(১৩.০৯.২০২৪)
গল্পের নবম অধ্যায়ে বলেছিলাম লালবাজার অভিযানের কথা। কয়েকজন নিরস্ত্র চিকিৎসকের অহিংস অবস্থান বিক্ষোভের পরিণতিতে পুলিশের ব্যারিকেড উঠে যাওয়া এবং পুলিশ কমিশনারের হাতে তাঁরই পদত্যাগের ডেপুটেশন জমা দেওয়া- এপর্যন্ত এই ছিল আন্দোলনের ক্লাইম্যাক্স পয়েন্ট- কিন্তু এখন আন্দোলন যে উচ্চতায় পৌঁছেছে, সেখান থেকে লালবাজার অভিযানের শৃঙ্গটা বেশ ছোটই দেখাচ্ছে।
৬১. সুপ্রিম কোর্টের হতাশা
এই কেস নিয়ে উচ্চ আদালতে যখন রাজ্য গালে গালে চড় খাচ্ছে, সেই মুহূর্তেই কেসটা স্বতঃপ্রণোদিত শুনানির সিদ্ধান্ত নেয় সর্বোচ্চ আদালত। আর খুব প্রত্যাশিত ভাবেই সর্বোচ্চ আদালত চেয়েছে দ্রুত নর্ম্যালসি ফিরে আসুক। সর্বভারতীয় সব জায়গার ডাক্তারেরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়, আদালতের উপর ভরসা রেখে, প্রথম শুনানির পরই। বাকি ছিল শুধু পশ্চিমবঙ্গ। আর এখানেই রাজ্যের পরিত্রাতার রূপে দেখা যায় সর্বোচ্চ আদালতকে, আবারো একবার।
৫ই সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য হয়েছিল। তার আগের রাতে অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে- বিচার পেতে আলোর পথে। এর মুখ্য উদ্দেশ্যই ছিল সর্বোচ্চ আদালতকে একটা বার্তা দেওয়া, যে সারা দেশ আজ বিচারের আশায় তাকিয়ে আছে। অদ্ভুতভাবে সেদিন শুনানি পিছিয়ে দেয় কোর্ট, চিফ জাস্টিসের অসুস্থতার কারণে।
৯ই সেপ্টেম্বর সেই বহুকাঙ্ক্ষিত শুনানির দিন। রাজ্যের খান ত্রিশ উকিলের সেনাপতি কপিল সিব্বলকে হাজারো প্রশ্নবাণে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করলেও এবং তার মিথ্যার ঢাল বারবার বিধ্বস্ত হলেও কোর্টের মূল বিষয়বস্তু থাকে আন্দোলনকারী ডাক্তারদের কাজে ফিরিয়ে আনা। রাজ্য থেকে অদ্ভুত একটা সংখ্যা নির্বাচন করা হয়- ২৩, যে সংখ্যক রুগী বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন এই আন্দোলনের জন্য। সংখ্যার সূত্র বলা হয় মিডিয়া নিউজ!! কোন ভিত্তিতে আন্দোলনকারী পড়ুয়া ডাক্তারেরা রোগিমৃত্যুর জন্য দায়ী হয়, সেই প্রশ্ন তোলেনা সুপ্রিম কোর্ট- বরং কয়েক ঘন্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয় কাজে যোগ দেওয়ার জন্য। তা না হলে যেকোনো প্রকার ব্যবস্থার নিদানও দেওয়া হয় রাজ্যকে। কর্মক্ষেত্রে খুন-ধর্ষণ হয়েছে, রাজ্যজুড়ে থ্রেট কালচার আস্তে আস্তে নগ্ন হচ্ছে- অপরাধীরা অভয়ারণ্যে মুক্ত বিরাজ করছে- এসব জেনেও সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় ডাক্তারি পড়ুয়াদের নির্দেশ দিচ্ছেন- কাজে যোগ দাও, পুলিশ তোমায় নিরাপত্তা দেবে- যে পুলিশের কার্যকলাপ দেখে খোদ সুপ্রিম কোর্টের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গেছে! এই হচ্ছে অশীতিপর স্বাধীন ভারতবর্ষের চালচিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীও যেন প্রস্তুতই ছিলেন স্ক্রিপ্ট হাতে। সুপ্রিম কোর্টের শুনানির অব্যবহিত পরে তিনি ঘোষণা করেন, এক মাস তো হলো- পুজো আসছে, এবার আন্দোলন ভুলে সবাই উৎসবে যোগ দিন। