গত 22 জুন ২০২০, সোমবার, সন্ধায় AMRI Salt Lake হাসপাতালে গিয়েছিলাম একজন কোভিড রোগিকে নিয়ে। ভর্তির জন্য। দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল।
রোগীর নাম অমিতাভ সাহা (৬৭)। থাকেন রাজারহাট। শরীর খারাপ লাগায় ২২ জুন দুপুরে ঐ হাসপাতালেই ডাক্তার দেবাশীষ সাহাকে দেখায় অমিতাভ। ডাক্তারবাবু কোভিড টেস্টের পরামর্শ দিলে দুপুরেই AMRI Salt Lakeএ COVID টেস্ট করা হয়। টেস্টের চার্জ নেয় ৫০০০ টাকা। বিলও দেয়। ডাক্তার দেখানোর জন্য ১১৫০ টাকা। বিকালে ডাক্তারবাবু নিজেই অমিতাভকে ফোন করে বলেন, আপনি কোভিড পজিটিভ। ভর্তি হয়ে যান।
সন্ধাবেলায় ভর্তি হতে গেলে খুব মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা হয়। প্রসঙ্গত, হাসপাতাল যাওয়ার জন্য কোন এম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি। রোগী নিজেই গাড়ি চালিয়ে হাসপাতালে গেছেন।
AMRI তে রোগী বা বাড়ির লোক কাউকে হাসপাতালে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। সিঁড়িতেও পা রাখতে দেয়নি। রোগীসহ আমরা নীচে সার্ভিস রোডে। ওরা উপরের বারান্দা থেকে কথা বলছেন। কী attitude! ২/৩ জন বাউন্সারের মত লোক বারান্দায় দাঁড়িয়ে জানতে চাইলেনঃ কী চাই। জানতে চাইলেন রোগী কে। লকডাউনের পরে না-কাটা দাড়িচুল, অসুস্থতায় বিধ্বস্ত চেহারার ৬৭ বছরের রোগীকে দেখে ভাবলেন বোধহয় টাকা দিতে পারবেন না। নানা জেরা করলেন।
অমিতাভ তাঁর ছেলের অফিসের নাম করে বলল অফিসের টাই-আপ আছে। টাই-আপ শুনেই একজনকে টাই-আপের কথা চিৎকার করে বলল ওরা। টাই আপ শুনেই সে বলল, সিট নেই। অন্য জায়গায় দেখুন।
বারবার বলা হয়, আপনাদের হাসপাতালের ডাক্তারবাবু বিকালে ফোন করে বলেছেন ভর্তি হয়ে যেতে। ওরা বলে, ডাক্তারবাবু ভর্তি হতে বলেছেন, আমরিতেই ভর্তি হতে তো বলেননি।
অমিতাভ বলে রির্পোট পর্যন্ত আপনাদের কাছে, অন্য জায়গায় যেতে বলবে কেন! কিন্তু কিছুই শুনতে রাজি নয়।
আমরা বলি, বেড না থাকলে আপনাদের বাইরে ‘বেড নেই’ নোটিস টাঙানো উচিত ছিল।
বাউন্সার টাইপের লোকেরা বলে, এটা প্রাইভেট হাসপাতাল। এখানে সরকারি নিয়ম চলে না। সিট নেই, ভর্তি হওয়া যাবে না, এটাই ফাইনাল।
আমরা বললাম এডমিশন অফিসে কথা বলব, ডাক্তারবাবুর সাথে কথা বলব। একজন বাউন্সার টাইপের লোক ভেতরে ঘুরে এসে বলল, আমিই ডাক্তার। আমি বলছি সিট নেই। আর কারো সাথে কথা বলে লাভ নেই। আবার ভিতরে গিয়ে টেস্টের রির্পোট নিয়ে এসে হাতে দিয়ে দিল।
ততক্ষণে আরও কয়েকজন বাউন্সার টাইপের লোক বারান্দায় দাঁড়িয়ে গেছে। অসহায় অবস্থায় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আমরা ফিরে এলাম।
ফোনেই কয়েকটা প্রাইভেট হাসপাতালের খোঁজ নেওয়া হল। সবাই বলল সিট নেই। কাছেই একটা প্রাইভেট হাসপাতাল জানাল, তারা হাসপাতালে জায়গা দিতে পারবে না। কিন্তু কাছাকাছি এক জায়গায় সেক্লুসনে রেখে চিকিৎসা করাতে পারে। ১০ হাজার টাকা রোজ ঘর ভাড়া। প্লাস ১১৫০ টাকা প্রতি পিপিই হিসাবে ৭ টা পিপিই খরচ রোজ দিতে হবে। ডাক্তার-নার্স, চিকিৎসা খরচ আলাদা।
এরপর আমরা গেলাম নামী সরকারি হাসপাতাল বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে। আই ডি রিপোর্ট দেখে বলল, এখানে ভর্তি সরাসরি হয় না। স্বাস্থ্য ভবন থেকে লিখিয়ে আনতে হবে। রোগীকে হাসপাতালেই গাড়িতে বসিয়ে রেখে আমাদের একজন গেল স্বাস্থ্যভবন।
স্বাস্থ্য ভবনে গেলে তারা রিপোর্ট দেখে ওদের কমপিউটার ঘেঁটে বলল, কই আপনাদের রোগীর নাম তো নেই। আবার AMRIতে চলে যান। বলুন, আইসিএমআর / সরকারি ওয়েবসাইটে রোগীর রিপোর্ট আপলোড করতে। আপলোড হলে তারপর আসুন। ফের রওনা আমরির উদ্দেশ্যে। তখন রাত প্রায় সাড়ে নয়টা।
এদিকে এতরাতে আমরা তিনজন পাকাচুলের প্রবীণ মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি একজন কোভিড রোগী নিয়ে – এটা আই ডি-র কর্তব্যরত ডাক্তারবাবুদের হয়ত খারাপ লাগে। দুইজন তরুণ ডাক্তার ছিলেন ডিউটিতে। তাঁরা আমাদের ডেকে বলেন, আপনাদের রোগীকে পাঠান দেখি কী করা যায়। ওরা রোগীকে চেক করে, AMRI-র দেওয়া পজিটিভ রিপোর্ট হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ ফোনাফুনি করেন। তারপর বলেন আমরা ভর্তি নিয়ে নিচ্ছি।
আই ডি অমিতাভকে ভর্তি করে নেয়। তখন রাত প্রায় দশটা। অমিতাভ সাহা বর্তমানে আইডি হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন আছেন।
লিখেছেন বিশিষ্ট মানবাধিকার-কর্মী রঞ্জিত শূর।
এদের শাস্তি হওয়া উচিৎ এরা ক্ষমার অযোগ্য। মানুষ আর এখন মানুষ কে মানুষ মনে করে না।
এই সময়ে,আমাদের আরো বেশী সতর্ক থাকতে হবে।না হলে এরকম কুকুর বিড়াল এর মতো ব্যবহার জুটবে।হাসপাতালের লোকজন কে যদি bouncer মনে হয়,তাহলে বোঝাই যাচ্ছে পরিস্থিতি কি!!!
Govt should take strong action against them
C. M. , west Bengal is very much keen to stop these type of mal practices, requested to place it before her in Govt website & or her personal
e. mail address, for her personal intervention & or her perusal.