৭ই অগস্ট ১৯২১। আজ থেকে ৯৯ বছর আগে, কানাডার টরন্টো শহরের এক ল্যাবে ডায়াবিটিস গ্রস্ত এক কুকুরের শিরায় প্রয়োগ করা হয়েছিল ইনসুলিন। কি হয়েছিল সেই পরীক্ষার ফলাফল? ইনসুলিন শতবর্ষে ইনসুলিন আবিষ্কারের পুঙ্খানুপুঙ্খ দিনলিপি, তার প্রধান চার রূপকার ও অন্যান্য চরিত্রগুলোকে ফিরে দেখা।
Insulin is not a cure; it’s a treatment – F. G. Banting
সময়টা ভালো যাচ্ছে না ডা. বান্টিঙের। প্রাইভেট প্র্যাকটিস করবেন বলে, সেই ১লা জুলাই নিজের চেম্বার খুলছেন কানাডার লন্ডন[১] শহরে। তা আজ প্রায় ২০-২১ দিন হয়ে গেল চেম্বারটা খুলেছেন তিনি, অথচ একটা রোগীরও দেখা নেই এই ক’দিনে! একটাও না। চেম্বার খুলে শুধু হাপিত্যেশ করে বসে থাকা- যদি আজ একটা রোগী আসেন। কিন্তু নাহ্, একটাও রোগী আসেন নি এই ক’দিনে। আর আসবেনই বা কী করে? এই শহরে তো তিনি নতুন এসেছেন। এখানে তো তিনি আগন্তুক। না তিনি কাউকে চেনেনে এখানে, না কেউ তাঁকে চেনেন এখানে। ফলে, দু’একটা ‘রেফারেন্স’ কেসও যে আসবে, সেই সম্ভাবনাও নেই এখানে।
লন্ডন শহরে চেম্বার খুলবেন বলে, জুন মাসে এসে একটা বাড়ি পছন্দ করে যান বান্টিঙ। জুলাই মাসে এই বাড়িটা কিনে[২] নেন তিনি। বাড়িটা কিনতে গিয়ে অগ্রিম বাবদ বেশ কিছু টাকা ব্যয় হয়েছে তাঁর। হাতে নগদের বিশেষ টান পড়ছে এবার। অথচ একটাও রোগীর কোনো দেখা নেই এখনও। এমন ভাবেই কাটল আরও সাত দিন। নাহ্, একটাও রোগী আসেন নি এই সাত দিনেও। মহাচিন্তায় পড়লেন ডা. বান্টিঙ। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভেবে চলেছেন তিনি, এই ভাবে আর কতদিন টানা যায়? বিকল্প একটা কিছু ভাবতেই হচ্ছে তাঁকে এবার। পেশায় তিনি শল্যবিদ [সার্জন]। কিন্তু দেশে তো আর দক্ষ শল্যবিদের অভাব নেই। ফলে নিকটবর্তী হাসপাতালগুলোর কোনো একটাতেও কোনো শল্যবিদের পদ খালি নেই। শল্যবিদের পদ খালি নেই দেখেই না প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে নামা। কিন্তু এই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের যা হাল, তাতে তাঁর অস্তিত্বই এখন সংকটের মুখে। দু’বেলা অন্ন সংস্থান করাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন তাঁর। ভাবছেন, শল্যবিদের পদ ছাড়াও, অন্য কোনো পদে যোগ দেবার প্রস্তাবও যদি পান, তাহলে তাতেও যোগ দিতে রাজি আছেন তিনি। সেই মতো অবশ্য খোঁজ খবরও রাখছেন তিনি। যদি কোনো হাসপাতালে, কোনো একটা পদ ফাঁকা থাকে, …।
২৯শে জুলাই ১৯২০, প্রথম রোগী এলেন ডা. বান্টিঙের চেম্বারে। চেয়ার ছেড়ে লাফিয়ে উঠার উপক্রম ডা. বান্টিঙের। রোগীকে আপ্যায়ন করে চেয়ারে বসিয়ে মোলায়েম কন্ঠে জিগেস করলেন ব্যগ্র বান্টিঙ
– কী সমস্যা হয়েছে আপনার?
