মিম থেকে আজ যাওয়ার কথা সিতাং এর ‘অতিথি হোম স্টে’- তে। পাহাড়ি রাস্তা ধরে যাওয়াটাই আসল ঘোরা।
যাত্রা শুরুর সাথে সাথে ঝেঁপে বৃষ্টি শুরু হলো। আধা অন্ধকারে আমাদের গাড়ি আস্তে করে সামনের একটা ম্যাটাডোরে ঠুকে দিল। একপাশের হেডলাইটের কাঁচটা গেল। ড্রাইভার দাদা বেশ খুশি। বলল, ‘সমস্যা নেই, হেডলাইট জ্বলছে।’
ঘুম পেরোনোর সাথে সাথে বৃষ্টি কমে গেল। প্রথম থামলাম লামহাটা। এখানে পাহাড়ের উপরে একটা ছোটো ও পবিত্র লেক আছে। ৭৫০ মিটার উঁচু। রুপালী প্রথমেই রণে ভঙ্গ দিল। নীচেই একটা বেঞ্চিতে ধপাস করে বসে বলল, ‘আমার দ্বারা হবে না।’
আমি আর দুই মেয়ে উঠতে শুরু করলাম। রানি আর সানাই প্রায় দৌড়ে উঠছে। আমি হাঁপাতে হাঁপাতে চিৎকার করছি, ‘ওরে আস্তে হাঁট।’
পথের কোনো শেষ নেই। একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘উপরে কী আছে?’
তিনি জবাব দিলেন, ‘অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য। একবার দেখলে জন্ম জন্মান্তরেও ভুলবেন না। যান, একটু কষ্ট করে উঠে যান।’
কষ্টের শেষ সীমায় পৌঁছে বুঝলাম অর্ধেক রাস্তাও আসিনি। ওই দিকে দুই মেয়ে তখনও উৎসাহের চরম সীমায়। তিড়িংবিড়িং করে লাফাচ্ছে আর পা হড়কাচ্ছে। দুজনের প্যান্টেই কাদা মাটি লেগে যা-তা অবস্থা।
দু’জনকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ফিরতে রাজি করালাম। আশপাশে আর কেউ নেই। ফিরছি…. ফিরছি আরেক দল লোক উঠছে।
একজন জিজ্ঞাসা করলেন, ‘উপরে কি ভালো কিছু দেখার মতো আছে?’
বললাম, ‘অদ্ভুত সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য। একটু কষ্ট করে উঠে যান, না হলে মিস করবেন।’
এবার এ জায়গা থেকে তাড়াতাড়ি পালাতে হবে। তিনচুল, তাকদা ঘুরে সিতাং যাব।
ছবিঃ লামহাটায় পাহাড়ে ওঠার পথে দুই কন্য।