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নিজের রাজ্যের একজন বিচারহীনা মেয়ের শবের উপর দাঁড়িয়ে উৎসবের আগমনী গাইলেন- এটাও দেখা বাকি ছিল।
৬২. থ্রেট কালচারে হাল্লা বোল
সকালে সুপ্রিম কোর্ট থেকে একদলা হতাশা গলাধঃকরণ করলেও বিকেলে কলেজ কাউন্সিলের মিটিংয়ে আমাদের জন্য ছিল একরাশ নির্মল বাতাসের স্পর্শ। কলেজ অথরিটির দাক্ষিণ্যে এমবিবিএস থেকে শুরু করে ডিএম স্টুডেন্ট, এমনকি শিক্ষকদের উপর থ্রেট চালিয়ে যাওয়া তৃণমূলী এক গুণ্ডা ডাক্তারের নামে অভিযোগ জানানো হয়েছিল কলেজের অধিকর্তাকে। বহু বারের অনুরোধে কলেজ কাউন্সিল মিটিংয়ে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবি জানানো হয়।
৭০জন বয়োবৃদ্ধ ডাক্তারদের মিটিংয়ে ৬জন নবীন ছাত্ৰ কতৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করে, আপনাদের জ্ঞাতে এমনকি মাঝেমধ্যে আপনাদের উপস্থিতিতেও একজন ছাত্র কীভাবে এই মস্তানি চালাচ্ছে! কর্তৃপক্ষ নিরুত্তর। যাইহোক, বুকে পাথর রেখেও সেই ডানা ছেঁটে ফেলতে বাধ্য হয় এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ- তাঁদের এতদিনের প্রতিপালিত সন্তানের এই পরিণতি মেনে নেওয়া সত্যিই কষ্টের। এমনকি বড়লোকের বখে যাওয়া ছেলের নামে এফআইআরেরও নিদান দেওয়া হয়। তার আর্থিক তছরূপের গল্পও ধীরে ধীরে উঠে আসছে, কাণ্ডারী হুঁশিয়ার…
জানিনা এই আলোচনা ভবিষ্যতে আদৌ ফলপ্রসূ হবে, নাকি কর্তৃপক্ষ তাঁদের ছেলেকে ‘কোভিড ওয়ারিওর’ সাজিয়ে আরো কোনো পদে ফিরিয়ে আনবে এবং দমনপীড়ন অব্যাহত রাখবে, সেটা সময়ই বলবে। তবে আমরা অনেকদূর এসেছি। ৯তারিখ আরজিকরে দাঁড়িয়ে যে সন্দীপ ঘোষের নামে একটা আঙ্গুল তোলা যায়নি, সে আজ চড়-চটি ইত্যাদি খাচ্ছে। অভীক-বিরূপাক্ষ, যারা এই আন্দোলনের শুরুর দিকেও যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিল, আন্ডারগ্র্যাজুয়েটদের থ্রেট দিয়ে, ভুল বুঝিয়ে আন্দোলন থেকে সরিয়ে রেখেছিল, তারা আজ সর্বক্ষেত্র থেকে বহিষ্কৃত। এদের অত্যাচারে বাচ্চা স্টুডেন্টগুলো তটস্থ থাকতো, এমনকি যৌন শোষণের কথাও উঠে আসছে। এর বিরুদ্ধে যে মাথা তুলে প্রতিবাদ করা যায়, সাগর দত্তে একজন যৌন বিকারগ্রস্ত স্যারের কুকীর্তির প্রতিবাদে যে ছাত্রীরা আওয়াজ তুলতে পারে- এটাই কল্পনাতীত ছিল। আজ হয়েছে, আরো হবে। অভয়া এইটুকু অভয় তো দিয়ে গেল, এই কম কী!!