– আজ্ঞে, মদ পাচ্ছি না কোথাও। আপনি যদি কয়েক বোতল মদ লিখে দেন, তাহলে … । (সেই সময়ে গোটা অন্টারিয় প্রদেশে মদ ক্রয় বিক্রয় নিয়ে খুব কড়া আইন ছিল।)
লন্ডনে, নিজের চেম্বারে |
অ্যাঁ, রোগীর কথা শুনে তো তাজ্জব বান্টিঙ! রাগে হাত পা কাঁপতে শুরু করেছে তাঁর। কিন্তু নিজেই নিজেকে শান্ত করলেন এই বুঝিয়ে যে, আরে এ তো রোগী। প্রেসক্রিপশন লিখে দিলেই নগদ আমদানি হবে। মদই লেখো আর ওষুধ, তাতে আর কী আসে যায়? কী আর করবেন বান্টিঙ। দাঁতে দাঁত চেপে লিখলেন প্রেসক্রিপসন। ফি বাবাদ নগদ ২ কানাডিয়ন ডলার রোজগার হলো তাঁর। ডা. বান্টিঙ নিজেই তাঁর হিসাবের খাতায় সেই রকমই লিখে গেছেন। বান্টিঙের লিখে রাখা সেই হিসাব থেকে জানা যাচ্ছে, জুলাই মাসে মোট ৪ কানাডিয়ন ডলার আয় হয়েছিল তাঁর। অগস্ট মাসে তাঁর আয় হয়েছিল ৩৭ কানাডিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে ৪৮ কানাডিয়ন ডলার, অক্টোবরে ৬৬ কানাডিয়ন ডলার। আয় যে ধীর গতিতে বেড়ে চলেছে তা তো স্পষ্টই। কিন্তু এই সামান্য অর্থ দিয়ে কি মাস চালানো যায়? আয় যেমন আছে, সেই অনুপাতে ব্যয় তো আছে না কি!
এই অবস্থা সামাল দিতে একটা সুযোগ এলো বান্টিঙের কাছে। খবর এলো, লন্ডন শহরের ‘দ্য ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিয়’র (বর্তমান নাম, ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি) এনাটমি ও ফিজিওলজি বিভাগে পার্ট টাইম ‘ডেমনস্ট্রেটর’ নেওয়া হবে। হোক এনাটমি বা ফিজিওলজি, তাই সহি। এক মুহূর্ত দেরি করলেন না বান্টিঙ। যোগাযোগ করলেন নির্দিষ্ট দপ্তরে। মনোনীত হলেন তিনি। ঘন্টা প্রতি ২ কানাডিয়ন ডলারের চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেমনস্ট্রেটর পদে নিযুক্ত হলেন বান্টিঙ।
চাকরিটা পাওয়াতে একটু আর্থিক সুরাহা হলো বান্টিঙের। দু’পয়সা বেশি রোজগার হচ্ছে এখন তাঁর। পাশাপাশি প্রাইভেট প্র্যাকটিস তো আছেই। কিন্তু গোল বাঁধল অন্যত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র পড়াতে গিয়ে বান্টিঙ পড়লেন এক চিরন্তন সমস্যায়। তিনি এখন ভালো করেই বুঝতে পারচ্ছেন, নিজে পড়া বা পড়ে পাশ করা এক জিনিস আর অন্যকে পড়ানো বা উপযুক্ত ভাবে বোঝানো আর এক জিনিস। নিজে যখন পড়েছিলেন তখন নমো নমো করে পাশ করার মতো করেই পড়েছিলেন। সেই আধা জানা আর আধা না-জানা জ্ঞান নিয়ে ছাত্র পড়াতে গিয়ে এখন বেশ অস্বস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। যদিও বান্টিঙের মতো তরুণ অধ্যাপক পেয়ে ছাত্রদল খুশিই। বান্টিঙের সাথে প্রায় বন্ধুর মতোই সম্পর্ক তাঁদের। কিন্তু বান্টিঙ বেশ বুঝতে পারছেন ছাত্রকুলের এই ভালো লাগা দিয়ে খুব বেশি দিন নিজের কম জানাকে ঢেকে রাখতে পারবেন না তিনি। স্পষ্টই বুঝতে পারছেন, নিজের জানা বোঝার পরিধিকে না বাড়ালে এই পেশায় টেকা মুশকিল। আর কোনো কারণে এই পদ যদি একবার হাতছাড়া হয় তাঁর, তাহলে আবার আর্থিক বিপর্যয় নেমে আসবে তাঁর জীবনে। না, না, কোনো মতেই এ সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না, বিড়বিড় করে উঠলেন বান্টিঙ। পড়তে হবে তাঁকে, নতুন করে পড়তে হবে সব, মনে মনে পরিকল্পনা ছকে চলেছেন তিনি। আগামী দু’এক দিনের মধ্যেই যে যে অধ্যায়গুলো বেশি প্রয়োজন, সেই অধ্যায়গুলো আগে পড়ে নেবেন তিনি। বাকি অধ্যায়গুলো সময় নিয়ে পরে পড়বেন। সেই পরিকল্পনা মতো নতুন করে পড়তে শুরু করলেন বান্টিঙ। ছাত্রাবস্থায় যত
