি অনেকটা কাজ করে ফেলেছেন, সেটা ভুল। প্রতিটি নাগরিকের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব রাষ্ট্রের, এ বিষয়টা তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া প্রয়োজন।

কথাটা স্পষ্ট ভাবে বলি, ১৯৭৭ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেন যে স্বাস্থ্য সব মানুষের অধিকার। প্রতিটি মানুষই যাতে সুস্বাস্থ্যের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র গুলো একক ভাবে বা প্রয়োজন মত পরস্পর মিলে কাজ করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৭৮ সালে কাজাকাস্থানের আলমাআটায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে এই নীতিটিকে কার্যকর করার সিদ্ধান্তটি পাকা হয়। পাশাপাশি ২০০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর সব দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্যপরিষেবা নিশ্চিত করা হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল। এই কনফারেন্সের উদ্দেশ্য ছিল দুটি, প্রথমত সকল নাগরিকের স্বাস্থ্যের বিষয়টা নিশ্চিত করা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবায় অসাম্য, মূলত অর্থনৈতিক ভেদাভেদ দূর করা।

কিন্তু দুঃখের বিষয় ২০০০-এর পরে কুড়ি বছর পার করেও আমাদের দেশ সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের কাছে আসতে পারা তো দূর, ক্রমশ দূরে সরে গেছে। যদিও সবার জন্য স্বাস্থ্য—এই লক্ষ্যকে তারা অস্বীকার করতে পারবে না। কারণ আলমা-আটার ঘোষণাপত্রে ভারত অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ এবং নাগরিকের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব রাষ্ট্রের, সে কথা মেনে নিয়েই ওই চুক্তি পত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন সেই সময়ের রাষ্ট্র প্রধানেরা। কিন্তু সবকিছু মেনেও এখনো পর্যন্ত ভারতে স্বাস্থ্যকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। এর ফল আমাদের ভুগতে হচ্ছে।

বর্তমানে এ দেশে চিকিৎসার খরচ আকাশ ছোঁয়া। প্রতিবছর কয়েক কোটি মানুষ চিকিৎসার খরচ মেটাতে গিয়ে দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে যাচ্ছেন। তার মধ্যে 38 মিলিয়ন শুধু ওষুধের দাম মেটাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হন। সরকারি তথ্য থেকেই জানা যায় দেশের প্রতি 51 হাজার নাগরিক পিছু একটি করে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। এটা গড় হিসেব । তবে গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অরবিন্দ কস্তুরীর হিসেব বলছে দেশে এখনো মাত্র 37 শতাংশ মানুষ তাদের বাড়ির পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে কোন হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেন। অর্থাৎ এখনো দেশের 65 শতাংশ মানুষই বাড়ির ৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোন হাসপাতালে চিকিৎসা পান না। একই ভাবে সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে আয়ের নিরিখে শেষের 25% শতাংশের মধ্যে 39% মানুষই মারা যাওয়ার আগে কোন চিকিৎসার সুযোগ পান না। বর্তমান জনসংখ্যার নিরিখে এই 25% মানে কিন্তু প্রায় 30 কোটি। আর তার 39% গিয়ে দাঁড়ায় 18 কোটির কাছাকাছি। অর্থাৎ এখনো এ দেশের ১৮ কোটি মানুষ জীবনে কোনরকম যুক্তিসঙ্গত চিকিৎসার সুযোগই পান না। এ সংখ্যা আগামী দিনে আরও বাড়বে।

স্বাধীনতার এত দিন পরেও এদেশের মাত্র 50% শিশু টিকা পায়, বাকিরা পায়না। 5 বছর বয়স হওয়ার আগেই প্রতি হাজারে 50 জন শিশু মারা যায়। পাশাপাশি শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে প্রতি দশ হাজারে মারা যান 190 জন মা। এখনো পর্যন্ত অপুষ্টি, অনাহার, রক্তাল্পতা, 5 বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যু ও 18 টি মারক রোগের প্রকোপ এবং লিঙ্গ বৈষম্যের নিরিখে ভারত একটি পিছিয়ে পড়া দেশ।

