রক্তচাপ মাপার পদ্ধতি
রক্তচাপ মাপার আগে রোগীর প্রস্তুতিঃ
- রোগী রক্তচাপ মাপার আগে অন্তত ৫ মিনিট বিশ্রাম নেবেন।
- ক্যাফিন যুক্ত পানীয় যেমন চা, কফি খাওয়ার একঘণ্টার মধ্যে রক্তচাপ মাপা যাবে না।
- ধূমপান করার ৩০ মিনিটের মধ্যে রক্তচাপ মাপা যাবে না।
রোগী যেভাবে বসবেন:
- চেয়ারে হেলান দিয়ে।
- বাহু হৃদপিণ্ডের একই সমতলে থাকবে।
- পা পাশাপাশি থাকবে, একটির উপর আরেকটি নয়।
রক্তচাপ মাপার যন্ত্র:
আগেকার মার্কারি স্ফিগমোম্যানোমিটার থেকে ডায়াল বা ডিজিটাল স্ফিগমোম্যানোমিটার সবই রক্তচাপ মাপার জন্য সমান উপযোগী। তবে নিয়মিত যন্ত্রটি ঠিক আছে কিনা লক্ষ্য রাখতে হবে। অন্য যন্ত্রের সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে।
স্ফিগমোম্যানোমিটারের কাফের আকৃতিঃ
স্ফিগমোম্যানোমিটারের যে অংশটি বাহুতে জড়ানো হয়, তার মধ্যে একটি রবারের বেলুনের মত চ্যাপ্টা অংশ থাকে। একে বলে কাফ।
- কাফের দৈর্ঘ্য হবে বাহুর ঘেরের অন্তত ৮০% এবং প্রস্থ অন্তত ৪০%।
- মোটা মানুষদের জন্য বড় কাফ ব্যবহার করা হয়।
- রোগী কোনও টাইট জামাকাপড় পরবেন না।
- কাফের মাঝখানটা যেখান থেকে টিউব বেড়িয়েছে সেটা কনুইয়ের সামনের দিকের ঠিক মাঝখানে কনুই থেকে ২- ৩ সেমি উপরে থাকবে।
যে ভাবে সিস্টোলিক ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ মাপা হয়ঃ
- এক হাতে রেডিয়াল পালস অনুভব করা হয়।
- অন্য হাতে বতাস পাম্প করে কাফের প্রেশার বাড়ানো হয়।
- রেডিয়াল পালস বন্ধ হওয়ার পরও আরও ৩০ মিমি পারদ অতিরিক্ত প্রেশার বাড়ানো হয়।
- তারপর সেকেন্ডে ২- ৩ মিমি করে প্রেশার কমানো হয়।
- কনুইয়ের সামনের দিকে ব্রেকিয়াল আর্টারির উপর স্টেথো রেখে রক্তচলাচলের শব্দ শোনার চেষ্টা করা হয়।
- যে প্রেশারে শব্দ শুরু হয় তাকে সিস্টোলিক প্রেশার এবং যখন শব্দ পুনরায় অদৃশ্য হয়ে যায় তাকে ডায়াস্টোলিক প্রেশার বলে। রক্তচলাচলের এই শব্দকে কোরটকফ সাউন্ড বলে।
- যদি ডিজিটাল মেশিন হয়, তাহলে একই ভাবে কাফ বাধতে হবে। এক্ষেত্রে স্টেথোর সাহায্যে কোরটকফ সাউন্ড শোনার প্রয়োজন নেই। সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক প্রেশার নিজে নিজেই স্ক্রিনে ফুটে উঠবে।
- ডায়াবেটিস রোগী এবং রোগীর বয়স ৬৫ বছরের বেশি হলে রোগীকে শুইয়ে প্রথমে রক্তচাপ মাপা উচিৎ। তারপর ২ মিনিট দাঁড় করিয়ে রক্তচাপ মাপা উচিৎ। এভাবে রক্তচাপ মাপলে বোঝা সম্ভব দাঁড়ালে রোগীর হঠাৎ রক্তচাপ কমে যাচ্ছে কিনা। একে বলে postural Hypotension।
রক্তচাপ কতবার মাপা উচিতঃ
অন্তত ১ মিনিটের ব্যবধানে দুবার মাপা উচিৎ। যদি দুবার মাপা রক্তচাপের মধ্যে ৫ মিমির পার্থক্য থাকে তাহলে তৃতীয়বার মাপা উচিৎ। যেবারে রক্তচাপ কম পাওয়া যাবে সেটিই সিস্টোলিক বা ডায়াস্টোলিক প্রেশার বলে নেওয়া উচিৎ।