বান্টিঙের লন্ডনস্থ বাড়ি, সামনে কুইন্স এভিনিউ। সিঁড়ি দিয়ে উঠেই বান্টিঙের চেম্বার। ডানদিকের ফাঁকা জমিতে গড়ে উঠছে স্যর ফ্রেডরিক বান্টিঙ স্কোয়ার। বাড়িটার ৩৬০ ডিগ্রি ছবি সহজলভ্য। |
না পড়েছেন, এখন পড়ছেন তার চেয়ে ঢের বেশি। প্রায় উদ্ভ্রান্তের মতো পড়তে লাগলেন বান্টিঙ। সময় পেলেই চলে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে। সারাক্ষণ সেখানেই কাটাচ্ছেন তিনি। পরবর্তী কালে এই প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, “স্বাধীনভাবে সব কিছুই পড়তাম, তবে অধিকতর মনোযোগ ছিল শল্যবিদ্যায়”।
সেই সময়ে ওয়েস্টার্ন অন্টারিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি ও ফিজিওলজির বিভাগীয় প্রধান পদের দ্বায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক ডা. এফ.আর. মিলার। ২৯শে অক্টোবর ১৯২০, শুক্রবার, বান্টিঙের উপর এক বিশেষ দায়িত্ব দিলেন ডা. মিলার। মানবদেহে কার্বোহাইড্রেট পরিপাক তথা ডায়াবিটিসের উপর লেকচার দিতে হবে বান্টিঙকে। ১লা নভেম্বর, সোমবার, সকাল ৯টায় ক্লাস। হাতে শনি-রবি দু’দিন সময় আছে। ডা. মিলারের সাফ নির্দেশ, এই দু’দিনের মধ্যে বান্টিঙ যেন তার সমস্ত প্রয়োজনীয় নোট গুছিয়ে তৈরি করে রাখেন।
বান্টিঙ পড়লেন মহা সমস্যায়। একেই নিজের পড়া নিয়েই হিমশিম খাচ্ছেন তিনি, তার উপর আবার ডায়াবিটিস! এমনিতেই এই ডায়াবিটিস বিষয়টা তাঁর পছন্দের বিষয়ের মধ্যে পড়ে না। ছাত্র জীবনে ডায়াবিটিসের ক্লাসে কখনও ঠিক মতো উপস্থিত থাকেন নি তিনি। তাঁর নিজের ভাষায়, “ডায়াবিটিস নিয়ে কোনোদিনও আগ্রহ ছিল না আমার আর ডায়াবেটিক ডায়েট নিয়ে কিছুই জানতাম না আমি। শল্যবিদ হিসেবে আমার অভিজ্ঞতায় ডায়াবিটিস বলে কিছুর স্থান ছিল না”। এহেন অপছন্দের একটা বিষয় নিয়ে লেকচার দেওয়ার প্রস্তাব শুনে বেজায় বিরক্ত হয়েছেন বান্টিঙ।
অনেকেই মনে করেন, এটাই ছিল বান্টিঙের জীবনের একটা মোড় ঘোরানো সিদ্ধান্ত, চলতি ভাষায় যাকে ‘টুইস্ট’ বলা যেতে পারে। কারন, ডায়াবিটিসে নিতান্ত অনাগ্রহী বান্টিঙ, ডায়াবিটিস নিয়ে লেকচার দিতে গিয়েই খুঁজে পেয়েছিলেন নিজের গবেষণার রসদ। তারপর থেকেই তিনি শুরু করে ছিলেন ইনসুলিন নিয়ে গবেষণা। আর শেষ পর্যন্ত তিনিই আবিষ্কার করে ফেললেন ডায়াবিটিসে একমাত্র দাওয়াই- ইনসুলিন।