এ স্বত্ত্বেও বর্তমানে মোটা টাকার বিনিময়ে আমাদের স্বাস্থ্য কিনতে হয়। 2014 তে করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ভারতে1995 সালে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ ছিল মোটামুটি 177 ইউ এস ডলার । 2014 তে সেই খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল প্রায় 316 ইউ এস ডলারে। বর্তমানে তো সেই খরচ লাগামছাড়া। এত সব কিছুর পরেও 2018 -19 সালে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের পরিমাণ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ। যেখানে সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে 2011 সালেই শ্রীনাথরেড্ডির নেতৃত্বে হাই লেভেল গ্রুপ অন ইউনিভার্সাল হেলথ কভেরেজের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল যে 2017- 18 সালে স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির 3 শতাংশ বরাদ্দ করলেই এদেশে ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ার চালু করা যাবে। অর্থাৎ দেশের সমস্ত নাগরিক সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সবধরনের স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবে। কিন্তু সেই প্রস্তাব ঠান্ডা ঘরেই ফাইল চাপা হয়ে পড়ে আছে।

দেশের সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা ধীরেধীরে রুগ্ন হয়েছে। দেশের মানুষ কোন প্রশ্ন তোলেনি। অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। এখন সাধারণ মানুষেরা ভাবেন, বেসরকারি স্টার দেওয়া হোটেলের মত ওই সব ঝাঁ-চকচকে হাসপাতালেই বুঝি সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায়। অনেকেই আবার গর্ব করেন, ডাক্তারের এত টাকা ভিজিট। যেন ডাক্তারের ভিজিটের ওপর তাঁর কর্ম দক্ষতা নির্ভর করে। মানুষের এই ধরনের মনোভাব তৈরি হতে সাহায্য করেছে কিন্তু সরকারই। তারা নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে নাগরিকদের এই ধরনের “ফেলো কড়ি মাখো তেল” টাইপের ব্যবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

অথচ এদেশে ৮০ দশক পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা পরিষেবার বিকাশ ঘটেছিল। সেই সময়ের যেকোনো মানুষকে আমরা গর্ব ভরে বলতে শুনি “আমার জন্ম মেডিকেল কলেজে”। কারণ সেই সময় সব চেয়ে ভাল ও উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যেত মেডিকেল কলেজেই। কিন্তু এরপর থেকেই অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। সরকার সরাসরিভাবে চিকিৎসা পরিকাঠামোর উন্নয়নে বিনিয়োগ করা বন্ধ করে দেয়। নব্বইয়ের উদার অর্থনীতির ঢেউয়ে ডুবতে থাকে এ দেশের চিকিৎসা পরিষেবাও। বিদেশি বিনিয়োগ আসতে থাকে। সেইসঙ্গে চিকিৎসাব্যবস্থাকে ব্যবসায় পরিণত করার প্রবণতাও শুরু হয়। ২০০০-এর পর থেকে যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো চিকিৎসা ব্যবসা শুরু হয় এ রাজ্যে। সেই সঙ্গে মেডিক্লেম ভিত্তিক চিকিৎসার প্রবণতাও বাড়ে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য উভয় সরকারই বীমাভিত্তিক চিকিৎসা ব্যবস্থার মাধ্যমেই নাগরিকদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছে, যে বীমায় প্রিমিয়াম দেয় সরকার। অথচ এই ধরনের বীমাভিত্তিক চিকিৎসা কখোনোই নাগরিকদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ খরচ বহন করে না। বহন করে না আউটডোরে ডাক্তার দেখানো, পরীক্ষানিরীক্ষা করানো বা ওষুধ কেনার খরচ। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে আমেরিকার এই বীমা ভিত্তিক চিকিৎসা ব্যবস্থা কিন্তু সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়েছে এই কোভিদ 19 পরিস্থিতিতে। অথচ আমাদের দেশের মোট চিকিৎসা খরচের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশী খরচ হয় আউটডোর চিকিৎসায়। হাসপাতলে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করালে খরচ পাওয়া যায়, কিন্তু ভর্তি হওয়ার আগের পরীক্ষা বা ওষুধের খরচ রোগীকে তাঁর নিজের গাট থেকেই খরচা করতে হয়।