৬৩. আইন অমান্য আন্দোলন
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশানুযায়ী ১০সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে সকল আন্দোলনকারী ডাক্তারদের কাজে যোগ দিতে হত। এমনকি সাধারণ মানুষের আন্দোলনের কণ্ঠরোধ করতে সিব্বল এই দাবিও আদায় করে নেন যে যেকোনো রকম প্রতিবাদসভার জন্য সরকারের অনুমতি লাগবে!কিন্তু চিঁড়েটা ছিল বড়ই শক্ত- ডাক্তারেরা কাজে যোগ তো দেয়ই নি, বরং ডাক দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের। স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা, মুখ্য স্বাস্থ্য সচিবের পদত্যাগের দাবিতে। যাঁদের তত্ত্বাবধানে থ্রেট কালচার গড়ে উঠেছে এবং অভয়ার তদন্তে তথ্য লোপাটে যাঁদের প্রত্যক্ষ মদতের প্রমাণ রয়েছে, তাঁদের পদত্যাগ বুঝি সবচেয়ে কম শাস্তি।
কিন্তু বিধি বাম। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে পড়েছে ব্যারিকেড। আর গান্ধীর দেশের ছাত্র-ছাত্রীরা একই কাজ করেছে- ওখানেই বসে পড়েছে। তবে এবারের মিছিল একেবারে আলাদা চেহারার। প্রথম থেকেই সাধারণ মানুষের প্রচুর উদ্যম দেখার মতো। সরকারের ভয়াবহ রূপটা যত প্রকাশ পাচ্ছে, মানুষ ততই রাস্তায় নামছে। লালবাজারে অপ্রত্যাশিত নৈশযাপনের অপ্রস্তুতি এবার আর নেই। খাদ্যবস্তু, ত্রিপল, বায়ো-টয়লেট ইত্যাদি সবই মজুত। দেখতে দেখতে পাঁচটা পেরোলো ঘড়ির কাঁটা- আমরা নাম লেখালাম আইন অমান্য আন্দোলনে- রাজপথে, ত্রিপলের নীচে, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে, গানে-স্লোগানে…
৬৪. প্রেমপত্র আদান-প্রদান
সন্ধ্যাবেলা টনক নড়ে সরকারের। আলোচনার নিমন্ত্রণ আসে। “Dear Sir” সম্ভাষণে। তৃণভোজী সরকারের আমলারা নেতাদের সংস্পর্শে কীভাবে সামান্য চিঠি লিখতে হয় তা ভুলে গেছেন, দেখে মায়াই হয়! যাইহোক দায়সারা এই আমন্ত্রণে মাত্র দশ জন প্রতিনিধি নিয়ে আলোচনার কোনো অর্থ পাওয়া যায়না। প্রত্যুত্তরে জানানো হয়, ত্রিশজন প্রতিনিধির সঙ্গে লাইভ টেলিকাস্ট চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী আলোচনায় রাজি থাকলে তবেই এই বৈঠক সম্ভব, নচেৎ নয়। ১০ পেরিয়ে ১১-তে স্বাস্থ্য সচিবের জায়গায় মুখ্য সচিবের পত্র আসে। তাতেও থাকে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত এবং ছাত্রদের শর্তে অসম্মতি। স্বভাবতই আলোচনার পথে পা বাড়াননি ডাক্তারেরা।
এর উত্তরে সাংবাদিক সম্মেলনে সামনে আসেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং জানান “খোলা মনে” আলোচনায় তাঁরা বিশ্বাসী, তাতে কোনো শর্ত থাকতে পারে না। এখন প্রশ্ন হলো, খোলা মনে আলোচনায় মিডিয়া থাকতে দোষ কোথায়! আলোচনায় স্বচ্ছতা আনতে লাইভ টেলিকাস্ট হলে সমস্যা কোথায়! এসবের উত্তর নেই, তাই আবারো রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে দায় সেরেছেন মন্ত্রী।