পরবর্তী সময়ে তাঁর ইনসুলিন সংক্রান্ত গবেষণার সহযোগী চার্লস বেস্ট একাধিক সাক্ষাৎকারে কিন্তু ভিন্ন এক কথা বলেছেন। বেস্ট বলেছেন, ১৪ বছরের বালিকা জেন ছিলেন, কিশোর বান্টিঙের খেলার সঙ্গিনী। অনেকেই বলেন, জেন ছিলেন বান্টিঙের জীবনের প্রথম প্রেম[৩]। অল্প বয়সেই ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হন জেন। ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হবার কয়েক বছর পরই মারা যান জেন। জেনের মৃত্যুই ডায়াবিটিস নিয়ে ভাবিয়ে তুলেছিল বান্টিঙকে। এই জেন বৃত্তান্তের কথা উল্লেখ করেছেন বান্টিঙের দাদার নাতি বব বান্টিঙও। বব বলেছেন, জেনের মৃত্যুর পর আক্ষেপ করে বান্টিঙ বলেছিলেন “এটা কী করে সম্ভব যে কোনো ডাক্তারই এই মারাত্মক রোগটা সারাতে পারলো না”। জেন বৃত্তান্ত নিয়ে অবশ্য সন্দেহ পোষণ করেন বেশ কিছু গবেষক। অনেকেই মনে করেন এই জেন বৃত্তান্ত আদতে এক অতিরঞ্জিত কাহিনী। জেনের ঘটনাটা সত্য হোক বা না হোক, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে, ১৯২০ সালের অক্টোবরের মাসের আগে ডায়াবিটিস নিয়ে বান্টিঙের জ্ঞান ও আগ্রহ ছিল শূন্যের খুব কাছাকাছি।
(চলবে)
[১] কানাডার অন্টারিয় প্রদেশের দক্ষিণে, ইরি ও হুরন হ্রদের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত এই শহরের নাম, ইংলন্ডের রাজধানী লন্ডনের আদলে রাখা হয়েছিল। এমনকি কানাডার এই শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর নামও রাখা হয় টেমস। প্রসঙ্গত, ছোটো-বড় মিলিয়ে পৃথিবীতে অন্তত ৩০টা স্থান আছে যা লন্ডন নামে পরিচিত।
[২] লন্ডন শহরের মধ্যভাগে, অ্যাডিলেড স্ট্রিট নর্থ ও কুইন্স এভিনিউর সংযোগ স্থলে, হলুদ পাথরের তৈরি আড়াই তলা বাড়িটা ১৯০০ সালে নির্মাণ করেন জনৈক ডা. জে.এ. রাইট। ১৯১৩ সালে রউল্যান্ড হিলকে বাড়িটা বিক্রি করে দেন ডা. রাইট। ১৯২০ সালের জুন মাসে, ৭৮০০ কানাডিয়ন ডলারে বাড়িটা কেনার চুক্তিতে ২০০০ কানাডিয়ন ডলার অগ্রিম প্রদান করেন বান্টিঙ। বাড়ি কেনার ব্যাপারে অবশ্য পারিবারিক কিছু সাহায্যও পেয়েছিলেন বান্টিঙ। কাছেই, নিজের নতুন বাড়ি তৈরি করছেন রউল্যান্ড হিল। সেই নতুন বাড়ির নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত, এই পুরানো বাড়িটা পুরোপুরি হস্তান্তরে অক্ষম বলে জানান হিল। যেহেতু বান্টিঙ বাড়ি কেনার পুরো টাকাটা দেন নি, তাই বাড়ির পিছনের অংশে হিল পরিবারের থাকার বন্দোবস্ত হয়। বাড়ির সামনের অংশের, একতলার দুটো ঘর আর দোতলার দুটো ঘরে থাকতেন বান্টিঙ। একতলার সামনের ঘরে নিজের চেম্বার খুলেছিলেন তিনি আর দোতলায় ছিল তাঁর বেডরুম। জানুয়ারি ১৯২১ সালে বাড়িটা দখলে আসে বান্টিঙের। সেপ্টেম্বর ১৯২১ সালে জনৈক জেমস ক্লার্ককে বাড়িটা বিক্রি করে দেন বান্টিঙ। ১৯৮১ সালে, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘কানাডিয়ন ডায়াবিটিস এ্যাসোসিয়েশন’ (বর্তমান নাম ‘ডায়াবিটিস কানাডা’) এই বাড়িটা কিনে নেয়। বাড়ির সামনের অংশে (যেখানে বান্টিঙ থাকতেন) একটা মিউজিয়ম স্থাপন করেন তাঁরা এবং পিছনের দিকে স্থাপন করেন তাঁদের কার্যালয়। নভেম্বর ১৯৯৭, ‘ন্যাশনাল হিস্টোরিক সাইট অব কানাডা’ ঘোষণা করে বাড়িটা অধিগ্রহণ করেন কানাডা সরকার।
[৩] বান্টিঙের জীবনীকারের মতে, বান্টিঙের প্রথম প্রেমিকার নাম ইসাবেলা নাইট। ইসাবেলা ছিলেন তাঁর বৌদির বোন। কিশোর বয়সের ইসাবেলা-বান্টিঙের এই মেলামেশা অবশ্য শেষ পর্যন্ত কোনো পরিণতি পায় নি।