এ সময় প্রয়োজন ছিল জনস্বাস্থ্য রক্ষাকারী দৃঢ় পদক্ষেপের। তার পরিবর্তে দেশের নেতারা বেসরকারি হাসপাতালের জনমোহিনী চিকিৎসাব্যবস্থাতেই ভোটারদের মন জয় করে নেওয়ার অস্ত্র বলে ভেবে নিয়েছেন। আসলে আমাদের দেশের একটি বড় সমস্যা হল রাষ্ট্রনীতি রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার শিকার। এবং স্বাধীনতার পর থেকে কখনোই স্বাস্থ্য সিরিয়াস রাজনীতির বিষয় হয়ে ওঠেনি। সেই কারণেই এই সস্তা পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতির “স্বাস্থ্য বীমা”-র তাসেই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তাসের ঘর হয়ে ভেঙে পড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন দেশগুলিকে এ নিয়ে আগেই আলমা আটা সম্মেলনে সতর্ক করে বলেছিল যে, রাজনৈতিক উদ্যোগ ছাড়া কোন দেশেই “সবার জন্য স্বাস্থ্য” ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব নয়। আমরা যদি আমাদের দেশের সমস্ত রাজনৈতিক মতপার্থক্য ও খেয়োখেয়ির রাজনীতিকে সরিয়ে রেখে সবার জন্য স্বাস্থ্য এই মৌলিক দাবি টিকে অর্জন পারতাম তবে হয়তো আজ এই করোনা কালে চিত্রটি অন্যরকম হতো। তবে এখনো সময় চলে যায় নি।

বিশ্বে শুধু ইংল্যান্ড জার্মানির মতো বড় দেশগুলোতে নয় আমাদের প্রতিবেশী ছোট ছোট দেশ, যেমন শ্রীলংকা, ভিয়েতনামেও সবার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আওতায় নাগরিকেরা চিকিৎসা পরিষেবা পায়। অর্থাৎ এইসব দেশগুলিতে রাষ্ট্রের দায়িত্বেই নাগরিকের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। বর্তমানে সারা পৃথিবীর প্রায় ৪০ শতাংশ দেশে এমন ব্যবস্থা চালু আছে। আমরা দেখছি সবার জন্য স্বাস্থ্যের পাশাপাশি যে সব দেশে জনস্বাস্থ্যের উপরে জোর দেওয়া হয়েছিল, যে সব দেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক বৈষম্য কম সেই সব দেশ তুলনামূলক ভাবে কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে অনেকটাই সফল।

