কালীপুজোর রাতে আমার কখনওই ভালো ঘুম হয় না। শব্দবাজি নিষিদ্ধ হবার পরে তো আরওই না। আগে তবু সারাক্ষণ দুম-দাম ফাটত, আজকাল হঠাৎ একটা ফাটে। বেশি রাতে। ঘুমোনো দায় হয়ে ওঠে।
আজও হল। কটা বাজে জানি না। হঠাৎ কর্ণবিদারী বিকট বাজির শব্দে দম বন্ধ হয়ে গভীর ঘুম ভাঙল। চিৎকারও করেছিলাম নিশ্চয়ই। প্রবুদ্ধও উঠে বসেছে। আমি বুকে হাত দিয়ে নিঃশ্বাস আর বুক ধড়ফড় দুই-ই থামানোর চেষ্টা করছিলাম। প্রবুদ্ধ পাশ থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরল। কাছে টেনে নিল। পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল, “কিছু না, কিছু না… বাজি…”
আমি মাথাটা ওর বুকের ওপর রাখলাম। বললাম, “তবু… ঘুমের মধ্যে…”
প্রবুদ্ধ যত্ন করে আমাকে শুইয়ে দিল। ধরে রইল। ঘুমিয়ে পড়ার আগে মনে হল, ওর ভালোবাসার প্রতি আমি কতটা কৃতজ্ঞ, সেটা ওকে কখনও বলিনি।
বলা হল না। ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ঘুম ভেঙে মনে পড়ল না-বলা কথাটা। কিন্তু এখন পাশের বালিশটা খালি। চোখ তুলে তাকালাম, সাইডবোর্ডের ছবিটার দিকে। উঠে গিয়ে শুকনো মালাটা খুলে ফেলে দিলাম। নিচু হয়ে ছবির প্রবুদ্ধর চোখে চোখ রেখে বললাম, “কিন্তু তুমি তো জানো… জানো না?”