“বৃহত্তর স্বার্থে” ছাত্রছাত্রীদের আলোচনায় রাজি হওয়া উচিত ছিল।
যা-ই বলুন, জনগণের টাকায় মাইনে পায় – কর্মবিরতিতে মানুষের এত অসুবিধে হচ্ছে – কাজে তো ফিরতে হবে, নাকি?
ঠিক। একদম ঠিক।
কিন্তু দেখুন, জনগণের টাকায় মোটা টাকা মাইনে নেওয়া পুলিশ কমিশনার, স্বাস্থ্য-সচিব আর স্বাস্থ্যশিক্ষা-অধিকর্তা (ডিএমই) চেয়ারের লোভ ছাড়তে পারছে না, পদ আঁকড়ে বসে আছে। দায়স্বীকার করে (এমনকি না করেও) – না না, মাইনে বন্ধ করে দিতে বলছি না – তাঁরা অন্তত পদত্যাগটুকু করুন না! সমস্যার নব্বই শতাংশ মিটে যায়।
আর জনগণের ভোটে নির্বাচিত – জনগণের অছি হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত – মাইনে পান অথচ নেন না (চলে কী করে, কে জানে!) – স্বাস্থ্যমন্ত্রী? নাহ্, অত আশা করি না।
তিনি নাকি দু’ঘণ্টা ধরে কথা বলবেন বলে অপেক্ষা করে বসেছিলেন, কেউ আসেনি।
মেয়েটার মা-ও অপেক্ষা করে বসেছিলেন। অবশ্য বসার জায়গা, বোধহয়, জোটেনি। দাঁড়িয়েছিলেন। মেয়ের কর্মক্ষেত্রে। তিন ঘণ্টা। মেয়ের সাথে কথা বলার জন্য নয় – ধর্ষিতা মেয়ের ক্ষতবিক্ষত মুখটা একবার দেখবেন বলে। মেয়েকে দেখতে পাওয়া তো দূর, কেউ পাশে এসে বসেননি। আপনার আমলা/চামচা পুলিশ পরিবৃত হয়ে ঠান্ডা ঘরে বসে অপেক্ষার সঙ্গে সেই অপেক্ষার দূরত্ব ততখানিই, যতখানি দূরত্ব আপনার আজকের কথাগুলোর সঙ্গে সদিচ্ছা ও ন্যায়বিচারের আশার।
মাননীয়া, আপনাকে আমরা বিশ্বাস করি না। বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। বিশ্বাস করার কোনও কারণ নেই বলেই।
নিহত-ধর্ষিতা মেয়ের বাপ-মায়ের কথাবার্তার ভিডিও যে সরকারের পুলিশ তুলে এনে সরকারি দলের হাতে দেয় এবং যে সরকারি দল সভা করে সেই ভিডিও সম্প্রচার করে – তাদের ‘ভিডিও রেকর্ডিং’-এর আশ্বাসে কে ভরসা রাখবে, বলুন?
সদিচ্ছে থাকলে আপনার অনুগত আমলা-কমিশনার-স্বাস্থ্যকর্তাদের বলুন, পদত্যাগ করতে।
বলুন, মেডিকেল কলেজে কলেজে যারা ভয় দেখানোর সংস্কৃতি চালু রেখেছিল – এবং এখনও চালু রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে – তাদের বিরুদ্ধে সত্যিকারের কিছু কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে।
কথাটা হলো, পরিবেশ। আস্থা, ভরসা, বিশ্বাস আর নির্ভরযোগ্যতার পরিবেশ। ওটুকু করুন।
ওটুকু ফিরলেই, দেখবেন, লাইভ স্ট্রিমিং ইত্যাদি প্রভৃতি কত সহজে অবান্তর হয়ে যাবে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ছাত্রছাত্রীদের ভাই-বোন ভাবতে পারা খুবই ভালো ব্যাপার, কিন্তু তার আগে নিজেকে নাগরিকদের দ্বারা নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখুন – সেই দায়িত্ব বিষয়ে সচেতন হোন – তাহলেই বাকি কাজটা আর তেমন কঠিন হবে না।
দুদিন আগে ‘উৎসবে ফিরুন’ আর আজ ‘শোকপ্রস্তাব’ নিয়ে ভাবনা!! হজম করার পক্ষে একটু গুরুপাক হয়ে গেল না? রাজ্যের সবাই তো আর আপনার দলের নির্ভীক সেনানী নয়, যে, যা বলবেন সবই… যাক গে!!