আমাদের দেশে এই জনস্বাস্থ্যটাই অবহেলিত। প্রবল অর্থনৈতিক বৈষম্যের পাশাপাশি নেই কোনো স্বাস্থ্য সচেতনতা।আমরা ছোটবেলা থেকে পড়তে শিখি “স্বাস্থ্যই সম্পদ”। কিন্তু এই আপ্তবাক্যটি আমরা শুধুমাত্র বহন করে নিয়ে গেছি, বাহন করতে পারিনি। স্বাস্থ্যকে আমরা খুব সহজলভ্য বিষয় বলে মনে করলেও স্বাস্থ্য সম্পর্কে আমাদের ধারণা এখনো স্বচ্ছ নয়। এমনকি স্বাস্থ্য ভবনে বসে থাকা আমলাদেরও নয়! এখনও এদেশে শুধুমাত্র উপযুক্ত শৌচাগার,পয়:প্রণালী ব্যবস্থা, পরিষ্কার পানীয় জল, সুষম খাদ্যের অভাবে অসংখ্য মানুষকে রোগে ভুগতে হয়। যেখানে বেশিরভাগ রোগই প্রাথমিক প্রতিরোধকারী ব্যবস্থার মাধ্যমেই আটকে দেয়া যায়। বর্তমান প্রচলিত ব্যবস্থায় স্বাস্থ্য বলতে শুধু রোগের চিকিৎসা বোঝায়। আদতে তা নয়। রোগের চিকিৎসা স্বাস্থ্যের একটা অংশ মাত্র।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী শরীর-মন ও সামাজিকভাবে ভালো থাকার অবস্থা হল স্বাস্থ্য। সে ক্ষেত্রে শুধু নীরোগ থাকা স্বাস্থ্য নয়। আসলে স্বাস্থ্য একটি নিরবিচ্ছিন্ন চলমান প্রক্রিয়া। কিছু নিয়ম, কিছু আচরণ বিধি, যা কখনোই থামিয়ে দিলে চলবে না। প্রক্রিয়াটি সামাজিকভাবে প্রতিটি মানুষকে গ্রহণ করতে হবে। তবেই জনস্বাস্থ্য রক্ষিত হবে। এর প্রমাণ আমরা করোনা আবহে পেয়েছি। পাশের বস্তিতে করোনা পাড়ি দিলে আমার কোঠা বাড়িতেও আমি সুরক্ষিত নই, সে উপলব্ধি আশা করি মানুষের হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে কেউ নিজের জন্য সুরক্ষিত বলয় গড়েও করোনা সংক্রমণ আটকাতে পারেননি। বরং মাস্ক পরা, বার বার হাত ধোয়া ও শারীরিক ব্যবধান রাখার মত করোনা প্রতিরোধের উপায়গুলিও সার্বজনীনভাবে এক, রোগ ঠেকানোর জন্য সবার করণীয়।

PrevPreviousহাইপারটেনশনের অ থেকে চন্দ্রবিন্দু- ৩
Nextহাইপারটেনশনের অ থেকে চন্দ্রবিন্দু- ৪Next

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পর্কিত পোস্ট

রাজনৈতিক খুন

April 16, 2021 No Comments

রাজনৈতিক খুন গানটি একটা নিরপেক্ষ জায়গা থেকে লেখা। সারাক্ষণ কোন না কোন দলের রাজনৈতিক কর্মী খুন হচ্ছেন। তারা সবাই প্রান্তিক মানুষ। রাজনৈতিক নেতারা ক্ষমতা ভোগ

জানালা

April 16, 2021 No Comments

কতো ছোট ছিলাম? এখন দাদাদের কাউকে জিজ্ঞেস করলে সঠিক উত্তর কেউ দিতে পারবে না নিশ্চয়ই। আমার বয়স তখন বছর চারেকের বেশী ছিল না সম্ভবত। আমাদের

বিভাজন

April 16, 2021 No Comments

। বিভাজন। রাস্তায় বাধা এলে মানুষ বা গাছ হোক, কাটা প্রয়োজন। বলি ছাড়া ক্ষমতার হয়না বোধন, আহুতি দিতেই হবে কিছু নাগরিক, গণতান্ত্রিক দেশে লাশ ছাড়া

লকডাউন হবে কিনা?

April 15, 2021 No Comments

লকডাউন হবে নাকি দাদা? প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলো যে লোকটা স্বরে ভয় মেখে, তার মুখে মাস্ক ছিলো না। কালো বাদুরের মতো ঝুলছিলো একটা কান থেকে, কাকতাড়ুয়ার

দিনলিপিঃ নববর্ষ

April 15, 2021 No Comments

সময়টা সত্যিই খুব খারাপ। পশ্চিমবঙ্গে কোভিডের দু নম্বর ঢেউ আছড়ে পড়ার সাথে সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ছে গ্রীষ্মের তাপমাত্রা। আর দফায় দফায় বাড়ছে ভোটের হিংসা। কাকে

সাম্প্রতিক পোস্ট

রাজনৈতিক খুন

Doctors' Dialogue April 16, 2021

জানালা

Dr. Dayalbandhu Majumdar April 16, 2021

বিভাজন

Arya Tirtha April 16, 2021

লকডাউন হবে কিনা?

Arya Tirtha April 15, 2021

দিনলিপিঃ নববর্ষ

Dr. Parthapratim Gupta April 15, 2021

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

311490
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।