৬৫. অকাল বোধন
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে চেহারা কিন্তু ক্রমেই উৎসবের আকার ধারণ করেছে। যত সময় এগিয়েছে জনসমাগম বেড়েছে গুণোত্তর প্রগতিতে। প্রথম দিনের জনসংখ্যাকে ছাপিয়ে গেছে দ্বিতীয় দিন, দ্বিতীয়কে টেক্কা দিয়েছে তৃতীয়। কোথা থেকে খাবার, জল, ফ্যান-লাইট এসেছে কেউ জানেনা। এসেছে ঢাক, সাথে মিলেছে উলুধ্বনি- স্লোগানের সাথে এসেছে আগমনীর দ্যোতনা। অসুর স্বভাবতই এবং সততই শক্তিশালী এবং তাকে একা হারানো অসম্ভব। তাই তো দেবীর দশপ্রহরণ আলাদা আলাদা দেবতার থেকে সংগৃহীত। এই ধর্ষকরাজের বিরুদ্ধে লড়াইতেও তাই সবাইকে প্রয়োজন।
তবে সেই লড়াইতে কোলের শিশু থেকে পক্ককেশ প্রৌঢ়া সকলে নেমে পড়বেন এবং একই উদ্যমে স্লোগান দেবেন- এটা ভাবা কষ্টকল্পনা। সরকারের এত বছরের অনাচারে কোণঠাসা মানুষ আজ যেন প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পেয়েছে। এই গণ-আন্দোলন কি সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের মতো? নাকি তার থেকেও আরো অনেক বেশি সর্বাত্মক! সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব ছিল, রং ছিল- এই আন্দোলনে কোনো নেতৃত্ব নেই, হাজার চেষ্টাতেও কোনো রাজনৈতিক রং লাগানো যায়নি। মানুষ শুধু বিচারের দাবি নিয়ে রাতের পর রাত রাস্তায় কাটিয়েছে। কিছু মানুষের চেতনা জাগেনি, তাঁরা মনে করেছেন, এসব ‘stray incident’, ‘রেপ-টেপ সব জায়গাতেই হয়’ ইত্যাদি ইত্যাদি। ব্রিটিশ শাসনেও একটা বড় অংশের মানুষ স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে সরে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সরকারের তোষামোদ করেছেন। কিন্তু বাকিটা শাসকদলের ভিত নাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল, এক্ষেত্রেও তাই।
সরকারি পারিষদেরা মাঝেমধ্যে জল মেপেছেন- কাঞ্চন বলেছে, ওরা টাকাপয়সা, বোনাস, অ্যাওয়ার্ড ইত্যাদি ছাড়বে তো! লাভলী বলেছে এরা ডাক্তার না কসাই। হুমায়ুন কবির বলেছে এবার জনরোষ আছড়ে পড়বে। সবাই বলেছে, বলে জল মেপেছে, দেখেছে ধোপে টেকেনি, তাই আর কথা বাড়ায়নি। তবে হুমায়ুন কবিরের কথা অনুযায়ী ১৪আগস্টের আরজিকরের চিত্র স্বাস্থ্য ভবনের সামনে হলে অবাক হবোনা। এই সরকার সব পারে।
৬৬. নবান্ন-আপ্যায়ন
