স্টালিন একবার বলেছিলেন যে বুর্জোয়া গণতন্ত্রের পতাকাটা ধুলায় ভূলুণ্ঠিত, শ্রমিক শ্রেণীকেই আজ এগিয়ে এসে সেই পতাকা উর্ধ্বে তুলে ধরতে হবে। গত কয়েকদিনে মা কালী নিয়ে বিতর্কে কিছু বামপন্থীদের কাজকর্ম দেখে মনে হচ্ছিল যে হিন্দু পুনরুত্থানবাদের পতাকা মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে দেখে তারা মহান কর্তব্য পালনে এগিয়ে এসেছেন সেটা তুলে ধরার জন্য। তারা কালিকাপুরাণ থেকে আগমবাগিসের লেখার ওপর হুমড়ি খেয়ে প্রাণপণে খুঁজে যাচ্ছেন কোথায় আছে মা কালীর মদ মাংস খাওয়ার শাস্ত্রীয় রেফারেন্স। আর সেটা খুঁজে পেলেই শিশুর মত আনন্দে আত্মহারা হয়ে ঘোষণা করছেন, এই তো পেয়ে গেছি, এবার আসবি আয় লড়তে হিন্দুত্ববাদীদের দল, তোদের থোতা মুখ ভোঁতা করে দেব একেবারে। মা কালীর বিড়ি টানার রেফারেন্স অবশ্যই এখনো এই উৎসাহী বামেরা খুঁজে পান নি তবে চেষ্টা চলছে।
একটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক চরিত্র মদ খেত না কি বিড়ি টানতো সেটা নিয়ে ঘণ্টার পর ঘন্টা বিতর্ক দক্ষিণপন্থীরা চালিয়ে যেতেই পারে কারণ আসল কোনো ইস্যু নিয়ে বিতর্কে নামাটা তাদের ভারী অপছন্দ, তাহলেই তো তাদের দিকে প্রশ্ন ধেয়ে আসবে যে, মদ মাংস বিড়ি কে খেত আর খেত এটা জরুরী নয়, রক্তমাংসের কতজন ভারতীয় পেট ভরে ভাত খেতে পাচ্ছে এটা জরুরী।
এসব প্রশ্ন এড়ানোর জন্য তারা তো তাদের চেনা মাঠ আর সাজানো রেফারি নিয়ে খেলতে চাইবেই। তাবলে বামপন্থীরাও? তারাও ওই মাঠেই খেলতে যাবে?
বিবেকানন্দ রচনাবলীর পাতার ছবি দিয়ে হলাভ নেই, ওদের থেকে বেশি বিবেকভক্ত সেজে লাভ নেই। ওই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে আসুন, আসল ইস্যু নিয়ে বিতর্কে ওদের বাধ্য করুন, খাদ্য নিয়ে কথা উঠলে খাদ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে বলুন, পুষ্টি নিয়ে বলুন, মিড ডে মিল নিয়ে বলুন, মাঠটা বড় করুন কমরেড।