অবশেষে ১২তারিখ আবার চিঠি আসে- বয়ান মোটামুটি একই। জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট জানায় যে তারা তাদের দাবিতে অনড়ই থাকছেন। সেই দাবি মানা হলে তাঁরা সদর্থক আলোচনায় রাজি। এই জানিয়ে তাঁরা নবান্ন সভাগৃহের বাইরে উপস্থিতও হন। কিন্তু প্রশাসন ত্রিশ জন সদস্যকে মেনে নিলেও লাইভ টেলিকাস্টে কোনোভাবেই রাজি হন না। প্রায় দু’ঘন্টার অচলাবস্থার পর বৈঠক ভেস্তে যায়। এর মাঝে মুখ্য সচিব, মহাপরিচালক এসে কথা বলেন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে। রেকর্ডিং হবে, কিন্তু লাইভ টেলিকাস্ট হবেনা- সরকার এই সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। এর কারণ মুখ্য সচিব বলতে পারেননি, অনেক ভেবে মুখ্যমন্ত্রী একটা কারণ আবিষ্কার করেছেন- বিচারাধীন ইস্যুতে লাইভ রেকর্ডিং করা যায়না।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় বিচারাধীন বিষয়ের বিচার প্রক্রিয়াটাই লাইভ টেলিকাস্ট হয়। এই যুক্তি তাই কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আসল কারণ আলাদা। কারণ মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্নের সম্মুখীন হতে ভুলে গেছেন। শেষবার উনি প্রশ্ন নিয়েছিলেন ১৯মে ২০১২ তারিখে তানিয়া ভরদ্বাজের এবং উত্তরে তিনি মাইক ছুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। গতকালের প্রশ্নগুলো উনি আদৌ লাইভে ফেস করতে পারতেন না। কেন তথ্য লোপাট, কাকে বাঁচাতে এত অতিসক্রিয়তা, সন্দীপ ঘোষকে প্রাইজ পোস্টিং কেন- এই প্রশ্নের কী উত্তর দিতেন মুখ্যমন্ত্রী!! তার চেয়ে বরং উনি ক্যামেরার বাইরে ‘খোলা মনে’ এসব নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ছেড়ে পরিকাঠামো-সুরক্ষা ইত্যাদি রচনাধর্মী প্রশ্নের কিছু গল্প রচনা করতেন- যে গল্পের নায়ক রাজীব অটো স্ট্যান্ড তুলে দেয়, কোলাপ্সিবল গেট লাগিয়ে দেয়, ডেন্টাল অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে ফেলে, সিসিটিভি-তে মুড়ে ফেলে গোটা হাসপাতাল!
কিন্তু দুর্ভাগ্য সেই সিসিটিভি অন্ধ হয়ে যায় ধর্ষণের মুহূর্তে, যখন তৃণমূলী হায়নারা বাংলার মেয়ের ইজ্জত দাঁতে কাটে…
ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়, এই প্রবাদটা উনি হয়তো ভুলে গেছেন- কেউ মনে করিয়ে দিল ভালো।
২০১৫-তে মুখ্যমন্ত্রী আমাদের খুনি বলেছিলেন। ২০১৯-এ বলেছিলেন আমরা পদবি দেখে চিকিৎসা করি। এবার বললেন, আমাদের দাবি বিচার নয়, চেয়ার। উনি কবে বুঝবেন জানিনা, ওনার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের থেকে আমাদের ডাক্তারি চেয়ারটা অনেক বেশি দামি। ওনার মতো মিথ্যাচারিতা করে সেই চেয়ার আমরা পাইনি এবং এই চেয়ার ধরে রাখতে এই পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি আমাদের করতে হয়না। অবশ্য যিনি শ্যামাপদ গড়াই, অরুণাচল দত্ত চৌধুরীদের খেদিয়ে সন্দীপ ঘোষ, অভীক দে, বিরূপাক্ষদের ডাক্তারি আদর্শ মানেন, তিনি ডাক্তারীর মর্ম আর কী বুঝবেন!! আপনার শুভবুদ্ধির উদয় হোক ম্যাডাম, রাজ্যের সূর্যাস্ত হওয়ার আগে…